নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে কয়েকদিন থেকে বেড়েই চলছে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। রোটা ভাইরাস ও ঠান্ডা জনিত কারণে বেড়েছে ডায়রিয়ার রোগী। ৬টি বেডের বিপরীতে প্রতিদিন ৪৫-৫০ জন ডায়রীয়া রোগী ভর্তি হচ্ছে ডায়রীয়া ওয়ার্ডে। আর রোগী বেশি হওয়ায় বেড না পেয়ে হাসপাতালের মেঝেতেই চিকিৎসা নিচ্ছে রোগীরা। মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হতে এসে অনেকেই আরো অসুস্থ হচ্ছে বললেন রোগীর স্বজনরা। আর বাড়তি রোগীর কারণে কিছুটা হলেও হিমসিম খাচ্ছেন শিশু ওয়ার্ডের ডাক্তার ও নার্সরা। আর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলছেন পর্যাপ্ত ঔষুধ ও ডাক্তার-নার্স রয়েছে। ডায়রীয়া থেকে রক্ষার জন্য সবাইকে সাবধান থাকা ও গরম পোশাক পড়ার পরার্মশ দিচ্ছেন ওয়ার্ডের কর্মরত ডাক্তাররা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা আধুনিক হাসপাতালে গত এক সপ্তাহ থেকে ঠান্ডা জনিত কারণে ডায়রীয়ায় আক্রান্ত শিশু স্বাভাবিকভাবে ভর্তি হলেও গত তিনদিন থেকে প্রতিদিন ৪০-৫০ জন করে ডায়রীয়ায় আক্রান্ত শিশু ভর্তি হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে প্রায় ৩ শ’র বেশি শিশু ডায়রীয়া আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। ডায়রীয়া ওয়ার্ডে ৬ বেডে গাদাগাদি করে জায়গা না পেয়ে হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে তারা।
চিকিৎসা নিতে আশা রোগীদের অভিভাবক আকলিমা বেগম বলেন, হঠাৎ করেই পাতলা পায়খানা বা বোমি হওয়া শুরু হয়। পরে হাসপাতালে ভর্তিও হয়। গত তিনদিন থেকে এসে এখন পর্যন্ত আমার রোগী ভাল হয়নি। ঔষুধ খাইয়েও কিছু হচ্ছে না।
নাজমা খাতুন বলেন, হাসপাতালে একজন শিশু চিকিৎসক হওয়ায় ভাল চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি আমরা। এতো বড় হাসপাতালে একজন মাত্র শিশু ডাক্তার আছে। আমরা চাই দ্রুত আরো কয়েকজন শিশু ডাক্তার দিবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
রেজাউল করিম বলেন, আমরা একজন শিশু বাচ্চাকে নিয়ে এসেছি গত তিন আগে ডায়রীয়ার কারণে এখন পর্যন্ত ভাল হয়নি। আবার ওই শিশুর পাশে আরেক শিশু থাকায় ওই শিশুও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আর আমরা জানি এই হাসপাতাল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কিন্তু পুরাতন বিডিং এ রোগীদের গাদাগাদি করে রেখে চিকিৎসা দিয়ে আসছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পাশেই ৮ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন পড়েই আছে অথচ আমাদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে হাসপাতালের মেঝেতে। দ্রুত ডাক্তার ও বেড বাড়ানোর দাবি করেন রোগী ও স্বজনরা।
জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) মাহফুজ রায়হান বলছেন, গত এক সপ্তাহে শিশুদের যে ডায়রিয়ার হারটা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন জরুরি বিভাগের মাধ্যমে ৫০ জনের বেশি শিশু ডায়রিয়া ওয়ার্ড ভর্তি হচ্ছে। সদর হাসপাতালে একজন শিশু ডাক্তার হওয়ায় বাড়তি রোগীর কারণে চিকিৎসা সেবা দিতে আমাকে হিমহিস খাতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, শিশু ওয়ার্ডের নার্সরা এবিষয়ে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেই চলছে। আর মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিলে সুস্থ হওয়ার চেয়ে অসুস্থ হওয়ার কথাও বললেন ডাক্তার মাহফুজ রায়হায়।
আর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মুমিনুল হক বলেন, ঠান্ডার সময় ডায়রীয়ায় বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে শিশুরা। তবে হাসপাতালে পর্যান্ত পরিমাণ ঔষুধ, ডাক্তার-নার্স রয়েছ। পরিস্থিতি লাগালের মধ্যে রয়েছে। ডায়রিয়া নিয়ে কোন ধরণের আতংকিত না হয়ে গরম পোশাক, খাবার স্যালাইন খাওয়ার পরার্মশ দিচ্ছেন ডাক্তাররা।