বৃহস্পতিবার , সেপ্টেম্বর ১৯ ২০২৪
নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / গুরুদাসপুর / চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

হাসপাতালে থেকেও আসামী হলেন অসুস্থ শিক্ষক!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নাটোরের গুরুদাসপুরে গত (১৩ আগস্ট) চোর সন্দেহে উজির আলী
(৩৫) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার দিন নিহত
উজির আলী’র স্ত্রী মোছাঃ রতœা বেগম বাদি হয়ে ৪ জনের নাম
উল্লেখ্য করে অজ্ঞাত ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের
করেন গুরুদাসপুর থানায়। তবে ঘটনাস্থলে না থেকেও অসুস্থ্য শিক্ষক
মোঃ সুরুজ আলীকে ৪ নম্বর আসামী করার অভিযোগ এনে সংবাদ
সম্মেলন করেছেন শিক্ষক সুরুজের স্ত্রী পারুল আক্তার। সুরুজ আলী
উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের চন্দ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী
শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। নিহত উজির আলী পাশ্ববর্তী
সিংড়া উপজেলার চামারি ইউনিয়নের কালিনগর গ্রামের মোঃ
খোরশেদ মাদারের ছেলে।
এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ শাজাহান আলী
বলছেন, ‘সরকার পতনের পর থেকে থানায় বেশকিছুদিন কার্যক্রম
ছিলোনা। একাধিক অভিযোগ থানায় আসার কারনে উজির আলী
হত্যা মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম এখনও শুরু করতে পারেননি তিনি।
তবে, মরদেহ উদ্ধার করে নাটোর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছিলো।
সুরতহাল প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছেন তিনি। অপরাধের সাথে
জড়িত নয় এমন ব্যক্তি আসামী থেকে থাকলে অবশ্যই তদন্তের মাধ্যমে
সঠিক সুরহা করা হবে। তাছাড়াও আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা
অব্যাহত রয়েছে।’
জানা যায়, নাজিরপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের ইজি বাইক চালক
আব্দুল মালেকের ছেলে সাইফুল ইসলামের বাড়িতে গত (১২ আগস্ট)
দিবাগত রাত আনুমানিক তিনটার সময় ইজিবাইক চুরি করতে
এসেছিলেন উজির আলী। একপর্যায় সাইফুল ইসলামসহ তার
পরিবারের সদস্যরা চুরির সময় উজির আলীকে প্রতিবেশীদের

সহযোগিতায় আটক করে গাছে বেঁধে রাখেন। এরপর উত্তেজিত
জনতা গণপিটুনি দিয়ে যে যার মত চলে যায়। সকালে উজির
আলীকে ইউনিয়ন পরিষদে নেওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়। নিহত উজির
আলীর কাছ থেকে স্থানীয় জনতা চুরির সরঞ্জাম একটি প্লাস, শক
দেওয়া যন্ত্র, বিছুটি পাতার গুড়া, টর্স লাইট ও একটি ঘড়ি উদ্ধার
করেছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উজির আলী’র কয়েকজন প্রতিবেশী
জানান,‘উজির আলী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পেশার কাজ কর্ম
করতো। তবে বিভিন্ন স্থানে চুরিও করতো সে। পরিবারের সদস্যদের
চাপে চুরির কাজ অনেকটাই কমিয়ে নিয়ে এসেছিলো উজির।
তারপরও কোথাও চুরি করে ধরা খেয়ে থাকলে তাকে আইনের আওতায়
দেওয়া উচিত ছিলো। পিটিয়ে মারা ঠিক হয়নি।
ঘটনাস্থলে না থাকলেও কেন শিক্ষক সুরুজ আলীর নামে মামলা দেওয়া
হলো জানতে চাইলে উজির আলীর স্ত্রী রতœা বেগম
জানান,‘ঘটনাস্থলে সুরুজ আলী না থাকলেও সে হুকুম দিয়েছে।
মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি তেমন বেশি কিছু জানেননা। তার
স্বজনরা মামলার বিষয়ে কার্যক্রম করছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শিক্ষক সুরুজের স্ত্রী পারুল
আক্তার বলেন,‘আমার স্বামী দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থ্য। বিভিন্ন সময়,
গুরুদাসপুর, নাটোর ও রাজশাহীতে চিকিৎসক দেখাচ্ছি। প্রতিটি
হাসপাতালের ছাড়পত্র সংরক্ষণ আছে। প্রায় ৬ মাস যাবৎ বিভিন্ন
হাসপাতালে যেতে হচ্ছে স্বামীকে নিয়ে। ঠিকমত চলাফেরা করতে
পারেনা। তার ফুসফুস, প্রস্টেটসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে।
তাছাড়াও যেখানে চোর সন্দেহে উজির আলীকে পিটিয়ে মারা হয়
সেখান থেকে আমাদের বাড়ির দুরুত্ব প্রায় এক কিলোমিটার। যে
বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে মারা গিয়েছে উজির আলী, তাদের
সাথেও আমার স্বামীর কোন সম্পর্ক নেই। অর্থনৈতিক সুবিধা
নেওয়ার জন্য কিছু অসাধু ব্যক্তির প্ররোচনায় আমার স্বামীর নামে
মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি সঠিক তদন্ত চাই।’
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ উজ্জল হোসেন
বলেন,‘কোন নিরাপরাধ মানুষ যেন হয়রানীর শিকার না হয় সেই

বিষয়ে আমরা সকল সময় সজাগ আছি। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে

আরও দেখুন

সিংড়ায় সরকারি জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: নাটোরের সিংড়ায় সরকারি জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। পৌর শহরের সরকারপাড়া …