রাজধানীর গোপীবাগে নির্বাচনি প্রচারণায় সংঘর্ষের সময় পিস্তল দিয়ে গুলি করা সেই ব্যক্তি ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস)। তার নাম আরিফুল ইসলাম (৪৭)। একসময় ছাত্রদল করতেন তিনি। ইশরাকের বাবা প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকারও ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন এসব তথ্য জানিয়েছেন। ঘটনাস্থলের আশপাশের বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে আরিফুলকে শনাক্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন ব্রিফিংয়ে বলেন, ঘটনার দিন (২৫ জানুয়ারি) আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে যখন সংঘর্ষ চলছিল, তখন আরিফুল গুলি করেছিল। সেই গুলির খোসা পেয়েছিল ডিবি। পরে অনুসন্ধানে ব্যবহৃত গুলিও উদ্ধার করা হয়। গুলি ও গুলির খোসা ছিল একই কোম্পানির। তার জামা-জুতা-হেলমেট— এগুলোর ছবিসহ সব তথ্য বিশ্লেষণ করে শনাক্ত করা হয় তাকে।
গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার দিন গুলিবর্ষণের আগে আরিফুলকে হেলমেট ছাড়াই ইশরাকের সঙ্গে দেখা যায়। আশপাশে যেসব সিসি ক্যামেরা ছিল, সেগুলোর ফুটেজেই এ দৃশ্য দেখা যায়। পরে সংঘর্ষ শুরু হলে হেলমেট পরে গুলি করতে শুরু করে আরিফুল।
আব্দুল বাতেন বলেন, সব তথ্য মিলিয়ে আরিফুলকে শনাক্ত করার পর তাকে ধরতে অভিযান চালানো হয়। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) তাকে হাতিরঝিল মহানগর প্রজেক্ট এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে পয়েন্ট ২২ বোরের একটি বিদেশি পিস্তল ও ৫০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
আরিফুলের পিস্তলটির লাইসেন্স রয়েছে কি না— জানতে চাইলে আব্দুল বাতেন বলেন, তিনি পিস্তলটির লাইসেন্স দেখাতে পারেননি। তবে পিস্তলটি লাইসেন্স করা থাকুক বা না থাকুক, তিনি যখনই গুলি করেছেন, সেটি অবৈধ হয়ে গেছে।
আরিফুল ইসলামকে গোপীবাগে সংঘর্ষের ঘটনায় ওয়ারী থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনেও মামলা দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছে ডিবি।
এর আগে, রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর গোপীবাগ এলাকায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের গণসংযোগে নেমেছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস ও বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন। প্রচারণায় তাদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। ওই সময় হেলমেট পরিহিত একজনকে পিস্তল দিয়ে গুলি করতে দেখা যায়।
গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, শনিবার গোপীবাগ এলাকায় সংঘর্ষের সময় ৮ থেকে ১০ রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা গেছে। আরিফুল সেদিন বিএনপির ইশরাক হোসেনের অনুসারী হয়ে গণসংযোগে অংশ নিয়েছিলেন। সংঘর্ষ শুরু হলে পিস্তল বের করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেন তিনি।
ডিবি সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার দিন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গুলি চালানো হয়েছে। ওই সময় আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীকে সংঘর্ষের স্থানে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা এ কাজ করেছে।
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর