বৃহস্পতিবার , ডিসেম্বর ২৬ ২০২৪
নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / গুরুদাসপুর / গুরুদাসপুরে মাছ চাষে নীরব বিপ্লব

গুরুদাসপুরে মাছ চাষে নীরব বিপ্লব

নিজস্ব প্রতিবেদক, গুরুদাসপুর:
আশির দশক পর্যন্ত ইতিহাসের পাতায় চলনবিল ছিল মাছ ও পাখির জন্য বিখ্যাত । এই চলনবিলের মাছের স্বাদ দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে ছিল অতিব প্রিয় । এখনও তার এতটুকুও ব্যতয় ঘটেনি । জমিদার আমলে চলনবিলে সেই সুস্বাদু কই, মাগুর , শিং, বোয়াল, রুই, কাতলা, মৃগলে , বাউস আইড় , বাঘাড়, বাচা ,পাবদা , ভেদা, ফাঁসা সরপুঁটি ইত্যাদি মাছ রাজা , জমিদারর, গোমস্তাদরে উপঢৌকন দিয়ে খুশি করে শত শত একর জমি লাখেরাজ বা পরগনা বন্দোবস্ত নিয়ে জমিদার হয়েছে । আবার বিচারক, প্রশাসন , পুলিশ অফিসারকে এই মাছ দিয়ে জটিল মামলা থেকে খালাস পেয়েছে । এমনকি ফাঁসির আসামিও মুক্তি পেয়েছে। এমন নজিরের কথা পুরাতন মানুষদের কাছ থেকে প্রায়শই শোনা যেত ।

এই চলনবিল আর সেই চলনবিল নাই। বড়াল আর নন্দকুঁজা নদীতে পানি উন্নয়ন র্বোড তিনটি স্লুইস গেট এবং আত্রাই নদীর সাবগাড়ি বেশানী নদীর মুখে রাবারড্যাম স্থাপন করে । আর ভুমি দস্যুদের অবৈধ দখলদারিত্বে চলনবিলের প্রানদায়ী নদীগুলির পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে । চলনবিলের প্রান সঞ্চালনকারী স্রোতস্বনী বড়াল, নন্দকুঁজা, গুমানি আত্রাই, বশোনী নদীর নাব্যতা হারিয়ে মরা খালে পরনিত হয়েছে । ফলে চলনবিলও পানিশুন্য হয়ে মাছের আকাল দেখা দিয়েছে । ফলে মুক্ত পানির প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন একেবারেই হ্রাস পেয়েছে । ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক সেই সুস্বাদু মাছ চলনবিল থেকে হারিয়ে গেছে । চলনবিলের মৎস্যজীবি জেলে, জিয়নি,হালদার সহ মাছের ওপর জীবিকা র্নিভরশীল মানুষ মাছের অভাবে অভাবে পৈত্রিক পেশ ছেড়ে দিতে হচ্ছে ।

তবে গুরুদাসপুর উপজলোর সফল মাছ চাষী উদ্যক্তাদের ব্যক্তি উদোগে প্রশাসনিক সকল বাধা উপক্ষো করে পুকুর খনন করে বিভিন্ন উন্নত প্রজাতির মাছ আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করে মাছের উৎপাদনে নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছে।
উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী দেখা যায় গত ৯ টি নদী যথাক্রমে নন্দকুঁজা, আত্রাই,ছোট আত্রাই, গুমানি বেশানি মর্জিমামুদ, তুলসি গুড়, বিলকাঠোর , ৩টি খাল এবং ৬ টি বিল থেকে প্রায় ১০০ মে.টন ৩০ টি প্লাবন ভ‚মি থেকে ১০১৬ মে. টন ও অন্যান্য জলাশয় থেকে ২‘শ মে.টন সহ ১০ হাজার মে.টনেরও বেশি মাছ উৎপাদন হয়েছে । যার আর্থিক মুল্য তিন শত কোটি টাকারও বেশী। এই গুরুদাসপুর উপজেলা থেকেই প্রতি বছরে একমাত্র মাছ উৎপাদনের আয় থেকেই তিন শত কোটি টাকা জাতীয় আয়ের সাথে যুক্ত হচ্ছে । আগামীতে আরো বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে । উপজেলায় মাছের চাহিদা মেটানোর পরও সাড়ে ১০ হাজার মেট্রিক টন মাছ দেশের অভ্যন্তরীন বাজারে বাজারজাত করা হচ্ছে।

এব্যাপারে গুরুদাসপুর উপজলো মৎস দপ্তর থেকে আগামী পঞ্চর্বার্ষিকী পরিকল্পনায় ২০২১-২২ নাগাদ মাছের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০৬৭২.৩০ মে. টন । কিন্তু বেসরকারী হিসেবে ২০২১-২২ সাল নাগাদ প্রকৃত উৎপাদন ২০ হাজার মে. টন ছাড়িয়ে যাবে বলে মাঠ র্পযায়ের জরিপে আশা করা হচ্ছে ।

মৎস ও প্রানিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের তথ্যে জানা যায়, গত ১০ বছরে দেশে মাথাপিছু মাছ খাওয়ার পরিমান প্রায় শতভাগ বেড়েছে। ২০১০ সালের সর্বশেষ খানা জরিপে উঠে এসেছে বছরে বাংলাদেশে একজন মানুষ মাত্র ১২ কেজি মাছ খেত। এখন সেটা পৌছেছে ৩০ কেজিতে। বাংলাদেশ এখন মাছ চাষে স্বয়ংসম্পুর্ন। বর্তমান বিশ্বে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ।

আরও দেখুন

লালপুরে গোঁসাই আশ্রমে কমিটি

গঠন নিজস্ব প্রতিবেদক লালপুর,,,,,,,,,,,,,,,,নাটোরের লালপুরে শ্রী শ্রী ফকির চাঁদবৈষ্ণব গোঁসাই আশ্রমে আলোচনা সভা ও আহŸায়ক …