দেশে কৃষিখাতে হয়েছে অনেক বিপ্লব এবং তারই ধারাবাহিকতা ধরে
টাঙ্গাইলের মধুপুরগড়ের ‘হানিকুইন’খ্যাত আনারস পুরোপুরি পাকলেও, গত রমজান
থেকেই বাজারে বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। তখন থেকেই এলাকার বাজার দখলে রেখেছে
‘জলডুগি’ আনারস।
দেশের বিশেষ ভৌগলিক এলাকা মধুপুর গড়ে প্রায় ২৮ হাজার একর জমিতে আনারস চাষ
হয়েছে। চলতি বছর শুধু মধুপুর উপজেলায় ১৬ হাজার ৩৮০ একর জমিতে আনারস চাষ
হয়েছে।
বশিষ্ট ১২ হাজার ৬১০ একর টাঙ্গাইলের ঘাটাইল, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ও
মুক্তাগাছা এবং জামালপুর সদর উপজেলায় আবাদ হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের
তথ্য মতে মধুপুর গড় এলাকার প্রায় লক্ষাধিক পরিবার আনারস আবাদ, পরিবহন,
বিপণন, প্রক্রিয়া ও বাজারজাতকরণের সঙ্গে জড়িত।
মধুপুরে সাধারণত ‘ক্যালেন্ডার’ জাতের আনারসের চাষ হয়। ২০১৪-১৫ সালের
দিকে এলাকার কিছু চাষি ‘জলডুগি’র আবাদ শুরু করেন। বান্দরবানসহ পার্বত্য
অঞ্চল থেকে এসব চারা নিয়ে আসা হয়। ‘জলডুগি’র বিশেষত্ব হলো- এটি আকারে ছোট,
কিন্তু স্বাদে মিষ্টি, গন্ধেও চমৎকার। মধুপুরের প্রচলিত আনারসের চেয়ে ফলন
আসে দ্রুত। ক্ষেতের সব আনারস পাকেও প্রায় এক সঙ্গেই। ফলে চাষিরা সেগুলো
একসঙ্গে বাজারে তুলতে পারেন।
এ আনারস পাকলে হলুদ ও লালচে রং ধারণ করে। আকর্ষণীয় রংয়ের কারণে ক্রেতাদের
কাছে জলডুগির চাহিদা বেশ, বিক্রি হয় সহজেই। আর মৌসুম শুরুর আগে বাজারে
তুললে আরও বেশি দাম পাওয়া যায়। এ কারণে, এলাকার বেশিরভাগ চাষি এখন জলডুগির
দিকে ঝুঁকছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর টাঙ্গাইলের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মধুপুরের আনারস চাষিদের মধ্যে রাসায়নিক নির্ভরতা অনেক কমে গেছে। আনারস বিদেশে রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় কৃষকদের তালিকা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আনারসের হারানো ঐতিহ্য ফিরে আসবে, আশা করি।