নিজস্ব প্রতিবেদক, গুরুদাসপুর
নাটোরের গুরুদাসপুরে হাজেরা ক্লিনিক নামে একটি বে-সরকারি হাসপাতালে অস্ত্রপচারের (ইনগুইনাল হার্নিয়া) পর জাকারিয়া ইসলাম নামে তিন বছরের এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাতে ওই ক্লিনিকের মালিক ও চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম অস্ত্রপচারটি করেছিলেন। অবস্থার অবনতি হলে বুধবার দুপুরে রাজশাহী নেওয়ার পথে মারা যায় ওই শিশু।
শিশুটির বাবার অভিযোগ, হাসপাতালটির অব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসকের অদক্ষতার কারণেই তার ছেলের অকাল মৃত্যু হয়েছে। শিশু জাকারিয়া উপজেলার যোগেন্দ্রনগর গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে। তিনি পেশায় রাইসমিলের শ্রমিক । এনিয়ে ওই ক্লিনিক মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
জাহিদুল ইসলাম জানান, তার ছেলের ইনগুইনাল হার্নিয়ার সমস্যা ছিল। চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার রাতে শহরের চাঁচকৈড় কাচারীপাড়ায় অবস্থিত হাজেরা ক্লিনিকে নিয়ে যান তিনি। ২০ হাজার টাকায় ছেলের অস্ত্রপচারের চুক্তি হয়। রাত ১১টার দিকে ওই ক্লিনিকের মালিক ও চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম অস্ত্রপচার করেন।
কিন্তু বুধবার সকাল থেকে ছেলের অবস্থার অবনতি ঘটে। এক পর্যায়ে ক্লিনিকটির তত্বাবধানে একটি মাইক্রোবাসে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু পথেই মারা যায় শিশু জাকারিয়া। শেষ বিকালে শিশুটির মরদেহ সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোজাহিদুল ইসলাম ইসলাম বলেন, শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাই শিশুদের অপারেশন করার কথা। তার পরও কেন কী কারণে ওই চিকিৎসক অস্ত্রপচার করলেন তা বোধগম্য নয়।
তিনি আরো বলেন ইনগুইনাল হার্নিায়ার মত অপারেশন একটু জটিল। এধরনের অপারেশন করার জন্য জেনারেল এ্যানেসথেসিয়া দিয়ে করার কথা। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলোতে সেই সুবিধা নেই। সাধারন অপারেশনগুলো কিটামিন (অজ্ঞান) পদ্ধতিতে কওে থাকেন অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা। সম্ভবত একটির পরিবর্তে অন্য অঙ্গ কেটে ফেলায় শিশুটির মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
শিশুটির বাবা বলেন, তিনি একজন খেটে খাওয়া মানুষ। ছেলেকে সুস্থ্য করার জন্য ক্লিলিনকটিতে নিয়েছিলেন। কিন্তু কেন কী ভাবে ছেলেটি মারা গেল সেটা জানার কথা নয়। চিকিৎসকের অবহেলাতে তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি ছেলের হত্যার বিচার দাবী করেন।
এদিকে শিশুটির বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ছেলের শোকে মা রীনা বেগম নির্বাক হয়ে পড়েছেন। প্রতিবেশিরা শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছে। আর বাবা জাহিদ মন্ডল ছেলের লাশ কাঁধে নিয়ে ছুটে গেছেন কবরস্থানে।
হাজেরা ক্লিনিকের মালিক ও চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম দাবী করেন,- তিনি শিশু বিশেষজ্ঞ নয়। তবে শিশু চিকিৎসায় প্রশিক্ষণ রয়েছে তাঁর। অপারেশন সঠিক ছিল। কিন্তু বুধবার সকালে শিশুটির অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে রাজশাহী পাঠানোর চেষ্টা করা হলে পথে মারা যায়। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে আপোসের চেষ্টা চলছে।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আরও দেখুন
পেঁয়াজের চারা পুড়ে শেষ-কৃষকের মাথায় হাত! জমিতে এখন শুধুই ঘাস!
নিজস্ব প্রতিবেদক নলডাঙ্গা,,,,,,,,,,,,,,,,,জমিতে নষ্ট হওয়া পেঁয়াজের চারা দেখে নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি জমি লিজ নিয়ে …