রবিবার , অক্টোবর ৬ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / ‘জীবন্ত লাশ’ হয়ে আটকে ছিলেন ঘরে, উদ্ধার করলো পুলিশ

‘জীবন্ত লাশ’ হয়ে আটকে ছিলেন ঘরে, উদ্ধার করলো পুলিশ

নিউজ ডেস্ক:

নিজের ধানমন্ডির ঘর থেকে গত মঙ্গলবারের (৪ আগস্ট) পর হতে বের হচ্ছিলেন না ব্যারিস্টার কাজী সিরাতুন নবী (৪৫)। বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) পর্যন্ত না ওঠায় সন্দেহ হয় বাড়ির কেয়ারটেকারের। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেন পরিবারের সদস্যদের। তবে কেউই এগিয়ে আসেননি, বন্ধই থেকে যায় দরজাটি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এ খবর পায় পুলিশ। পরিবারের সদস্যদের ডেকে এনে ঘরটির ভেতরে ঢোকেন ধানমন্ডি থানা পুলিশের সদস্যরা। তারা দেখেন, খাটের একপ্রান্তে শুয়ে সিরাতুন নবী। অপরপ্রান্তে ছিল তার লুঙ্গি, তার পাশে রক্ত। সিরাতুন নবীর শ্বাস-প্রশ্বাস তখনো সক্রিয়। ওই অবস্থা থেকে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সযোগে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। এখন শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো না হলেও বেঁচে আছেন সিরাতুন নবী।

ধানমন্ডির ৭/এ নম্বর সড়কের ৯০ নম্বর বাড়িতে থাকছিলেন এ আইনজীবী। কয়েক বছর আগে তাকে ছেড়ে দুই সন্তান নিয়ে চলে যান স্ত্রী। এরপর থেকে কেয়ারটেকার নূরে আলম তার সাথে বাড়িতে থাকতেন। তার দেখভাল রান্না-বান্না সব একাই করতেন। স্ত্রী এই বাড়িতে না এলেও মাঝে মাঝে কেয়ারটেকারকে ফোন দিয়ে স্বামীর খোঁজ নিতেন।

ঘটনার বিষয়ে নূরে আলম বলেন, স্যার (সিরাতুন নবী) প্রতিদিন গভীর রাত পর্যন্ত জেগে ভোরের দিকে ঘুমাতে যেতেন, কখনো বিকেলে কখনো সন্ধ্যায় উঠতেন। দীর্ঘদিন ধরে অ্যাসিডিটিসহ পেটের নানা সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি।

‘মঙ্গলবার রাতে নিজ বাসায় তিনি তার এক বন্ধুর সঙ্গে চটপটি খান। এরপর থেকেই তার ডায়েরিয়া শুরু হয়। এরপর কয়েকটি সিভিট খেয়ে ঘুমাতে যান। ঘুমানোর আগে আমাকে বলেছিলেন যে তার পেটটা নাকি খুব ফুলে আছে। পরদিন বুধবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়ে গেলেও তিনি ওঠেননি। ভেতরেও কোনো সাড়াশব্দ মিলছিল না। আমি কয়েকবার দরজায় নক করি, কিন্তু তিনি দরজা খোলেন না। তখন আমিও ঘুমিয়ে যাই।’

নূরে আলম বলেন, আজ বৃহস্পতিবার সকালেও যখন তিনি বের হচ্ছিলেন না, তখন আমি দরজায় জোরে জোরে আঘাত করি এবং লাথি দেই। তাতেও কোনো সাড়া পাইনি। তখন তার স্ত্রীকে ফোন দেই। স্ত্রী বললেন, ‘মাদকাসক্ত হওয়ার কারণে প্রায়ই সিরাতুন নবী ভেতর থেকে শব্দ করতেন, সেটা শুনেও ইচ্ছা করে সাড়া দিতেন না। এটা কোনো ব্যাপার নয়।’ তখন আমি তৃতীয় তলায় সিরাতুন নবীর আপন ভাই কাজী রাইয়ানের ফ্ল্যাটে গিয়ে নক করি। তার ভাইকে দরজা না খোলার বিষয়টি জানাই। তিনি আসছেন বলে আর আসেননি। অফিসে চলে যান। পরে তার এক বন্ধুকে জানালে ওই বন্ধু পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।

পুলিশ জানায়, উদ্ধারের সময় তার শ্বাস-প্রশ্বাস চললেও সজ্ঞানে ছিলেন না সিরাতুন নবী। তাকে প্রথমে নিকটস্থ ইবনে সিনা হাসপাতালে নেয়া হলেও সেখানকার চিকিৎসকরা সিরাতুন নবীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠান। ঢামেক থেকে বলা হয়, তার আইসিইউ সাপোর্ট লাগবে। পরে তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জীবিত থাকলেও তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়।

এ বিষয়ে পুলিশের ধানমন্ডি জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) আব্দুল্লাহিল কাফি বলেন, ফোন পেয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে ব্যারিস্টার সিরাতুন নবীকে উদ্ধার করা হয়। আমরা আগে তার স্বজনদের খবর দেই। তিনি জীবিত আছেন জানার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। আমরা তার সুস্থতা কামনা করছি।





সূত্র: জাগো নিউজ

আরও দেখুন

নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে বড়াইগ্রামে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত 

  নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষকের কন্ঠস্বর, শিক্ষায় একটি নতুন সামাজিক অঙ্গীকার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নাটোরের বড়াইগ্রামে …