নিউজ ডেস্ক:
ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এ পর্যন্ত তিনটি রেজ্যুলেশন (প্রস্তাব) উত্থাপিত হয়েছে। তিনটির দুটিতে ভোটদানে বিরত ছিল বাংলাদেশ। একটিতে ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দেয় বাংলাদেশ।
এ ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কোন বিষয়টিকে গুরত্ব দিচ্ছে— জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের এক জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি অনুযায়ী আমরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমরা কারও বিপক্ষে যাওয়ার মানসিকতায় নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, সবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বজায় থাকুক। তবে মানবিক কারণ হলে সেটা ভিন্ন বিষয়। যেমন জাতিসংঘে তিনটি ভোটের দুটিতে আমরা বিরত ছিলাম। কেননা সেই দুটি ভোট হতো একটি দেশের বিরুদ্ধে। মানবিক কারণে আমরা কিন্তু ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দিয়েছি। মূল কথা, একক কোনো দেশের বিরুদ্ধে ভোট হলে আমরা বিরত থাকি।’
ইউক্রেনে হামলা বন্ধে গত ২ মার্চ একটি প্রস্তাব পাস হয় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে। ১৪১টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। তখন ভোটদানে বিরত ছিল বাংলাদেশ। এরপর গত ২৪ মার্চ ইউক্রেনে সৃষ্ট মানবিক সংকট নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রশ্নে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আনা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় বাংলাদেশ। প্রস্তাবটি ১৪০ ভোটে পাস হয়। সবশেষ, চলতি মাসের ৭ এপ্রিল ইউক্রেন ইস্যুতে মানবাধিকার পরিষদে রাশিয়ার সদস্যপদ স্থগিতে গৃহীত প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত ছিল বাংলাদেশ। ৯৩টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়।
একক দেশের বিপক্ষে ভোটদানে বিরত থাকার কৌশল অবলম্বনের কথা বলা হলেও জাতিসংঘে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিপক্ষে ভোট দেয় বাংলাদেশ। এর ব্যাখ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা একমাত্র রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘে কোনো একক দেশের বিপক্ষে আনা প্রস্তাবে ভোট দিয়েছি, সেটি মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। তাছাড়া রোহিঙ্গা সমস্যার সবচেয়ে বড় বোঝা বাংলাদেশকে বহন করতে হচ্ছে।’
ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর জাতিসংঘে দ্বিতীয় ভোটে ইউক্রেনের পক্ষে অবস্থানের ব্যাখ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘কোনো ধরনের চাপে নয়, মানবিক কারণে জাতিসংঘে ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ।’