বৃহস্পতিবার , নভেম্বর ১৪ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / ডিমের বাজার কারসাজিকারীদের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত

ডিমের বাজার কারসাজিকারীদের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত

নিউজ ডেস্ক:

কাজী ফার্মস, প্যারগন পোলট্রি, ডাময়ন্ড এগ, পিপলস পোলট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি, নাবা ফার্ম এবং খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের যোগসাজশে ডিমের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন (বিসিসি)। এজন্য সমিতি, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা আইনে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র কালবেলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। মামলার তালিকায় এ খাতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি চারটি সমিতির নাম রয়েছে।

জানা গেছে, গত আগস্টে হঠাৎ ডিমের দাম বাড়তে থাকে। ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা ডজনের ডিমের দাম একপর্যায়ে ১৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। সপ্তাহখানেক অস্বাভাবিক অবস্থায় থাকার পর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ সাড়ে ১০ টাকা এবং খুচরায় ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। সেই দাম বাস্তবায়নে ভোক্তা অধিদপ্তর মাঠে নামে। এতে ডিমের দাম কমলেও সরকার নির্ধারিত দামে এখন পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে প্রতি হালি ডিম ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা।

এ অবস্থায় খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গরম ও বৃষ্টিপাতের কারণে পোলট্রি খামার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ডিম উৎপাদন কম যায়। এজন্য সংকট দেখা দিয়েছে, দাম বেড়েছে। কোনো গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠান কারসাজি করে দাম বাড়ায়নি।

প্রতিযোগিতা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, কাজী ফার্মস লিমিটেড, প্যারাগন পোলট্রি লিমিটেড, ডায়মন্ড এগ লিমিটেড, পিপলস পোলট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি লিমিটেড, নাবা ফার্ম লিমিটেড, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি), পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিআইএ), পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদ, পোলট্রি প্রফেশনালস বাংলাদেশ (পিপিবি) ও ইউনাইটেড এগ সেল পয়েন্টের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। একচেটিয়া বাজার তৈরির অভিযোগে এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা আইন ২০১২-এর ধারা ১৫(১), ১৫(২), (১৫(২) এর (ক) (অ) (খ) ও (গ) ধারায় অভিযোগ এনে মামলা করা হচ্ছে।

বিসিসির চেয়ারপারসন প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী কালবেলাকে বলেন, ‘কারসাজি চক্রের দাম বাড়ানোর ঘটনা মাঠপর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করে চিহ্নিত করা হয়। বিসিসির অনুসন্ধানী দল বাজার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে। তদন্তে এসেছে বেশ কিছু কোম্পানি ও তাদের সংশ্লিষ্ট সমিতি যোগসাজশের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে বাড়তি মুনাফা করেছে। অভিযোগের পক্ষে তথ্য-প্রমাণ থাকায় মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে কমিশন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ডিমের বাজারে অস্থিরতার কারণে সিপি, প্যারাগন, কাজী, ডায়মন্ড এগ ও তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আমানত উল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল বিসিসি। সেই মামলা এখনো চলমান।

এদিকে ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু সুপারিশও দিয়েছে প্রতিযোগিতা কমিশন। এর মধ্যে মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজি বন্ধে পাইকারি বিক্রেতা ও করপোরেট গ্রুপগুলোর ওপর কর্তৃপক্ষের নজরদারির পাশাপাশি নাগরিক নজরদারিও প্রয়োজন বলে মনে করে কমিশন। এজন্য ভোক্তাদের নজরদারি ও পর্যবেক্ষণ কাজে লাগাতে হবে। পাশাপাশি ডিম ব্যবসায়ী সমিতিগুলোর সিন্ডিকেট, মজুতদারি, দেশব্যাপী এসএমএসের মাধ্যমে দাম নির্ধারণ প্রক্রিয়া বন্ধে সংশ্লিষ্ট সমিতিকে জবাবদিহির আওতায় আনা জরুরি বলে মনে করে কমিশন।

গত ১৩ আগস্ট কমিশন সভায় ডিমের বাজার সরেজমিন অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। এর আলোকে গঠিত কমিটি ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন বাজার পরিদর্শন করে তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করে। অনুসন্ধানী দল ২২ আগস্ট কমিশনে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। পরে ২৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় উত্থাপন করা হয় ওই প্রতিবেদন। সভায় অনুসন্ধান দলের সুপারিশ ও মতামতের আলোকে মামলার বিষয়ে একমত পোষণ করে কমিশন।

আরও দেখুন

বিএনপির সাবেক এমপি আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে হামলা-দখলের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক চাঁপাইনবাবগঞ্জ,,,,,,,,,,চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *