নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পুনঃনির্বাচিত মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসলেই ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশের মানুষকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করে, অস্থিরতা তৈরি করে, আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে, জ্বালাও পোড়াও করে, তারা আবার খুবই সক্রিয়। শুধু রাজপথে নয়, তারা ঘরেও সক্রিয়, বিদেশী দূতাবাসেও সক্রিয়। এই মুহুর্তে বিএনপির চারজন নেতা সিঙ্গাপুরে, চারজন একসঙ্গে অসুস্থ্য হয়ে সিঙ্গাপুরে গেছেন, এটি মেনে নেওয়ার মতো না, এতো বোকা বাংলাদেশের মানুষ নয়।
তারা সেখানে কোন দেনদরবার বা কোন দানখয়রাত যেটা পাবে, সেগুলো ঠিকঠাক করতে গেছেন, কত দিলে কত পাওয়া যাবে ইত্যাদি নানা বিষয়ে আলাপ আলোচনা করতে গেছে। একই সঙ্গে দেশে দলীয় নেতাকর্মীদের তারা বলে গেছেন, ফিরে এসে সরকার পতনের লাগাতার আন্দোলন করবেন। লাগাতার আন্দোলন প্রায় ৮/৯ বছর আগে দিয়েছেন খালেদা জিয়া। যা এখনোই আলোর মুখ দেখেনি। এমন লাগাতার আন্দোলন দিয়ে আর যায় হোক, আওয়ামী লীগকে উপড়ানো সম্ভব নয়।
সোমবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে নগরীর সাগরপাড়া মোড়ে জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের সকল শহীদের স্মরণে জাতীয় শ্রমিক লীগ, রাজশাহী মহানগর আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে, আওয়ামী লীগকে উপড়ানো তো দূরে কথা, একটি ডালও ভাঙ্গা সম্ভব না। ১৯৭৫ পরবর্তী চরম দুঃসময়েও আওয়ামী লীগ টিকে থেকেছে। দীর্ঘদিন লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় এনেছে। এই আওয়ামী লীগকে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা কখনোই সম্ভব নয়।
রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমরা এই শোকের মাসে শোককে শক্তিতে পরিণত করে জনগণের রায়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় নিয়ে আসবো।শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় নিয়ে আসতে প্রয়োজনে মানুষের বাড়ি বাড়ি যেতে হবে, ভোট চাইতে হবে। উন্নয়নের অনেক কাজ এখনো বাকি। যেগুলো শেষ করতে পারলে ইউরোপ-আমেরিকার মতো উন্নত দেশে আমরা পরিণত হবো। সেই সুযোগ আমাদের রয়েছে, তার জন্য আমাদের দরকার শেখ হাসিনাকে, আর আওয়ামী লীগের মতো দেশপ্রেমিক দলকে।
সভায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর কুতুব আলম মান্নান বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রতিশোধ সেদিন নেওয়া যাবে, যেদিন আমরা আবারো শেখ হাসিনাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনতে পারবো। বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনা সরকার, বারবার দরকার।
বিশেষ অতিথি রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী বলেন, জাতির পিতাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার মাধ্যমে দেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় নিয়ে যেতে চেয়েছিল একাত্তরের পরাজিত শক্তিরা। যার নেপথ্যের নায়ক ছিলেন জিয়াউর রহমান। জিয়া রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় দখল করার পর বিএনপি নামক দল গঠন করে। বিএনপি আওয়ামী লীগের মতো লড়াই সংগ্রাম করে গড়ে উঠা কোন দল নয়। বিএনপি জনগণের রায়কে ভয় করে বলেই তারা নির্বাচনে আসতে চায় না।
স্মরণ সভায় প্রধান বক্তা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে, তারা দেশ ও জাতির শক্র। তারা কখনো দেশের ভালো চায়নি। বঙ্গবন্ধু ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামীদের দেশে ফিরি এনে শাস্তি কার্যকরের জোর দাবি জানাচ্ছি। তাদের সাজা কার্যকর হলে তাহলে আমাদের অন্তর কিছুটা হলেও শান্তি পাবে।
জাতীয় শ্রমিক লীগ, রাজশাহী মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ ওয়ালী খানের সভাপতিত্বে সভায় রাজশাহী আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন ও আহসানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আসলাম সরকার, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক ফ.ম.আ ডা. জাহিদ, শ্রম সম্পাদক আব্দুস সোহেল, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু, বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান কালু, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ সহ শ্রমিক লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সভা সঞ্চালনা করেন জাতীয় শ্রমিক লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ রাশেদুজ্জামান রাশেদ।