নিউজ ডেস্ক:
জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার সেল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। একইসঙ্গে বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে যে অপপ্রচার হচ্ছে এবং বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের যে বিচার হচ্ছে, সে সম্পর্কে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যথাযথ তথ্য তুলে ধরতে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগের কথাও ভাবা হচ্ছে।
সোমবার একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে মন্ত্রী পর্যায়ে সশরীরে বৈঠকের জন্যও যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সরকারের এলিট ফোর্স র্যাবের সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর মানবাধিকার বিষয়ক কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ায় সরকার। সর্বশেষ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একজন সদস্যের র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে ইইউ ভাইস প্রেসিডেন্টকে চিঠি দেওয়া এবং জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে র্যাবকে বিরত রাখতে ১২টি মানবাধিকার সংগঠনের চিঠি দেওয়ার তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দফায় দফায় বৈঠক হয় ঊর্ধ্বতনদের মধ্যে। বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেসব বৈঠকের সিদ্ধান্ত সম্পর্কেই অবহিত করেন পররাষ্ট্র সচিব।
তিনি জানান, আপাতত যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা হচ্ছে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি মানবাধিকার সেল গঠন করা হবে। একজন পরিচালক এই সেলের দায়িত্বে থাকবেন। মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত অভিযোগ এবং সুরক্ষা বিষয়ে কার্যক্রম চালাবে এই সেল। সেলটির কার্যক্রম সরাসারি তত্ত্বাবধান করবে জাতিসংঘ। এ সেলের মধ্য দিয়ে মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠগুলোর সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করে সঠিক তথ্য তুলে ধরা হবে।
পররাষ্ট্র সচিব জানান, বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত কর্মকাণ্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যেসব তথ্য আসছে, তা সঠিক নয়। বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচার হচ্ছে। বিচারে সাজার রায় আসছে। এ কারণে মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য তুলে ধরতে ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ মিশনগুলো নিয়মিত তৎপরতা চালাবে। এর পাশাপাশি অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য তুলে ধরার জন্য প্রয়োজন হলে লবিস্ট ফার্মও নিয়োগ করা হবে।
তিনি আরও জানান, এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিনকেনের সঙ্গে। সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান যথাযথভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে এবং নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক কংগ্রেসম্যানকে চিঠিও লিখেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ মিশন থেকেও বাংলাদেশের পয়েন্টগুলো সে দেশের সংশ্নিষ্ট দপ্তরের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।