নিউজ ডেস্ক: জামায়াত থেকে বহিষ্কৃত নেতা মজিবুর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন ‘জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ’-এর সুধী সমাবেশে অংশ নেয়ায় চাপের মুখে দলীয় সকল পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন জামায়াত নেতা সোলায়মান চৌধুরী।
জানা গেছে, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগরে ঘোষণা দিলেও মূলত ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ও মঞ্জুর সাথে যোগাযোগ রাখার কারণে দলীয় হাইকমান্ডের চাপের মুখে জামায়াতের রাজনীতি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। যদিও জামায়াতের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, বহিষ্কৃত জামায়াত নেতাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন, দলীয় তথ্য পাচার ও পরিকল্পনা ফাঁস করে দেয়ার মতো গুরুতর অভিযোগের সুষ্ঠু ও সদুত্তর দিতে না পারায় সম্মান বাঁচাতে দল থেকে পদত্যাগ করেছেন সোলায়মান চৌধুরী।
এদিকে বিপদের দিনে হঠাৎ পদত্যাগ জামায়াতের বিপত্তি বাড়াবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের সাবেক নেতা সোলায়মান চৌধুরী বলেন, ব্যক্তিগত কারণে আমি জামায়াতের রাজনীতি থেকে পদত্যাগ করেছি। আমার মনে হয়েছে, জামায়াত তার রাজনৈতিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকে সরে গেছে। যে আদর্শের ভিত্তিতে আমরা জামায়াতের রাজনীতি শুরু করেছিলাম, সেই আদর্শ কেবল এখন কাগজেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
জামায়াতের বহিষ্কৃত নেতাদের সাথে যোগসাজশ করার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি শুধুমাত্র একদিন ‘জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ’- এর অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। মঞ্জুর বিশেষ অনুরোধে তাকে আমি কিছু পরামর্শ দিয়েছি। এটি তো অপরাধের কিছু নয়। বিকল্প নেতৃত্ব তৈরির সুযোগ দিতে হবে আমাদের। এটাই গণতান্ত্রিক রাজনীতির সৌন্দর্য। সত্যি বলতে, সদ্য সমাপ্ত আমির নির্বাচন ও সেক্রেটারি জেনারেল মনোনয়ন নিয়ে যে অপরাজনীতি হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে, সেটি কখনই মেনে নেয়া যায় না। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে লাভ হবে না, তাই আমি বাধ্য হয়েছি পদত্যাগ করতে।
সোলায়মান চৌধুরীর পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বড় একটি রাজনৈতিক দলে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। একজন যাবেন, তার জায়গায় আরেক জনকে নেবেন। এক সোলায়মানের পদত্যাগের জামায়াতের কিছু হবে না। বিপদের দিনে দল ছাড়া সফল রাজনীতিবিদের কাজ নয়। আর তিনি তো বহিষ্কৃত নেতাদের সাথে গোপনে যোগাযোগ রেখে অপরাধ করেছেন। তাই এখন প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারায় পদত্যাগের নাটক করছেন সোলায়মান।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জামায়াত থেকে পদত্যাগ করেন দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক। এরপর দল থেকে বহিষ্কার করা হয় মজিবুর রহমান মঞ্জুকে। একইসঙ্গে সারাদেশের বিভিন্ন কমিটি থেকে কয়েকজন নেতা পদত্যাগ করেন। এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এনায়েত উল্লাহ পাটোয়ারীও কিছুদিন আগে জামায়াত থেকে পদত্যাগ করেছেন।