নিউজ ডেস্ক:
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যা দিতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগকে নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বৈঠকে জ্বালানি তেলের দাম নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এরই মধ্যে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ও বিপিসির (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন) চেয়ারম্যান তো প্রেসে বিস্তারিত বলেছেনই। ওটাই জাস্ট মন্ত্রিসভায় অবহিত করা হয়েছে। বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমলে কি দেশেও কমবে কি না অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এগুলো নিয়ে তো ওনারা বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন, এর মধ্যে আবার ব্যাখ্যা দেবেন। আজ বলে দেওয়া হয়েছে, কারণ এটা একটা টেকনিক্যাল বিষয়। স্বল্প পরিসরে আমি ব্যাখ্যা দিলে অনেক প্রশ্ন আসবে, উত্তরও হয়তো দেওয়া যাবে না। এজন্য জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে বলে দেওয়া হয়েছে। তাদের আবার ব্রিফ করতে বলা হয়েছে।
গত শুক্রবার রাত ১২টার পর ডিজেল, পেট্রল, কেরোসিন ও অকটেনের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সরকার। দাম বেড়েছে প্রতি লিটার ডিজেলে ৩৪ টাকা, কেরোসিনে ৩৪ টাকা, অকটেনে ৪৬ টাকা ও পেট্রলে ৪৪ টাকা। দাম বাড়ার পর প্রতি লিটার ডিজেল ১১৪ টাকা, কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা ও পেট্রল ১৩০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। আগে ভোক্তা পর্যায়ে লিটারপ্রতি ডিজেলের খুচরা মূল্য ছিল ৮০ টাকা, কেরোসিন ৮০ টাকা, অকটেন ৮৯ টাকা ও পেট্রল ৮৬ টাকা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকারি ওষুধ চুরি এখন সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হরহামেশাই গণমাধ্যমে সরকারি ওষুধ চুরির খবর পাওয়া যায়। এবার সরকারি ওষুধ চুরি ও বিক্রির শাস্তি আরও কঠিন হতে যাচ্ছে। এবার সরকারি ওষুধ চুরি করে বিক্রি করলে ১০ বছরের কারাদÐ এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দÐের বিধান রেখে ‘ঔষধ আইন ২০২২’-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তিনি বলেন, ‘লাইসেন্স ছাড়া ওষুধ উৎপাদন, বিপণন বা আমদানি করলে ১০ বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। একইভাবে সরকারি ওষুধ চুরি করে বিক্রি করলেও একই শাস্তি ভোগ করতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, খসড়া আইনে ওষুধ প্রশাসন কেমন হবে, ওষুধ বিক্রি ও আমদানির লাইসেন্স দেওয়ার নিয়ম উল্লেখ করা হয়েছে। কেউ লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করলে তার শাস্তি কী হবে সেটাও খসড়া আইনে রয়েছে। এছাড়া মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘দ্য স্টেট অ্যাকুইজেশন অ্যান্ড টেন্যান্সি (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট, ২০২২’ ও ‘জাতীয় শিল্পনীতি, ২০২২’ এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বাণিজ্য সহজ করতে সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, দুই দেশের শুল্ক বিভাগের যোগাযোগ স্থাপন এবং বাণিজ্য সহজ করতে বাংলাদেশ ও সউদী আরবের মধ্যে ‘এগ্রিমেন্ট অন কো-অপারেশন অ্যান্ড মিচুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স ইন কাস্টমস মেটার্স’ শীর্ষক চুক্তি অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সই সঙ্গে ক‚টনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য সার্বিয়ায় ভিসামুক্ত যাওয়া-আসা নিশ্চিতে দেশটির সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তি অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সউদী আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে এ চুক্তি হচ্ছে। মূলত দুই দেশের শুল্ক বিভাগের যোগাযোগ স্থাপন ও বাণিজ্য সহজীকরণের জন্য এটা করা হয়েছে। এর ফলে পাঁচটি সুবিধা হবে। এটা বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে, দুই দেশের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ সুসংহত হবে, পণ্যের অবৈধ বাণিজ্য ও চোরাচালান প্রতিরোধে তথ্য আদান-প্রদান করা যাবে, গোয়েন্দা কার্যক্রমের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহায়তা দেওয়া যাবে এবং শুল্ক বিভাগের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সৌদি আরবের কাছ থেকে আমরা কো-অপারেশন নিতে পারবো।
সার্বিয়ার সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি চুক্তির বিষয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমরা অনেক দেশের সঙ্গে এ রকম চুক্তি করছি। সার্বিয়ার সঙ্গে আমাদের একটা চুক্তি হলো- ক‚টনৈতিক বা অফিসিয়াল পাসপোর্ট যাদের থাকবে, তাদের পারস্পরিক যোগাযোগ ও যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভিসা নিতে হবে না। এ চুক্তি সই হলে সার্বিয়া যেতে বাংলাদেশি ক‚টনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের ভিসা লাগবে না। একই নিয়ম সার্বিয়ার ক‚টনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।