বৃহস্পতিবার , এপ্রিল ২৫ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / জাহাজ নির্মাণ শিল্পের ঋণ পরিশোধে বিশেষ ছাড়

জাহাজ নির্মাণ শিল্পের ঋণ পরিশোধে বিশেষ ছাড়

নিউজ ডেস্ক:
আগে থেকেই ধুঁকতে থাকা জাহাজ নির্মাণ শিল্পকে করোনা মহামারির প্রতিকূলতার হাত থেকে বাঁচাতে এ খাতের প্রতিষ্ঠানের ঋণ পরিশোধে বিশেষ ছাড় দিয়েছে সরকার। ফলে জাহাজ নির্মাণ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো ২০২১ সালের বকেয়া ঋণের ৫ শতাংশ অর্থ পরিশোধ করে আরও দুই বছর মরেটরিয়াম সুবিধা (বিলম্বে পরিশোধ) নিতে পারবে।

এর আগে ২০১৮ সালের এপ্রিলে জারি করা বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য এক নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, নিয়মিতভাবে জাহাজ নির্মাণ ও রপ্তানিতে নিয়োজিত শিপইয়ার্ডগুলোকে তারল্য সংকট মোকাবিলায় আবেদন প্রাপ্তিসাপেক্ষে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রদত্ত সব ধরনের মূলধনী ঋণের সুদাসল ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বরভিত্তিক হিসাবায়ন করে কোনো ডাউনপেমেন্ট ছাড়াই তিন বছরের মরেটরিয়াম সময় মঞ্জুর করা হবে। পরবর্তী ১০ বছরে ত্রৈমাসিক কিস্তিতে ওই ঋণ পরিশোধের লক্ষ্যে পৃথক বস্নক অ্যাকাউন্ট সৃষ্টি করা যাবে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান আগে যেসব ঋণ দিয়েছে, সেগুলোর সুদবাহী পুনঃতফশিলকৃত দায়গুলোও ওই সুবিধার আওতায় পরিশোধযোগ্য হিসেবে গণ্য করা যাবে।

একই সুবিধা ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) ঋণগ্রহীতাদের জন্যও প্রযোজ্য করে সার্কুলার দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ।

বৃহস্পতিবার কোভিড-১৯ এর কারণে নতুন করে জাহাজ নির্মাণ শিল্পের ২০২১ সালের প্রদেয় অর্থের ৫ শতাংশ পরিশোধে ওই সুবিধা বহাল রাখার কথা জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে নির্ধারিত ১০ বছরের সময়সীমা আর পরিবর্তন করা হবে না বলেও জানানো হয়। ফলে কোনো জাহাজ নির্মাণ শিল্পের প্রতিষ্ঠান এই ১০ বছর সময়ের মধ্যে ৫ বছর মরেটরিয়াম সুবিধা নিয়ে বকেয়া ঋণ পরিশোধ করতে পারবে।

যদিও করোনার কারণে ঋণ পরিশোধে গত বছর পর্যন্ত দেওয়া ছাড় চলতি বছর থেকে তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে ২০২১ সালের বকেয়া ঋণের ১৫ শতাংশ পরিশোধের জন্য চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়।

জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে দেশে জাহাজ নির্মাণ শিল্প বিকাশ লাভ করে। এ সময় ওয়েস্টার্ন মেরিন, আনন্দ শিপইয়ার্ডসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অত্যাধুনিক জাহাজ নির্মাণ করে বিদেশে রপ্তানি করে। তবে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে আর্থিক সংকটের কারণে ২০১১-১২ সাল থেকে দেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে যায়। সে সময় কয়েকটি দেশ থেকে প্রাপ্ত জাহাজ নির্মাণ আদেশ বাতিল হয়ে যায়। এতে দেশীয় জাহাজ নির্মাণ শিল্প আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। সে সময় এ শিল্পের শীর্ষস্থানীয় অপর এক প্রতিষ্ঠান আনন্দ শিপইয়ার্ড অ্যান্ড সিস্নপওয়েজ লিমিটেড খেলাপি হয়ে পড়ে। এ প্রতিষ্ঠানটিকে ঋণ দিয়ে ইসলামী ব্যাংককে বিপুল অঙ্কের অর্থ সঞ্চিতি হিসেবে রাখতে হয়েছে। এভাবে এ খাতে প্রতিষ্ঠানগুলো বিপাকে পড়ায় ব্যাংকে বকেয়া ঋণ জমা হতে থাকে।

এই প্রেক্ষাপটে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ আদায় ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পের বিকাশে ২০১৮ সালে এই সুবিধা দিতে ওই বছরের ৩ জানুয়ারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), সোনালী ব্যাংক, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অর্থ মন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নির্দেশনা দিলে সার্কুলার জারি করে ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

আরও দেখুন

অর্থের বিনিময়ে সেনাবাহিনীতে ভুয়া নিয়োগের অভিযোগে একজন গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থের বিনিময়ে সেনাবাহিনীতে ভুয়া নিয়োগের অভিযোগে  আনোয়ার হোসেন (২৯) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে …