চাষাবাদ বন্ধ ১৫ বছর
নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের গুরুদাসপুরে বামনকোলা ও গারিষাপাড়া মাঠের প্রায় দুই
হাজার বিঘা জমিতে দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ জলাবদ্ধতার কারনে দুই ফসল
উৎপাদন করতে পারছেনা কৃষকরা। বছরে একটি ফসল ইরি, আমন চাষ করলেও
থাকতে হয় অনিশ্চয়তায়। বর্ষা ও টানা কয়েকদিন বৃষ্টি হলেই ডুবে যায়
ধান। ফসলের মাঠ থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি নিয়ে নিজেদের ফসল
রক্ষার জন্য সোমবার সকালে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে
এলাকাবাসী।
জানা যায়, উপজেলার বামনকোলা ও গারিষাপাড়া ফসলের মাঠটিতে প্রায়
দুই হাজার বিঘা জমি রয়েছে। গত ২৫ বছর পূর্বেও এই মাঠে
প্রতিটি জমিতে কৃষকরা তিন ফসল উৎপাদন করতো। অপরিকল্পিত পুকুর
খনন ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রেখেই অপরিকল্পিতভাবে আঞ্চলিক
সড়ক নির্মাণ করার কারনে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে পাঁচ শতাধিক
কৃষককে। মাঠের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে একটি পাকা সড়ক। সেখানে
২০ বছর পুর্বে অপরিকল্পিতভাবে পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি কালভার্ট
(ব্রিজ) নির্মাণ করা হয়েছিলো। গত ১৫ বছর পূর্বেই কালভার্টটি
ভেঙ্গে ফেলে ব্যক্তি মালিকানাধীন বাড়ি নির্মাণ করা হয়। বন্ধ হয়ে যায়
কালভার্টটি। সেই থেকেই গারিষাপাড়া ও বামনকোলা মাঠের পানি
নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। এক ফসল চাষ করেও অনিশ্চয়তায় থাকতে হয়
চাষিদের।
বামনকোলা গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন জানান, ‘বামনকোলা
মাঠে তার পাঁচ বিঘা জমি রয়েছে। তার বাবা সেই জমিতে এক সময়
তিন ফসল উৎপাদন করতো। এখন তিনি এক ফসল চাষ করতেই অনিশ্চয়তায়
থাকেন। জমি চাষাবাদ করেই তার জীবন জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
এ বছর বর্ষা ও টানা বৃষ্টিতে ধানের জমি প্রায় ডুবে যাওয়ার অবস্থা
হয়েছে। আর তিনদিন বৃষ্টি হলেই ধান ডুবে যাবে। ব্যাপক ক্ষতির
সম্মুখিন হতে হবে ধান ডুবে গেলে। অতি দ্রæত প্রশাসনের পক্ষ থেকে
পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করারও দাবি জানান।’
গারিষাপাড়া গ্রামের সমাজসেবক মিজানুর রহমান জানান,‘দুই
গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক কৃষকের জমি রয়েছে এই মাঠে।
প্রতিটি কৃষক এই মাঠ থেকে ফসল উৎপাদন করে নিজেদের জীবন
জীবিকা নির্বাহ করে। দীর্ঘ ১৫ বছর জলাবদ্ধতার কারনে দ্ধুসঢ়;ইটি ফসল
উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। কৃষকদের কথা চিন্তা করে অতি দ্রæত পানি
নিষ্কাশন ব্যবস্থা করা দরকার।’
ইতিপূর্বেও প্রশাসনকে জানিয়ে কোন কাজ হয়নি বলে দাবি করেন
বামনকোলা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য রফিক হোসেন, আবুল
হোসেন, কৃষক আসাদ মোল্লা, লেদু প্রামানিকসহ আরো অনেকে।
মানববন্ধনে শত শত গ্রামবাসী উপস্থিত থেকে জলাবদ্ধতা দ্রæত নিরশনের
দাবি তুলে বক্তব্য রাখেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন,‘ইতিপূর্বেও ওই মাঠের
জলাবদ্ধতা নিরশনের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি অধিদপ্তর উদ্যোগ
গ্রহণ করেছিলো। গ্রামের অভ্যন্তরীন ঝামেলার কারনে বেশিদূর অগ্রসর
হওয়া যায়নি। গ্রামবাসীর সহযোগিতায় সরেজমীনে গিয়ে অতি
দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।’
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার
বলেন,‘কৃষকদের সহযোগিতায় অতি দ্রæত জলবদ্ধতা নিরশন করা
হবে।