শুক্রবার , নভেম্বর ১৫ ২০২৪
নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / নলডাঙ্গা / জমে উঠেছে নলডাঙ্গা উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের নির্বাচনী প্রচারণা

জমে উঠেছে নলডাঙ্গা উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের নির্বাচনী প্রচারণা

নিজস্ব প্রতিবেদক, নলডাঙ্গা:
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগামী ৫ই জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন ঘিরে শেষ সময়ে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। পোস্টার, ব্যানারে ছেয়ে গেছে ইউনিয়নের অলিগলি।

প্রার্থীরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে, দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি। মিছিল-মিটিং, পথসভা, উঠান বৈঠকে গণসংযোগ চলছে। ইউনিয়নের হাট-বাজার, চা স্টলে চলছে নির্বাচনি আলাপ-আলোচনা। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্যরাও রাত-দিন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোট প্রার্থনা করছেন। সবার আশা ভোট যুদ্ধে তারই জিত হবে। তবে সাধারণ ভোটাররা ভোট দেওয়ার ব্যাপারে কোনো প্রার্থীকে নিরাশ করছেন না। নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে গিয়ে তাদের আদর্শের বয়ানসহ ইউনিয়নে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছেন।

সরজমিনে দেখা গেছে, চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থীরা অটোরিকশা, ইজিবাইক, রিকশায় মাইক বেঁধে নির্বাচনি প্রচারণা চালাচ্ছেন। দলীয় প্রার্থীদের পাশাপাশি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নির্বাচনি প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছে।

নারী প্রার্থীদের সঙ্গে মাঠে নেমেছেন স্বামী ও সন্তানরাও। তেমনি পুরুষ প্রার্থীদের পক্ষে স্ত্রী, সন্তানরাও বসে নেই। শাহজাহান আলী নামে এক ভোটার জানান, ভোট আসলে প্রার্থীদের আনাগোনার কমতি থাকে না। ভোট শেষ হলেই তাদের দেখা পাওয়া যায় না। প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হয়ে সেই মোতাবেক কাজ করে না বরং নির্বাচনের পর সব ভুলে যায় প্রার্থীরা। 

ভোটার বৃদ্ধ নূরন বেগম বলেন, ‘অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রার্থীরা নির্বাচিত হন কিন্তু ইউনিয়নের দৃশ্যমান উন্নয়ন হয় না। এবার আমরা সঠিক মানুষকেই ভোট দেবো।’

উপজেলার ১নং ব্রহ্মপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হাফিজুর রহমান বাবু বলেন,আমি গত পাঁচ বছর এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলাম। আমি আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছি বলেই প্রধানমন্ত্রী আমাকে আবার নৌকার মনোনয়ন দিয়েছেন।সব শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে আমার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে এবং পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করে এই ইউনিয়নকে একটি আদর্শ ইউনিয়নে পরিণত করাই আমার মূল লক্ষ্য। একই ইউনিয়নের  চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম আশরাফুজ্জামান মিঠু(আনারস প্রতীক) বলেন, ইউনিয়নের অন্যান্য প্রার্থীরা তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা অপপ্রচারমূলক কথা ছড়াচ্ছেন। তবে ভোটের মাঠে তিনি যথেষ্ট সারা পাচ্ছেন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হবেন বলে আশা করছেন। এছাড়াও একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী রঈছ উদ্দিন রুবেল( ঘোড়া প্রতীক) বলেন,জেলা পর্যায় থেকে বিভিন্ন নেতাকর্মী নিয়ে এসে আমার নামে বিভিন্ন অশালীন ও অশোভন বক্তব্য দিচ্ছেন। তবে এসব করে কোন লাভ হবে না। সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আমাকে নিয়ে অনেক উৎসাহ দেখতে পাচ্ছি।তাই জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ নিশ্চিত। 

৩নং খাজুরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ জহরুল ইসলাম ভূট্টো ( আনারস প্রতীক), বলেন, ইউনিয়নে আমার বাবা দীর্ঘদিন যাবত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং আমিও দায়িত্ব পালন করেছি। ইউনিয়নের মানুষ আবারো আমাকে নির্বাচিত করতে চায়। তাদের চাওয়া আমি নির্বাচনে এসেছি। তবে ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তার লোকজন দিয়ে সাধারণ ভোটারকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন, প্রচারে বাধা দান করছেন ।এই ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন বলেন, ভূট্ট তার সাংগঠনিক দুর্বলতা ঢাকতে এরকম মিথ্যা ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন। পক্ষান্তরে সোহরাব হোসেন জানান, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তিনি অবশ্যই জয়ী হবেন।

৪নং পিপরুল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কলিম উদ্দিন ও ৫ নং বিপ্রবেলঘরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে জালাল উদ্দিন (নৌকা প্রতীক) বলেন, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করার জন্য  বঙ্গবন্ধু কন্যা ও জননেত্রী শেখ হাসিনা আবারো নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ দিয়েছেন। এবার নির্বাচিত হলে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তির মাধ্যমে নিজ ইউনিয়নকে আধুনিক মডেল ইউনিয়ন হিসেবে উপহার দিবেন।

 একইসঙ্গে ২ নং মান্নার ইউনিয়নে মাহমুদুর রহমান মামুন (আনারস প্রতীক) ও ৫ নং বিপ্রবেলঘরিয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান আলী (চশমা প্রতীক) বলেন,  দীর্ঘ দিন এলাকার এতিম, বিধবা, বয়স্কসহ সব কল শ্রেণিপেশার মানুষদের বিপদে-আপদে সাধ্যমত পাশে দাঁড়িয়েছি। এলাকাবাসীর দোয়া ও ভালোবাসা পুঁজি করে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছী। সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশ পরিস্থিতি ও নিরপেক্ষভাবে ভোটগ্রহণ হলে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুস সালাম বলেন, একটি অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে  নির্বাচন কমিশনের সকল প্রকার প্রস্তুতি রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, ঘটলে অবশ্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য সব প্রস্তুতি রয়েছে এবং ভোট সুষ্ঠু করতে যা করতে হবে, তাই করা হবে। কেউ কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করলে তার ওপর আইনানুগ সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সুখময় সরকার বলেন, নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রশাসন বদ্ধপরিকর। এখানে দুর্নীতি অনিয়ম করার কোনো সুযোগ নেই ।এবং এই উপজেলা নির্বাচন একটি মডেল নির্বাচন হবে বলে তিনি জানান। উপজেলায় মোট ৫২টি কেন্দ্রে ১ লাখ ৯৭৭ জন ভোট দেবেন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৪৯ হাজার ৮৭৯জন এবং পুরুষ ভোটার ৫১ হাজার ০৯৮জন। উপজেলায় ৫টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ২৫ জন, সাধারন ওয়ার্ড সদস্য হিসাবে ২২১ জন, এবং সংরক্ষিত ওর্য়াডে ৫২ জন নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।

আরও দেখুন

বিএনপির সাবেক এমপি আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে হামলা-দখলের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক চাঁপাইনবাবগঞ্জ,,,,,,,,,,চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক …