নিজস্ব প্রতিবেদক: টেকসই জ্বালানি উন্নয়নে বড় উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। ১১৪তম স্থান থেকে এক বছরে ২০ ধাপ এগিয়ে ৯৪তম স্থান অর্জন করেছে এশীয় অর্থনীতিতে উদীয়মান এ রাষ্ট্র। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিদ্যুত্ উত্পাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও উদ্ভাবনী ব্যবস্থার প্রতিফলন ঘটেছে এ র্যাংকিংয়ে।
জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড এনার্জি কাউন্সিলের ‘ওয়ার্ল্ড এনার্জি ট্রাইলেমা’ প্রতিবেদনে টেকসই জ্বালানিতে বাংলাদেশের এ উন্নয়ন চিত্র ফুটে উঠেছে। জ্বালানি নিরাপত্তা, ন্যায্যতা এবং পরিবেশগত টেকসই ব্যবস্থাপনা—এ তিন সূচকে ১২৮টি দেশের নীতিগত উন্নয়ন, কর্মক্ষমতা এবং প্রকৃত বাস্তবায়ন বিবেচনায় এ র্যাংকিং নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ৮ অক্টোবর এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে ওয়ার্ল্ড এনার্জি কাউন্সিল। ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত সংস্থাটি গত ১০ বছর ধরে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে।
এদিকে বিশ্ব জ্বালানিতে বাংলাদেশ এগিয়ে গেলেও আঞ্চলিক বিবেচনায় বাংলাদেশের এখনো অনেক পথ পাড়ি দেওয়া বাকি। এশীয় দেশগুলোর মধ্যে তলানির দিক থেকে বাংলাদেশ দ্বিতীয়। শুধু নেপালের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ র্যাংকিয়ে ৪৭ দশমিক ৮ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ৯৪। ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের পেছনে ১০২ নম্বরে রয়েছে নেপাল। ৪৮ দশমিক ২ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের ঠিক সামনে ৯৩তম স্থানে রয়েছে পাকিস্তান। প্রতিবেশী দেশ ভারত ৫৬ দশমিক ২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় ৮৬তম অবস্থানে রয়েছে। তালিকায় শীর্ষ তিনে রয়েছে যথাক্রমে সুইজারল্যান্ড, সুইডেন ও ডেনমার্ক।
প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, জ্বালানি নিরাপত্তায় বাংলাদেশ ১০০ নম্বরের মধ্যে ৩৯, জ্বালানি ন্যায্যতায় ৫০ দশমিক ৪ এবং পরিবেশগত টেকসই ব্যবস্থাপনায় ১০০-এর মধ্যে ৫৬ পেয়েছে। ১২৮টি দেশের মধ্যে গত ২০ বছরে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করা পাঁচটি দেশের মধ্যে একটি বাংলাদেশ। সার্বিক বিবেচনায় তিনটি সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ৩৮ শতাংশ বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বাংলাদেশ যত এগোবে র্যাংকিংয়ে তার ইতিবাচক প্রতিফলন তত বেশি হবে। একই সঙ্গে জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী আচরণ ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১৯ সালের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৯৩ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ বিদ্যুেসবা পাচ্ছে। আগামী বছর শতভাগ নাগরিককে বিদ্যুতের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এক্ষেত্রে অনেকখানি অগ্রগতিও হয়েছে।
জ্বালানি আমদানিকারক দেশগুলোর মধ্যে এশীয় দেশগুলো এগিয়ে আছে। বাংলাদেশেরও আমদানিনির্ভরতা বাড়ছে। র্যাংকিং প্রতিবেদনেও তিনটি সূচকের মধ্যে বাংলাদেশ জ্বালানি নিরাপত্তায় সবচেয়ে কম ৩৯ নম্বর পেয়েছে।