নিউজ ডেস্ক : একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে দেশব্যাপী পরিবহন শ্রমিকদের অবরোধ সামনে এনেছে একটি কুচক্রী মহল। আর সেই মহলকে ইন্ধন যোগাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত জোট বলে বিভিন্ন খবরের বরাতে জানা গেছে।
জানা গেছে, শুরুতেই পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি ছিল দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১৪ জেলায়। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) তা ছড়িয়ে পড়ে দেশের ২০ জেলায়। শ্রমিকদের এ কর্মবিরতি ছিল যাত্রীবাহী বাসের ক্ষেত্রে। বুধবার (২০ নভেম্বর) থেকে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সারা দেশে পণ্য পরিবহন ধর্মঘট। সূত্র বলছে, মূল্যবৃদ্ধির ষড়যন্ত্রে সরকারকে বিপাকে ফেলতে একটি সিন্ডিকেট বিএনপির হয়ে কাজ করছে। অনুসন্ধানের তথ্য বলছে, বিএনপি পরিবহণ শ্রমিকদের শীর্ষ নেতাদের আর্থিক প্রণোদনা দিয়ে তার মাধ্যমে একটি বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তুলতে চায়।
এ সত্য প্রমাণও হয়েছে বিএনপির একজন শীর্ষ নেতার বক্তব্যে। বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ৯ দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা এই ধর্মঘট-আন্দোলনে যৌক্তিকতা দেখিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, এই আন্দোলনে বিএনপির সমর্থন আছে।
পরিবহন ধর্মঘটে প্রায় সারা দেশে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বিঘ্ন ঘটছে। ফলে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ধর্মঘটে বাজারে পণ্য সরবরাহ কমে গেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ থাকায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের কয়েকটি জেলা ছাড়া প্রায় সারা দেশেই বন্ধ রয়েছে বাস চলাচল। কোনও কোনও জেলায় বাস চালানোর চেষ্টা করলেও তা আটকে দিচ্ছে পরিবহন শ্রমিকরা। আশঙ্কা দেখা দিয়েছে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির। জনগণকে জিম্মি করে সরকারকে চাপে ফেলতে তাদের এই ষড়যন্ত্র জনবিরোধী বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ অবস্থান নিয়েছেন সাধারণ জনগণ।
বিএনপির এমন ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক অধ্যাপক এবং রাজনীতি বিশ্লেষক বলেন, বিগত সময়ের বিভিন্ন ইস্যু পর্যালোচনা করলে বিএনপির এই ষড়যন্ত্র আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বাসের চাপায় ছাত্রমৃত্যুকে অন্যদিকে মোড় দেয়ার চেষ্টা, সাম্প্রতিক সময়ে আবরার হত্যাসহ নানা ইস্যুকে অস্থির করে একটি বিশেষ উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করেছে তারা। একইভাবে পদ্মাসেতুতে মাথা লাগার মতো গুজবেও তাদের ইন্ধন ছিলো- তা প্রমাণ হয়েছে। ফলে চলমান, পরিবহণ শ্রমিক ধর্মঘট, দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি যে একই সূত্রে গাঁথা তা বুঝতে বাকি থাকে না।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি মূলত চাইছে একটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে আন্দোলন সংগঠিত করতে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারবিরোধী অবস্থান তৈরি করে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করতে, এমনকি সরকার পতনও তাদের অন্যতম টার্গেট! যা বিএনপির একমাত্র কৌশল। আর সে পথেই এগিয়ে যাচ্ছে তারা।