শনিবার , নভেম্বর ১৬ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / চাঙ্গা পুঁজিবাজারে গড় লেনদেন দুই হাজার কোটি

চাঙ্গা পুঁজিবাজারে গড় লেনদেন দুই হাজার কোটি


নিজস্ব প্রতিবেদক:
গত ১০ কার্যদিবসে পাঁচবার লেনদেন দুই হাজার কোটির ঘর ছাড়িয়েছে। একবার ছাড়িয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা। দেড় হাজার কোটির নিচে নামেনি একবারও।

২০১০ সালের মহাধসের পর লেনদেনে চাঙ্গাভাবের এমন চিত্র আর আসেনি দেশের পুঁজিবাজারে।

গত দুই সপ্তাহে লেনদের দুই বার করে চারবার ছাড়িয়েছে দুই হাজার কোটির ঘর। এর মধ্যে একবার ছাড়ায় আড়াই হাজার কোটি টাকার ঘর, যা ধসের পর এক দশকে সর্বোচ্চ।

সব মিলিয়ে গত ১০ কার্যদিবসের গত লেনদেন দুই হাজার টাকা ছুঁইছুঁই; এক হাজার ৯৮০ কোটি টাকার আশেপাশে।

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববারও দুই হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে। এ নিয়ে টানা তিন কার্যদিবস দুই হাজার কোটি টাকা লেনদেন ধসের পর আর হয়নি।

বাকি কার্যদিবসগুলোতেও লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকার আশেপাশেই ছিল।

সব মিলিয়ে টানা ১৭ কার্যদিবস হাজার কোটি টাকার ওপর লেনদেন হচ্ছে পুঁজিবাজারে।

২০১০ সালের মহাধসের পর মাঝেমধ্যে লেনদেনের ঝলক দেখা গেছে। তবে হাজার কোটির ঘরে এভাবে টানা লেনদেন দেখা যায়নি। দুই হাজার কোটি টাকা তো নয়ই।

চাঙ্গা পুঁজিবাজারে গড় লেনদেন দুই হাজার কোটি
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে গত ১০ কার্যদিবসে লেনদেনের চিত্র

মাঝে মধ্যে কোনো একটি সময়ে কখনও সখনও দুই এক দিন চাঙ্গাভাব যে ছিল না এমন নয়, তবে তা ধরে রাখা যায়নি। কখনও দেড় বা দুই হাজার কোটি টাকা লেনদেন হলেও তা আর ধরে রাখা যায়নি। এমনও দেখা গেছে কোনো একদিন দেড় হাজার কোটি টাকা লেনদেন হলো তো, পরদিন লেনদেন হয় সাতশ কোটি টাকা। আবার তিনশ কোটির ঘরেও আসে কিছুদিনের মধ্যে।

গত মে মাসে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিতে পরিবর্তন আনার পর বাজার নিয়ে বেশ কিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসে। আর গত নভেম্বর থেকেই বাজারে লেনদেন ও সূচক বাড়তে থাকে। ফিরতে থাকে বিনিয়োগকারীরা।

এর মধ্যে বিএসইসির সাম্প্রতিক এক চিঠিতে গত ৩০ কার্যদিবসে ৫০ শতাংশের বেশি বা মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়া দাম বেড়েছে- এমন কোম্পানির বিষয়ে তদন্তের খবরে বাজারে বড় দরপতন হয়। যদিও লেনদেনে ঘাটতি দেখা যায়নি।

তবে পরদিনই চিঠি প্রত্যাহার করে নেয় নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। আর এক দিনের ব্যবধানে সূচক যত কমেছিল, বাড়ে তার দেড় গুণ।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারের প্রতি আস্থার প্রমাণ পাওয়া গেছে অনেক আগেই। আর হাজার কোটি টাকার লেনদেন সেই আস্থাকে আরো সুদৃঢ় করছে।

বিনিয়োগকারী নজরুল ইসলাম বলেন, লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকা ধরে রাখা পুঁজিবাজারের প্রতি আস্থার প্রমাণ।

