নিউজ ডেস্ক:
২০০৮ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে গোপালগঞ্জের এক নির্বাচনী জনসভায় ক্ষমতায় গেলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রতিশ্রæতি দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার দিনবদলের সনদে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রত্যয়টি যুক্ত করে স্বপ্ন দেখানো হয়- দেশের প্রতিভাবান তরুণ ও আগ্রহী উদ্যোক্তাদের দিয়ে সফটওয়্যার শিল্প ও আইটি সার্ভিস বিকাশের। বলা হয়, ২০২১ সালের মূল লক্ষ্য হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ। এরপর টানা একযুগ ধরে ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে নানা পর্যায়ের পরিকল্পনা-মহাপরিকল্পনা করে সরকার। ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে কাজ করছে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘এ টু আই’ প্রকল্পসহ একাধিক মন্ত্রণালয় ও সংস্থা। এর মূল প্রবক্তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা, কম্পিউটার বিজ্ঞানী সজীব ওয়াজেদ জয়। জয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানের কারণেই ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বাস্তব সত্যি। সাবমেরিন কেবল থেকে মহাবিশ্বের স্যাটেলাইট যুগে বাংলাদেশ।
নির্বাচনী প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী, সারাদেশে হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি, আইসিটি ইনকুবেটর, কম্পিটার ভিলেজ স্থাপনের কাজ চলছে। দেশের জনগণকে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা, প্রতিটি নাগরিকের জন্য কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করা, সরকারের স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিতে নাগরিক সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের প্রয়োজনীয় সুবিধাদানে সমন্বিতভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ।
কানেক্টিভিটি ও অবকাঠামো উন্নয়ন : ডিজিটাল বাংলাদেশের এই গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ বাস্তবায়নে কাজ করছে আইসিটি বিভাগের বিভিন্ন সংস্থা, অধিদপ্তর ও প্রকল্প। ইতোমধ্যে একীভূত নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে ১৮ হাজার ৪৩৪ সরকারি অফিস। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩ হাজার ৪৪টি কম্পিটার ল্যাব এবং ১০০ স্মার্ট ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে ৪০টি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করেছে। যশোরের শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে এক হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ঢাকার জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে ১৫ কোম্পানি ও ১০টি স্টার্টআপ কাজ করছে। এছাড়া রাজশাহী ও সিলেটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্কসহ ১২টি জেলায় আইটি পার্ক নির্মাণের কাজ চলছে। বান্দরবানের লামা-থানচি, রাঙ্গামাটির সাজেক ভ্যালি, হাতিয়ার সন্দীপ, বাগেরহাটের দুবলার চর, ভোলার চর কুকড়িমুকড়ি, পটুয়াখালীর রাঙাবালি, কুড়িগ্রামের ছিটমহল, তিস্তার চরসহ দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকায় ৭৭২টি ইউনিয়নে ইন্টারনেট সংযোগে কাজ করছে কানেক্টেড বাংলাদেশ প্রকল্প। ১৭ হাজার ২৯৩টি সরকারি দপ্তরে ওয়াইফাই জোন, ৮৮৩ ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেম স্থাপন, নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ৬৪টি জেলা ও ৪৮৭টি উপজেলায় তাৎক্ষণিকভাবে ভিডিও কনফারেন্স আয়োজন সম্ভব। করোনাকালে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি বৈঠক করেছেন ১৬০০টি।
ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তবতা মন্তব্য করে সম্প্রতি (২৬ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নাগরিক সুবিধা প্রসারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন চালু করা হয়েছে। ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে- এ লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে সরকার।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ব্যান্ডউইথের আওতায় ৩১ দ্বীপ : সাবমেরিন ক্যাবলে কারিগরি ত্রæটি বা দেশে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটলে জরুরি মুহূর্তে ইন্টারনেট সেবা দেবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দেশের সরকারি-বেসরকারি সব টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচারিত হচ্ছে। বাংলাদেশ বেতারের সম্প্রচার কার্যক্রমও চলছে এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে। পটুয়াখালীর চর কাজল, চর বিশ্বাস, বাহের চর, চর বোরহান, ভোলা, সেন্টমার্টিনসহ দেশের দুর্গম ও উপকূলীয় এলাকার ৩১টি দ্বীপ এখন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ব্যান্ডউইথের আওতায়। সেখানে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া এটিএম বুথ, টেলিমেডিসিন ও টেলিএডুকেশনের কার্যক্রমও পরিচালিত হবে এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে। কেবল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ নয়, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে সরকার। আর ওই আর্থ অবজারেভেশন স্যাটেলাইট পুরো বাংলাদেশকে পাহারা দেবে।
