সম্পত্তি লিখে নিয়ে ৭০ বছরের বৃদ্ধ বাবা জামেরুল ও মা রাশেদাকে ভরণপোষণ বন্ধ করে দিয়েছিল তিন ছেলে। শুধু তাই নয় খাবার চাওয়ার অপরাধে ওই বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তিন ছেলের বিরুদ্ধে। ছেলেদের নামে জমি লিখে দেয়ার কারণে বৃদ্ধ-বাবা মার থাকার ঘরটিও ভেঙে নিয়ে গেছেন মেয়ে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, গুরুদাসপুর:
রোববার দুপুরে গুরুদাসপুর পৌর সদরের ১ নম্বর ওয়ার্ড উত্তর নারী বাড়িতে ওই ঘটনা ঘটেছে।
স্ত্রী রাশেদা জানান, এক সময় তাদের সহায় সম্পত্তি ছিল। স্বামী প্যারালাইসিসের রোগী। তার চিকিৎসার জন্য জমিজমা শেষ। মাত্র তিন শতক জায়গা ছিল তাদের নামে, সে সম্পত্তি লিখে নেন তিন ছেলে। তাদেরকে ভরণপোষণ করানোর আশ্বাস দিয়ে ওই সম্পত্তি লিখে নেয় তিন সন্তান জালাল, আলাল ও রসুল। কিছুদিন পর তার ভরণপোষণ বন্ধ করে দেয় ছেলেরা।
তিনি আরো জানান, রোববার ছোট ছেলে মোফাজ্জলের কাছে খাবার চান তিনি। তখন তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে থাকে মোফাজ্জল। একপর্যায়ে বৃদ্ধা মাকে বাড়ি সারার অজুহাতে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ সময় তারা উপায়ান্তর না পেয়ে পার্শ্ববর্তী শহীদ মবিদুল উচ্চ বিদ্যালয়ের বারান্দায় আশ্রয় নেয়। পরবর্তীতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিটিং করতে এসে ওই দৃশ্য দেখে তাদেরকে একটা কক্ষ খুলে দেন।
কান্না জড়িত কণ্ঠে রাশেদা আরো জানান, খাবারের কষ্ট আর অভাবের তাড়নায় ১ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার মুজিবুর রহমানের কাছে ত্রাণ চান । তিনি তার ছেলেদের ডেকে পাঠান। ত্রাণের তালিকায় বৃদ্ধার নাম দিতে চান মুজিবুর। কিন্তু ছেলেরা নাম দিতে দেয়নি।
স্থানীয় ১ নম্বর ওয়ার্ডে কমিশনার মুজিবুর রহমান বলেন, ত্রাণের জন্য বৃদ্ধা আমার কাছে এসেছিল আমি মাঝে মধ্যেই ত্রাণ সহায়তা দিয়ে থাকি। ছেলে ও ছেলেদের স্ত্রী কেউ দেখতে পারে না তাই ওই স্কুলে গিয়ে থাকে। বৃদ্ধা মা-বাবাকে বাড়ি থেকে বের করে দেবার ঘটনা আমি আগে থেকেই জানি। এর আগেও কয়েকবার বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল।
অভিযুক্ত ছেলেদের মধ্যে বড় ছেলে জালাল জানান, তার ঘর বাড়ি ভাঙা হয়েছে এ কারণে বাবা-মাকে কয়েক দিনের জন্য বাড়ির বাইরে থাকতে বলা হয়েছে। পাশেই ছোট ছেলে রসুলের বিল্ডিং ফাঁকা রয়েছে।
গুরুদাসপুর থানার ওসি মোজাহারুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে কোনো খবর পাইনি। এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। যদি অভিযোগ সত্য হয় তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইউএনও তমাল হোসেন বলেন, সরেজমিনে দেখে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।