তিনি বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থাও যে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে আন্তরিক তা ঢালাও তদন্ত থেকে সরে সার্ভিল্যান্সের মাধ্যমে কারসাজি নিয়ন্ত্রণের চিন্তা থেকেও স্পষ্ট। যার কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা জন্মেছে যে, তাদের বিনিয়োগ সুরক্ষিত থাকবে।’

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ফান্ডামেন্টাল ভালো থাকলে আর সূচক বাড়লে সেটা ইতিবাচক। হাজার কোটি টাকা অব্যাহত লেনদেন হচ্ছে মানে পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগ আসছে। আর কেউ শেয়ার বিক্রি করলেও আবার বিনিয়োগ করছে।’

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৩৮৪ কোটি টাকা। এর আগের দুই কার্যদিবস বুধবার ও বৃহস্পতিবার যথাক্রমে দুই হাজার ৭০ কোটি ও দুই হাজার ১০৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।

এর আগে গত ৫ জানুয়ারি পুঁজিবাজারে ২০১০ সালের পর সর্বোচ্চ লেনদেন হয় দুই হাজার ৫৪৬ কোটি টাকা। তার আগের দিন লেনদেন হয় দুই হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।

গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিনই লেনদেন হয়েছে এক হাজারে কোটি টাকার বেশি।

বেড়েছে ব্যাংকের শেয়ারের দর

রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসইতে লেনদেন বাড়লেও কমেছে বেশিরভাগ শেয়ারের দর। গত দুই সপ্তাহ ধরে আগ্রহের তুঙ্গে থাকা বেক্সিমকো ও রবির শেয়ারের দর কমেছে এদিন।

তবে বেড়েছে ব্যাংকের শেয়ারদর। যাকে বেশ আগ্রহোদ্দীপক বলছেন পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ আবু আহমেদ।

গত পাঁচ বছর ধরেই ব্যাংকগুলো বেশ ভালো মুনাফা দিয়ে এলেও ব্যাংকের শেয়ারের দর তলানিতে থাকা নিয়ে আলোচনা আছে বিনিয়োগকারীদের।

তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে কমেছে চারটির দর। অপরিবর্তিত আছে তিনটি। আর বেড়েছে বাকি ২৩টির দর।

সবচেয়ে বেশি দর বাড়া ১০টি কোম্পানির পাঁচটিই এদিন ব্যাংক। আর সর্বোচ্চ দাম বেড়েছে সিটি ব্যাংকের। ন্যাশনাল ব্যাংকের দরও একদিনে সর্বোচ্চ যত বাড়া সম্ভব, তার কাছাকাছি ছিল।

অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি দাম কমেছে এমন কোম্পানির প্রায় বগুলোই দুর্বল। দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে জুট স্পিনার্স, ইমাম বাটন, ফ্যামিলি টেক্সটাইল আছে এই তালিকায়।

এদিন ব্যাংকের ২৩টি ছাড়া বাকি বেড়েছে আর ৪৯ টির দর। আর কমেছে ২৩১টির। পাল্টায়নি ৫৬টির দর।

সিংহভাগ শেয়ারের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৫৮ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট কমেছে।

এখন প্রধান সূচকের অবস্থান পাঁচ হাজার ৮৫০ পয়েন্ট।

শরিয়াহ ভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস সূচক ২৪ দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৯৯ পয়েন্টে। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ২৭ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ২০৮ পয়েন্টে।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই আগের কার্যদিবসের তুলনায় ১৭৭ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৪৭ পয়েন্টে।

এখানে লেনদেন হওয়া ২৭৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৮১টির, কমেছে ১৬৮টির এবং পাল্টায়নি ৩০টির দর।

এদিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৫১ কোটি ৬৯ লাখ ৯৯ হাজার ৩২৩ টাকা।

আরও দেখুন

তারেক রহমানের ইতিবাচক রাজনীতি আশার সঞ্চার করছে:দুলু

নিজস্ব প্রতিবেদক,,,,,,,বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন,গতানুগতিক রাজনীতির বাইরে তারেক …