নিউজ ডেস্ক:
করোনা প্রতিরোধী টিকা কিনতে বাংলাদেশের জন্য ৯৪ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বাংলাদেশী মুদ্রায় এই অর্থের পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। টিকার জন্য বাংলাদেশ সরকার এডিবির কাছে যে ঋণ-সহায়তা চেয়েছিল, তার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ঋণ দিচ্ছে এই উন্নয়ন সংস্থাটি।
এডিবি ঢাকা অফিসের বহিঃসম্পর্ক বিভাগের প্রধান গোবিন্দ বার বলেন, ‘মঙ্গলবার এডিবির বোর্ড সভায় এই ঋণ অনুমোদিত হয়েছে। এই সহায়তা কোভিড মোকাবেলায় অবদান রাখবে বলে আমরা মনে করি।’
ম্যানিলাভিত্তিক এই ঋণদাতা সংস্থার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উন্নয়নশীল দেশগুলোকে করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে সহযোগিতা করার জন্য গত ডিসেম্বরে এডিবি ৯০০ কোটি ডলারের যে ‘এশিয়া-প্যাসিফিক ভ্যাকসিন এ্যাকসেস ফ্যাসিলিটি’ চালু করেছিল, তার আওতায় এই অর্থ পাবে বাংলাদেশ।
প্রতি মার্কিন ডলার ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা হিসেবে বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশী মুদ্রায় এই ঋণের পরিমাণ ৭ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। গত এপ্রিলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় এডিবি এই ঋণের বিষয়ে প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছিল। করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে ঋণ হিসেবে এটাই বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় সহায়তা।
করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে এডিবির কাছে ৫০০ মিলিয়ন ডলার চেয়ে গত নবেম্বরে চিঠি দিয়েছিল সরকার। তবে আলোচনার ভিত্তিতে তার চেয়ে বেশিই পাচ্ছে বাংলাদেশ। ঋণের এই ৯৪ কোটি ডলারের অর্ধেক, অর্থাৎ ৪৭ কোটি ডলারের জন্য বাংলাদেশকে নিয়মিত হারে (২ শতাংশ) সুদ দিতে হবে। বাকি ৪৭ কোটি ডলারের জন্য সুদের হার ঠিক হয়েছে আলোচনার ভিত্তিতে। তবে সেই হার কত তা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়নি।
সেখানে বলা হয়, এই ঋণের টাকায় বাংলাদেশ আনুমানিক ৪ কোটি ৪৭ লাখ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে পারবে। ২০২৪ সালের মধ্যে দুই কোটির বেশি মানুষকে ওই টিকা দেয়া যাবে।
এই ঋণের অর্থ দিয়ে বাংলাদেশ কোভিড টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স বা জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিসেফের মাধ্যমে অথবা সরাসরি উৎপাদনকারীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় টিকা কিনতে পারবে।
এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া বলেন, ‘ভাইরাস সংক্রমণের চক্রকে ভেঙ্গে প্রাণ বাঁচানোর পাশাপশি অর্থনীতির ওপর মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে আনতে পারে টিকাদান কর্মসূচী।
‘কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশকে এডিবির ধারাবাহিক সহযোগিতার অংশ হিসেবেই এই ঋণ, যাতে ভাইরাস থেকে নাগরিকদের সুরক্ষা দেয়া যায়, ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর জীবিকার ক্ষেত্রে নতুন করে গড়ে তোলা যায়, অর্থনীতিকে আগের মতো প্রবৃদ্ধির ধারায় নিয়ে যাওয়া যায়।’