নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগামী পাঁচ বছর অর্থাৎ অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় দেশে চরম দারিদ্র্য ৭ দশমিক ৪ শতাংশে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে এটা ১০ দশমিক ৫ শতাংশে রয়েছে। দারিদ্র্যের হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ দশমিক ৬ শতাংশে আনার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আর এই পাঁচসালা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে ৬৪ লাখ ৯৫ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা (৬৪৯৫৯.৮০ বিলিয়ন টাকা); যা চলমান সপ্তম পাঁচসালা পরিকল্পনার খরচের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় দ্বিগুণের বেশি বলে পরিকল্পনা কমিশন থেকে জানানো হয়।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) গতকাল মঙ্গলবার অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন) অনুমোদানের পর সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনাটি সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন এই পরিকল্পনার প্রণেতা ও সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য অধ্যাপক ড. শামসুল আলম। ড. শামসুল আলম জানান, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের সিংহভাগই ধরা হয়েছে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে বছরে দরকার হবে ১২ লাখ ৯৯ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা। করোনার প্রভাব অব্যাহত থাকার পরও প্রতি বছর গড়ে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরে আগামী ২০২৫ সালে প্রবৃদ্ধি হবে ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ। অর্থায়নের মধ্যে সরকারি খাত থেকে ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ বা ১২ লাখ ৩০ হাজার ১২০ কোটি টাকা এবং ব্যক্তি খাত থেকে ৮১ দশমিক ১ শতাংশ বা ৫২ লাখ ৬৫ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা অর্থায়ন প্রাক্কলন করা হয়েছে। তবে মোট প্রাক্কলিত ৬৪ লাখ ৯৫ হাজার ৯৮০ কোটি টাকার মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সাড়ে ৮৮ শতাংশ বা ৫৭ লাখ ৪৮ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে সাড়ে ১১ শতাংশ বা সাত লাখ ৪৭ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৭০ শতাংশ, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৮ দশমিক ৩২ শতাংশ এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সময়ে দেশের অভ্যন্তরে ও বিদেশে ২০-২১ অর্থবছরে ২ দশমিক শূন্য ১ মিলিয়ন, ২২ অর্থবছরে ২ দশমিক ১৩ মিলিয়ন, ২৩ অর্থবছরে ২ দশমিক ২৬ মিলিয়ন, ২৪ অর্থবছরে ২ দশমিক ৪১ মিলিয়ন ও ২৫ অর্থবছরে ২ দশমিক ৫২ মিলিয়ন মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে।
তিনি জানান, দেশের মূল্যস্ফীতির লাগাম টানার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে চলতি অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ, ৫ দশমিক ৩ শতাংশ, ৫ দশমিক ২ শতাংশ, ৪ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ৪ দশমিক ৮ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হবে। পরিকল্পনায় বিনিয়োগের লক্ষ্য ধরা হয়েছে জিডিপির ৩৭ দশমিক চার শতাংশ। অর্থবছরভিত্তিক লক্ষ্য হচ্ছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে জিডিপির ২০ দশমিক ৮ শতাংশ, ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ, ৩৪ দশমিক ৫ শতাংশ, ৩৫ দশমিক ৬ শতাংশ, ৩৬ দশমিক ২ শতাংশ এবং ৩৭ দশমিক ৪ শতাংশ বিনিয়োগ।
পরিকল্পনায় বলা হয়, ২০২৫ সাল নাগাদ কর জিডিপির অনুপাত বর্তমানের ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ করা হবে। রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য শুল্কের ওপর নির্ভরতা কমাতে এই দুই লক্ষ্য অর্জনের জন্য রাজস্ব আইন অধিকতর সংস্কার এবং কর প্রশাসন আধুনিকায়ন ও শক্তিশালীকরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু বর্তমানে ৭২ দশমিক ৬ বছর। এটাকে ২০২৫ সালে ৭৪ বছরে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বর্তমানে শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ার হার ১৫ শতাংশ রয়েছে। আগামী ২০২৫ সালে এটাকে কমিয়ে ৯ শতাংশে আনার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
আরও দেখুন
বাড়ির উঠানে ৪ কেজি ওজনের গাঁজারগাছ-গ্রেপ্তার ১
নিজস্ব প্রতিবেদক সিংড়া,,,,,,,,,,,,নাটোরের সিংড়া পৌরসভার বালুয়াবাসুয়া মোল্লা পাড়া এলাকায় ১০ফুট উচ্চতার একটি গাঁজার গাছ উদ্ধার …