নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর:
শেরপুরে আশিকুর রহমান পাপ্পু নামে এক কিশোরকে নির্যাতন মামলায় জামিনে ছাড়া পেয়ে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মামলা তুলে নিতে নির্যাতিতা পরিবারকে হুমকি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে। ফলে নিরাপত্তা হিনতায় ভূগছেন নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা এ ব্যাপারে শেরপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, মাদ্রাসা পড়ুয়া পাপ্পুর সঙ্গে ওই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য শুভর প্রেমিকার ফেসবুকে কথা হতো। এঘটনা জানতে পেরে গত সোমবার শুভ, সিয়ামের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা পাপ্পুকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে কিশোর গ্যাংয়ের পাঁচ সদস্য আশিকুর রহমান পাপ্পুকে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে নিজেদের ফেসবুক প্রফাইল থেকে আপলোড করা ওই নির্যাতনের ভিডিওটি বুধবার ভাইরাল হয়।
সাত মিনিটের ভিডিওতে দেখা যায় পাপ্পুকে শেরপুর শহরের পৌরসভার পুরাতন চারুভবনের ২য় তলায় নিয়ে পাঁচ কিশোর তাকে অমানুষিক ভাবে নির্যাতন করে। পাপ্পুর স্বজনদের অভিযোগ প্রায় ৪৭ মিনিট পাপ্পুকে নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনের এক পর্যায় পাপ্পু অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার মাথায় পানি ঢেলে জ্ঞান ফিরিয়ে আনা হয়। পরে আবার নির্যাতন হয় তাকে।
আশিকুর রহমান পাপ্পু শেরপুর সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের ভোলবাড়ি গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। এ ঘটনায় পাপ্পুর বড় ভাই নাছিমূল হক বাদী হয়ে শেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মঙ্গলবার পুলিশ চার কিশোরকে গ্রেফতার করে বুধবার বিকেলে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হলে শুনানি শেষে নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের বিচারক আকতারুজ্জামান ওই চার কিশোরকে জামিনে মুক্তি দেন। ওই চার কিশোর হলো শেরপুর শহরের বটতলা মহল্লার সিয়াম, গোপাল বাড়ি মহল্লার শুভ, আরমান ও কালীবাজার মহল্লার সাজেদুল ইসলাম নাসিম।
এদিকে পাপ্পুর বাবা মোহাম্মদ আলীর অভিযোগ বৃহস্পতিবার সকালে চিকিৎসাধীন পাপ্পুকে শেরপুর জেলা সদর হাসাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিল। এসময় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা তাদের পথরোধ করে মামলা তুলে নিতে হুমকি প্রদর্শন করে। মামলা তুলে না নিলে তাদের হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দেয়া হয়। পরে এ নিয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। বর্তমানে ওই নির্যাতিতার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মিজানুর রহমান বলেন হুমকি দেওয়ার বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে।