নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
সদর হাসপাতালে কয়েকদিন থেকে বেড়েই চলছে ডায়রীয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। রোটা ভাইরাস
ও ঠান্ডা জনিত কারণে বেড়েছে ডায়রীয়ার রোগী। রোগী বেশি হওয়ায় বেড না পেয়ে হাসপাতালের
মেঝেতেই চিকিৎসা নিচ্ছে অনেকেই। আর বাড়তি রোগীর কারণে হিমসিম খাচ্ছেন শিশু ওয়ার্ডের
ডাক্তার ও নার্সরা। আর জেলা সিভিল সার্জন বলছেন, রোটা ভাইরাস থেকে রক্ষার জন্য সবাইকে
সাবধান থাকা ও গরম পোশাক পড়ার পরার্মশ দেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে গত কয়েকদিন থেকে রোটা ভাইরাস ও ঠান্ডা জনিত কারণে প্রায় ৪ শতর বেশি শিশু ডায়রীয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। প্রতিদিন ৪০-৫০ জন ডায়রীয়ায় আক্রান্ত শিশু ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালটিতে। ডায়রীয়া ওয়ার্ডে পর্যান্ত বেড না থাকায় এবং একই বেডে ২/৩ জন রোগী থাকায় হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে তারা।
চিকিৎসা নিতে আশা রোগীদের অভিভাবক রোজিনা বেগম বলছেন, হঠাৎ করেই পাতলা পায়খানা বা বমি শুরু হয়। পরে হাসপাতালে ভর্তিও হয়েছি। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে কিছুটা ভাল কিন্তু বমি থাকলেও থামেনি ডায়রীয়া।
রহিমা বেগম বলছেন, গত ৪ দিন ধরে ডায়রিয়ার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু ডাক্তাররা বলছেন ভাইরাসের ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। ঔষুধ দিলেও এখন কোনভাবে ভাল হচ্ছে না।
আনোয়ার হোসেন বলছেন, গত এক সপ্তাহে ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছে আমার মেয়ে। কিন্তু হাতপাতাল থেকে কিছু ঔষুধ দিলেও অধিকাংশ ঔধুষ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।
সানজিদা বেগম বলছেন, গত রাত ২ টার পরে থেকে আমার ছেলের পাতলা পায়খানা ও বমি শুরু হয়। সাথে সাথে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এখান থেকে ঔষুধ দিয়েছে আবার বাইরে থেকেও কিনতে বলেছেন ডাক্তাররা।
সারমিন খাতুন বলছেন, বেড না পেয়ে গত ৪ দিন ধরে আমার ছোট ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালের মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। যেখানে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হবার কথা থাকেও সেখানে বেড না পেয়ে ঠান্ডার মধ্যে মেঝেতে অসুস্থ্ হয়ে পড়ছে আমার ছেলে ও আমার মত অনেকেই। বিশেষ করে শিশু ও ডায়রীয়া ওয়ার্ডগুলোতে র্পান্ত বেডের ব্যবস্থা করা দরকার। তা না হলে সুস্থ হতে এসে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছে রোগী ও রোগীর স্বজনরা।
জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) মাহফুজ রায়হান বলছেন, গত এক সপ্তাহে শিশুদের যে ডায়রীয়ার হারটা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন জরুরি বিভাগের মাধ্যমে ৫০ জনের বেশি শিশু ডায়রীয়া ওয়ার্ড ভর্তি হচ্ছে। সদর হাসপাতালে একজন শিশু ডাক্তার হওয়ায় বাড়তি রোগীর কারণে চিকিৎসা সেবা দিতে আমাকে হিমহিস খাতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, শিশু ওয়ার্ডের নার্সরা এবিষয়ে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেই চলছে।
এদিকে জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানান, শীতকালে রোটা ভাইরাস জনিত ডায়রীয়ার প্রকোশ দেখা যায়। রোটা ভাইরাস শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। রোটা ভাইরাস থেকে বাচছে হলে সাবধানতা অবলম্বন, পরিস্কার পরিছন্ন থাকা, পরিস্কার পরিছন্ন খাবার খাওয়ার পরার্মশের কথা বলেন। রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রীয়া হলে কোন ভয়ের কারণে নেই। স্যালাইন পানি ও স্বাভাবিক খাবার খেলে তিন থেকে পাচ দিনের মধ্যে ভাল হয়ে যাবে ডায়রীয়া রোগী। শীতকালে রোটা ভাইরাস ডায়রীয়া বাড়ে। এব্যাপারে সবাইকে সর্তক থাকা ও গরম পোশাক পড়ার পরার্মশ।