নিজস্ব প্রতিবেদক: জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উম্মে হানিকে ২০ হাজার প্রদান করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে জেলাপ্রশাসকের কার্যালয়ে এই অর্থ তুলে দেন জেলাপ্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ পিএএ। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তমাল হোসেন।
উল্লেখ্য, গুরুদাসপুর উপজেলার উম্মে হানি ১ লক্ষ টাকা ঋণের দায়ে নিজের কিডনি বিক্রি করতে চেয়েছিলেন। এমন সংবাদ প্রকাশিত হলে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, তমাল হোসেন সেই মহিলাকে খুঁজে বের করেন এবং তার সকল ঋণ প্ররিশোধের ব্যবস্থা করেন। জেলা প্রশাসন নাটোরের পক্ষ থেকে সেই মহিলাকে ২০ হাজার প্রদান করা হয়।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উম্মেহানির স্বামী কয়েকদিন আগে মারা গেছে। মারা যাওয়ার আগে স্বামী জাকারিয়া ৩০ বছর নিরুদ্দেশ থাকার পর অসুস্থ ও অক্ষম হয়ে তার কাছে ফিরে আসে। বেকার স্বামীকে নিয়ে সংসার চালানো আরো কঠিন হয়ে পড়ে উম্মেহানির। নিজের অসুখের কারণে দিনমজুরের কাজও করতে পারছিলোনা উম্মে হানি। কুরআন শরীফ শিক্ষা দিয়ে যা আয় হয় তাতে তার সংসার চলে না। অন্যের পুকুরের ধারে একটি ছাপরা ঘরে থাকেন তিনি। ঔষুধ কিনতে পারে না। কোনো উপায় না দেখে কিডনি বিক্রির জন্য বিভিন্ন জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন তিনি। আয় বাড়ানোর জন্য নিজের বাড়িতে বয়লার মুরগীর খামার করেছিলেন। কিন্তু তাতেও লোকসান গুনতে হয়। একমাত্র ছেলে হারিস উদ্দিনকে কর্মসংস্থানের জন্য ২ লাখ টাকা ঋণ করে একটি মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন কিনে দিলে সে ঢাকায় গিয়ে মোটরসাইকেলে ভাড়ায় যাত্রীবহন করে। মেয়ে জুলিয়াকেও ৩০ হাজার টাকা ঋণ করে যৌতুক দিয়ে বিয়ে দিয়ে ছিলেন উম্মে হানি।
এ ঘটনা শোনার পরে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তমাল হোসেন মঙ্গলবার দুপুরে তার সন্ধানে তার এলকায় যায়। উম্মেহানির বাড়িতে এই কর্মকর্তা তার জীবনের ঘটে যাওয়া সকল ঘটনা শুনে তিনি তার কাছ থেকে কোথায় কোথায় থেকে সে ঋণ নিয়েছে তার বিস্তারিত তথ্য নেন। উপস্থিত হিসেবে তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে উম্মেহানিকে কিছু নগদ অর্থ প্রদান করেন। এবং পরে এই কর্মকর্তা অফিসে এসে উম্মেহানির ঋণ নেয়া সকল এনজিওর প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানান তার অফিসে। সবাই আসলে ইউএনও তমাল হোসেন উম্মেহানির জীবনে ঘটে যাওয়া বিস্তারিত ঘটনা খুলে বলে তার ঋণ মওকুফব করার ব্যবস্থা করে দেন এবং তার বর্তমান চলার অবস্থান ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ধার নেয়া ঋণ ও পরিশোধ করার আশ্বাস দেন।