বৃহস্পতিবার , মার্চ ২৮ ২০২৪
নীড় পাতা / উত্তরবঙ্গ / চাঁপাইনবাবগঞ্জ / চাঁপাইনবাবগঞ্জে শতবর্ষী এক বৃদ্ধা মাকে ফেলে পালিয়ে গেছে স্বজনরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে শতবর্ষী এক বৃদ্ধা মাকে ফেলে পালিয়ে গেছে স্বজনরা


নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনাববগঞ্জঃ
চাঁপাইনাববগঞ্জের রহনপুর রেল স্টেশনের পাশে ভাঙ্গা ছাউনির নিচে শতবর্ষী এক অসুস্থ বৃদ্ধা মাকে কনকনে শীতের মধ্যে ফেলে পালিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। তার গায়ে পর্যন্ত পরিমান গরম পোশাক না থাকায় শীতে কামতে থাকে সে। অসহায় এই মা তার পরিবার-পরিজনের পরিচয় না বলতে পারাই সেখান থেকে উদ্ধার নিয়ে আসে দুই পুলিশ সদস্য তৌহিদুল ইসলাম ও নুরনবী। চিকিৎসার জন্য রবিবার রাতে অসহায় মাকে ভর্তি করা হয় গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মেলেনি পরিবার খোজ খবর।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, মা কথাটি ছোট হলেও তার ব্যাখ্যা অনেক বড়। যে মা ১০ মাস ১০ দিন সন্তানকে গর্ভে ধারণ করে পৃথিবীর আলো দেখিয়েছে। শিশুকাল থেকে লালন-পালন করে বড় করে তুলেছে, সেই শতবর্ষী মাকে কনকনে শীতের মধ্যে রাতে অন্ধকারেই ফেলে পালিয়ে গেছে তার স্বজনরা। গত ২ সপ্তাহ আগে একজন ছেলে ও একজন মেয়ে ভ্যানে করে নিয়ে এসে রাতের অন্ধকারে রহনপুর রেল ষ্টেশনের ভাঙ্গা একটি চালার নিচে ফেলে পালিয়ে যায় তারা। অর্ধমাস পেরিয় গেলেও অসহায় বৃদ্ধার খোজ খবর নেই কেউ। কিন্তু এই দুখিনী মায়ের কষ্ট সহ্য করতে না পেরেই আমি এগিয়ে পাশের আরো একটি ছাউনি নিচে রেখে খাবার, শীতের পোশাক, চিকিৎসা ও ঔধুষের ব্যবস্থা করি।

ইমরান ইসলাম বাবু বলেন, কয়েক দিন ধরে এই অসহায় বৃদ্ধাকে রেল ষ্টেশনের প্লাটফর্মের ছাউনির নিচে দেখতে পাচ্ছি কয়েকদিন ধরে এবং তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করি কিন্তু সে কথা বলতে না পারাই তার কোন পরিচয় জানাতে পারা যায়নি।
হালিমা খাতুন বলেন, পুলিশ সদস্যরা অসহায় বৃদ্ধাকে উদ্ধার করেন হাসপাতালে ভর্তি করেছে এটি একটি মহাহাত কাজ।

রহনপুর তদন্ত ফাড়ির এএসআই তৌহিদুল ইসলাম বলেন, প্লার্টফর্মে গিয়ে দেখি মুমূর্ষ অবস্থায় কনকনে ঠান্ডার মধ্যে কে বা কারা অসহায় শতবর্ষী বৃদ্ধাকে ফেলে পালিয়ে যায়। তিনি আরো আমি পুলিশ বা নাম কামানোর জন্য এই কাজটি করিনি। মানবতার জায়গা থেকে নিজের মা ভেবে স্থানীয়দের নিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। যে বা যারা এই কাজটি করেছে ভুল করেনি।

ডিএসবির পুলিশ সদস্য নুরনবী বলেন, শতবর্ষী বৃদ্ধাকে রেল ষ্টেশনের প্লার্টফর্মে গিয়ে দেখে আমার চোখে পানি চলে আসে। সাথে সাথে তাকে নিচের কাধে করে হাসপাতালে নিয়ে আসি।

রহনপুর পৌরসভার মেয়র তারিক আহমেদ বলেন, রাতে খবর পেয়ে বৃদ্ধা ওই মায়ের খোজ খবর নিতে হাতপাতালে ছুটে যায়। যতদিন ওই বৃদ্ধার পরিবারের পরিচয় না পাওয়া যাবে ততদিন শুধু মেয়র হিসেবে নয় একজন সন্তান হিসেবে তার পাশে থাকবো এবং যাবতীয় দায়িত্ব বহন করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।

এদিকে গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সালাউদ্দীন আহমেদ বলেন, রবিবার রাতে ওই শতবর্ষী বৃদ্ধাকে যখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শুরুর দিকে শারীরিক অবস্থা নাগুজ থাকেও এখন তা উন্নতি দিকে। কিন্তু শংখামুক্তি নয় এখন। তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে।

যৌথ পরিবারের মুল্যবোধ কমে যাওয়ায় এধরনের অমানবিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। স্থানীয়দের দাবি এমন ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে বন্ধ হবে অমানবিক ঘটনা।

আরও দেখুন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে জায়গা-জমির বিরোধে প্রভাবশালীদের হুমকীতে নিরাপত্তাহীনতায় কৃষক পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক,চাঁপাইনবাবগঞ্জ: জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর প্রভাবশালীদের হুমকীতে নিরাপত্তাহীনতায় …