বৃহস্পতিবার , ডিসেম্বর ২৬ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৪ শতাংশ: বিশ্বব্যাংক

জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৪ শতাংশ: বিশ্বব্যাংক

নিউজ ডেস্ক:
করোনা মহামারির মধ্যেও রপ্তানি খাতের ইতিবাচক ধারা এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা ক্রমাগত পুনরুদ্ধার ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৪ শতাংশ হতে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৪ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

বৈশ্বিক আর্থিক খাতের মোড়ল সংস্থাটি সোমবার এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রশংসা করে করোনাভাইরাস মহামারির এই সংকটের সময়েও উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের আশার কথা শুনিয়েছে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য বিমোচনের ধারাবাহিক ইতিবাচক ধারার রেকর্ড রয়েছে। দেশটি গত এক দশকে বিশ্বের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির মধ্যে রয়েছে।

আর এটা সম্ভব হয়েছে, দেশটির বিপুল সংখ্যক কর্মক্ষম তরুণ জনগোষ্ঠী (জনসংখ্যাতাত্ত্বিক লভ্যাংশ), রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের শক্তিশালী অবস্থান এবং স্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে।

করোনা মহামারির মধ্যেও রপ্তানি খাতের ইতিবাচক ধারা এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা ক্রমাগত পুনরুদ্ধার ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৪ শতাংশ হতে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

‘বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংক’ শিরোনামে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৫০তম জন্মদিনে মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের একটি সফল পথচলার রেকর্ড রয়েছে। বিশ্বব্যাংক ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশকে ৩০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তা দিয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্বকে দারিদ্র্য বিমোচন ও উন্নয়নের একটি অসাধারণ গল্প বলে। ১৯৭১ সালে যখন স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্ম হয়, তখন এই দেশটির মাথাপিছু আয় ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে কম। ৫০ বছরে উন্নয়নের অনেক গল্প যুক্ত হয়েছে দেশটির ইতিহাসে।

‘বাংলাদেশ এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ। স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তোরণ ঘটেছে দেশটির; ২০২৬ সাল থেকে সেই পথচলা শুরু করবে বাংলাদেশ। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার ছিল ৪৩ দশমিক ৩ শতাংশ। ২০১৬ সালের হিসাবে তা ১৪ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে আসে। এ ছাড়া মানব উন্নয়ন সূচকেও অনেক উন্নতি করেছে দেশটি।’

২০১৬ সালের পর দারিদ্র্যের হার নিয়ে নতুন কোনো তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি বাংলাদেশের সরকারি সংস্থা পরিসংখ্যান ব্যুরো।

এর আগে গত জুন মাসে প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক প্রসপেক্ট’ রিপোর্টে বিশ্বব্যাংক বলেছিল চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ১ শতাংশ।

ম্যানিলাভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে।

বাংলাদেশ সরকার এই অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যা ব্যুরো (বিবিএস) ২০২০-২১ অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির যে সাময়িক হিসাব প্রকাশ করেছে, তাতে প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সরকার ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরলেও মহামারি পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করায় তা সংশোধন করে ৬ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয়েছিল।

মহামারির শুরুর ধাক্কায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি নেমে গিয়েছিল ৩ দশমিক ৫১ শতাংশে, যা তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম।

বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল ২০১৮-১৯ অর্থবছরে; ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।

চ্যালেঞ্জ

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে নিয়ে কিছু চ্যালেঞ্জের কথা বলা হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও কোভিড-১৯ মহামারি থেকে পুরোপুরি পুনরুদ্ধারের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, যা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সীমাবদ্ধ করে রেখেছে এবং গত এক দশকে অর্জিত কিছু অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করেছে।

করোনা মহামারি গত ২০২০ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমিয়েছে। দারিদ্র্য হ্রাসের গতি মন্থর করেছে। রপ্তানি হোঁচট খেয়েছে। বৈষম্য বেড়েছে। ২০২০ সালে দারিদ্র্যের হার ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ১ শতাংশ হয়েছে।

এরপরও প্রবাসীদের পাঠানো রেকর্ড রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক ধারা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করেছে।

সত্যিকার অর্থে উচ্চ-মধ্যম আয়ের মর্যাদা অর্জনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা সফল করার জন্য বাংলাদেশকে করোনা মহামারির চ্যালেঞ্জ দ্রুত মোকাবিলা করে অর্থনীতিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব দেশের সব মানুষকে টিকা দিতে হবে। তাহলেই কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত ও মৃত্যু কমবে এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু করতে সক্ষম হবে দেশটি।

এ ছাড়া প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায়িক পরিবেশ, দক্ষ শ্রমশক্তি, বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ এবং বেসরকারি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করে-এমন নীতি নিয়ে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

আরও দেখুন

নাটোরে আন্তঃ ক্যাডার বৈষম্য নিদর্শন এর দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক,,,,,,,,,,,,বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ২৫ টি ক্যাডারের (বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার বাদে) সমন্বয়ে গঠিত আন্তঃক্যাডার বৈষম্য …