নাইম তালুকদার, সুনামগঞ্জঃ
নিজেই কাস্তে (কাঁচি) হাতে নিয়ে মধ্যরাতে হাওরে থাকা কৃষকের পাকা ধান কাটলেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল।
জানা গেছে, বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমন রোধের পাশাপাশি আগাম বন্যা ধেয়ে আসার পুর্বেই দ্রুত ধান কেটে গোলায় তুলতে কৃষক ও ধাওয়ালী (ধান কাটা শ্রমিক)দের উৎসাহ দিতে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ রাতে নিজ হাতে কাস্তে নিয়ে ধান কাটতে হাওরে নামলেন। বৃহম্পতিবার রাতে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সদর উপজেলার জলভাঙা হাওরের ধান কাটা অবস্থায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল, ইউএনও ইয়াসমিন নাহার রুমা, সুনামগঞ্জ পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও জেলা যুবলীগের সিনিয়র সদস্য নুরুল ইসলাম বজলুসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের একাধিক দায়িত্বশীলদের ধান কাটতে দেখা গেছে।
জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল সূত্র জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী চলতি এপ্রিল মাসের ২৬ হতে ৩০ তারিখের মধ্যে অতিবৃষ্টি ও ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়ি ঢলের কারণে আগাম বন্যার আশংকা রয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে এবার সুনামগঞ্জ জেলার ১১টি উপজেলার ছোট বড় ১৫৪ হাওরে ২ লাখ ২০ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। এবার বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ মেট্রিক টন । এদিকে আগাম বন্যায় লাখ লাখ কৃষকের বোরো ফসলহানীর আশংকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত কৃষকের পাকা ধান কেটে গোলায় তোলার নির্দেশনা দেবার পাশাপাশী জেলার কৃষকদের জন্য ৪০টি কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার (ধান কাটা, মাড়াই) যন্ত্র উপহার দিয়েছেন।
অন্যদিকে বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বে খাদ্য ঘাটতির সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এসব কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার দিনের বেলায় একটানা হাওরে আট ঘন্টা ধান কাটার পর বিকেলের দিকে যন্ত্রটি বিরতির পর রাতে ফের ধান কাটতে সক্ষম হবে। এ কারণে জেলা প্রশাসক জেলার সকল কৃষকের শতভাগ বোরো ধান কেটে গোলায় তোলার উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশি কৃষক, ধাওয়ালী (ধান কাটা শ্রমিক)দের রাতে ধান কাটতে উৎসাহ দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে নিজেই কাস্তে হাতে কৃষককের ধান কাটতে হাওরে নামলেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ জেলার কৃষকদের ৪০টি কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার (ধান কাটা, মাড়াই)যন্ত্র দিয়েছেন আগাম বন্যা ও অতিবৃষ্টির কবল হতে সারা বছরের একটি মাত্র বোরো ফসল দ্রুত কেটে গোলায় তুলতে। তিনি আরো বলেন, এক্ষেত্রে ভাবলাম কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার (যন্ত্র) দিনে আট ঘন্টা ধান কাটার পর বিকেলের দিকে যন্ত্রটি বিরতি দেয়া হচ্ছে, তাহলে সেটি রাতেও ব্যবহার করে বন্যা আসার আগেই যদি আমরা শতভাগ বোরো ধান কেটে গোলায় তুলতে পারি তাহলে জেলার লাখ লাখ কৃষক ও কৃষক পরিবারের মানুষজন স্বস্থিতে থাকবেন এবং তাদেরকে খাদ্য ঘাটতির মুখে পড়তে হবেনা।
আরও দেখুন
লিটনের ছাদ বাগানে শোভা পাচ্ছে ৩৫ ধরনের ফলগাছ
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাড়ির ছাদে সৌখিন ফলের বাগান করে সফলতা পেয়েছেন সিংড়ার তারেকুজ্জামান লিটন। তার …