এ ব্যাপারে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ভোরের কাগজকে বলেন, বিশ্বে
বাংলাদেশই প্রথম নামের আগে ডিজিটাল ব্যবহারকারী দেশ। বাংলাদেশের এক বছর পর ব্রিটেন, ৬ বছর পর ভারত, ৭ বছর পর পাকিস্তান ডিজিটাল শব্দ ব্যবহার করে। কৃষিভিত্তিক দেশকে ডিজিটালে রূপান্তরই আমাদের বড় অর্জন। এক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রত্যয়ের সব পিলারকে অগ্রগণ্য করতে হবে। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা করেন। নির্বাচনী ইশতেহারে বিশদভাবে তুলে ধরা হয়। এরপর থেকে প্রতিশ্রæতি পূরণে কাজ করছে সরকার। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা আর প্রধানমন্ত্রীর ২০৪১ সালের সমৃদ্ধ-উন্নত বাংলার হাতিয়ার সম্পূর্ণক্ষেত্রে ডিজিটালাইড। সামনের পথ অনেক দীর্ঘ। ব্যক্তি জীবন এবং রাষ্ট্র পুরোই হবে ডিজিটালাইড।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় তথ্য বাতায়ন : ২০০৮ সালে ৫০ হাজারেরও কম কর্মসংস্থান ১৩ বছরে ১৫ লাখের বেশিতে এসেছে; ২০০৮ সালে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল মাত্র ৫৬ লাখ, তা এখন প্রায় ১২ কোটি; সরকারি ওয়েবসাইট ছিল মাত্র ৫০টিরও কম; আর ২০২১ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তথ্য বাতায়ন বাংলাদেশের, যেখানে সরকারি ওয়েবসাইট ৫২ হাজার; ২০০৮ সালে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বাজার ছিল ২৬ মিলিয়ন, ২০২১ সালে তা এখন ১ বিলিয়ন ডলার। দেশের ৪ হাজার ৫০১টি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) থেকে গ্রামীণ জনপদের মানুষ খুব সহজেই তথ্য ও প্রয়োজনীয় সেবা পাচ্ছেন। বর্তমানে পৌরসভা, সিটি করপোরেশন, গার্মেন্টকর্মী ও প্রবাসী নাগরিকদের জন্য আলাদা ডিজিটাল সেন্টার চালু হয়েছে। এসব ডিজিটাল সেন্টার থেকে জমির পর্চা, নামজারি, ই-নামজারি, পাসপোর্টের আবেদন ও ফি জমাদান, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, হজ রেজিস্ট্রেশন, সরকারি সেবার ফরম, টেলিমেডিসিন, জীবন বিমা, বিদেশে চাকরির আবেদন, এজেন্ট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, বাস-বিমান-লঞ্চ টিকেটিং, মেডিক্যাল ভিসা, ডাক্তারের সিরিয়াল নেয়া, মোবাইল রিচার্জ, সিম বিক্রি, বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার ও কারিগরি প্রশিক্ষণ, ই-মেইল, কম্পোজ-প্রিন্ট-প্রশিক্ষণ, ফটো তোলা, ফটোকপি, সরকারি ফরম ডাউনলোড করা, পরীক্ষার ফলাফল জানা, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করা, অনলাইনে ভিসার আবেদন করা, কৃষি পরামর্শ ও তথ্য সেবাসহ ২৭০-এর বেশি ধরনের সরকারি-বেসরকারি সেবা পাচ্ছে জনগণ। সারাদেশে ৮ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করেছে সরকার এবং আরো ৫ হাজার ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আয় ১০০ কোটি ডলারের বেশি। এ আয় এ বছর ৫০০ কোটি ডলারে উত্তীর্ণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ও ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রসঙ্গে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ভোরের কাগজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্ন দেখান এবং অক্লান্ত পরিশ্রম করে বাস্তবায়ন করে এর সুফল মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন। মোবাইল ব্যাংকিং, স্বাস্থ্য খাত, শিক্ষা খাত, ভূমি রেকর্ড ডিজিটাল হওয়ায় মানুষের নৈমিত্তিক ভোগান্তি লাঘব হয়েছে। এই কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী ও তার সুযোগ্য সন্তান প্রযুক্তিবিদ সজীব ওয়াজেদ জয়ের। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল।
বদলে যাওয়া জীবন : ‘তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা নয়, শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার’- সেøাগানে দেশের সব মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চালু করা হয়েছিল মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম। রয়েছে কিশোর বাতায়ন, শিক্ষক বাতায়ন, মুক্তপাঠের মতো প্লাটফর্ম। যেখানে সাধারণ, কারিগরি, বৃত্তিমূলক ও জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ রয়েছে। করোনা মহামারির লকডাউনেও সারাদেশে ডিজিটাল ক্লাস চালু ছিল। এ ব্যাপারে শিক্ষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ভোরের কাগজকে বলেন, শেখ হাসিনা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন, তা শিক্ষা খাতে অত্যন্ত সফল। ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে ডিজিটাল প্লাটফর্মে। করোনায় অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু ছিল। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীও পিছিয়ে নেই; তবে তাদের ক্ষেত্রে আরো দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।
এদিকে ২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিদ্যমান বিচারিক কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশনের আওতায় এসেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিচার বিভাগীয় বাতায়ন তৈরি হয়েছে, যেখানে উচ্চ ও অধস্তন আদালতের বিচার বিভাগের সব কার্যক্রম নথিভুক্ত থাকবে। এছাড়া করোনাকালীন ভার্চুয়াল কোর্ট সিস্টেম প্লাটফর্মের মাধ্যমে ৮৭টি নি¤œ আদালতে বিচারিক কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। শুনানি কার্যক্রম পরিচালনা হয়েছে সুরক্ষিত ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেমে। ১১ হাজারের বেশি ভার্চুয়াল শুনানি হয়েছে। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে এনে দিয়েছে নতুন মাত্রা। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ফলে দ্রুত দেশের যে কোনো প্রান্তে অর্থনৈতিক লেনদেনের সুবিধা সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিয়েছে। নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে সরকারি সহায়তায় তৈরি হয়েছে ‘স্টার্টআপ বাংলাদেশ’ প্লাটফর্ম। ইতোমধ্যে শতাধিক স্টার্টআপকে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বড় অগ্রগতি নারী উদ্যোক্তা। ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) তথ্য মতে, দেশে প্রায় ২০ হাজার ফেসবুক পেজে কেনাকাটা চলছে। এর মধ্যে ১২ হাজার পেজই চালাচ্ছেন নারীরা। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে ডিজিটাল ছোঁয়া বদলে দিয়েছে কৃষকের জীবন। কৃষিবিষয়ক সেবায় কাজ করছে সরকারের কলসেন্টার ‘কৃষক বন্ধু’। ৩৩৩১ নম্বরে ফোন করে ঘরে বসেই বিভিন্ন সেবা পাচ্ছেন কৃষক। প্রযুক্তির সহায়তায় করোনা সচেতনতাসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে গেছে দেশের কোটি মানুষের কাছে। জাতীয় হেল্প লাইন ৩৩৩, ৯৯৯ এ ২৪ ঘণ্টা সেবা পাচ্ছে মানুষ। তিন বছরে ৩৩৩ এ সেবা পেয়েছেন ৪ কোটি মানুষ।
আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর ভোরের কাগজকে বলেন, স্যাটেলাইট, পারমাণবিক বিদ্যুৎ, ই-টেন্ডার ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল। কোভিডে অর্থনৈতিক ঝুঁকি সামলাতে বিশ্ব যখন হিমশিম খাচ্ছিল, বাংলাদেশ তখন ডিজিটাল গতিতে অর্থনীতিসহ সবকিছু ভাইব্রেন্ট রেখেছে। স্কুল-কলেজে পাঠদান অব্যাহত ছিল। স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটাল সেবা চালু রয়েছে। ই-কমার্স কাজে গতি বাড়াচ্ছে। তবে আমরা থেমে নেই, আরো অনেকদূর পথ হাঁটতে হবে।
এক যুগে ডিজিটাল বাংলাদেশের কর্মযজ্ঞের বিস্তৃতি ছড়িয়েছে বিশ্বজুড়ে। ২০১৭ সালে শুরু হওয়া সাউথ-সাউথ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সোমালিয়া, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, ফিজি, ফিলিপাইনস ও প্যারাগুয়ের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে এসডিজি, ওপেন গভর্নমেন্ট ডাটা, চেঞ্জ ল্যাবসহ বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান এবং সেবা বা সিস্টেম আদান-প্রদান করা হচ্ছে। ২০০৪ সালে কোরিয়া সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশ-কোরিয়া ইনস্টিটিউট অব আইসিটি স্থাপন করা হয়। এখানে ইন্টারনেট সুবিধা যুক্ত সাতটি আধুনিক ল্যাবে ধারাবাহিকভাবে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশের অর্জন প্রসঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তিবিদ তানভীর জোহা ভোরের কাগজকে বলেন, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব বড় অর্জন। তৃণমূল পর্যায়ে স্কুলগুলোতে কানেক্টিভিটি তৈরি, থানা পর্যায়ে থ্রিজি, ফোরজি চালু বড় সফলতা। বাইরের বিনিযোগকারীদের জন্যও ডিজিটাল বাংলাদেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তবে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। নারী-শিশুদের জন্য ঝুঁকি কমাতে হবে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে এনালগ আক্রমণ কমাতে হবে। তাহলে আমরা অর্থবহ এগিয়ে যাব। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন সফল হবে।