নিজস্ব প্রতিবেদক, গুরুদাসপুর:
নাটোরের গুরুদাসপুরে দীর্ঘ খরতাপ ও অনাবৃষ্টির কারণে লিচু বাগানগুলোতে মুকুলের প্রায় অর্ধেক ঝরে গেছে। তাপদাহে লিচু আকারে ছোট ও পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় চাষীরা। তবে গত দুইদিনের শিলা ও দুর্যোগ বিহীন স্বাভাবিক বৃষ্টির ফলে লিচু চাষিদের ক্ষতির আশংকা অনেকটাই কেটে গেছে।
দুর্যোগবিহীন বৃষ্টি লিচুর জন্য টনিকের মতো কাজ করেছে বলে লিচু চাষীদের অভিমত। তাই স্বস্তি ফিরেছে লিচু চাষিদের মধ্যে। দেশজুড়ে আগাম মোজাফফর জাতের লিচুর জন্য সুনাম ও খ্যাতি রয়েছে এই গুরুদাসপুর উপজেলার। আগাম জাতের মোজাফ্ফর লিচু যেমন লাল টসটসে গোলগাল সুদর্শন চেহারার, তেমনি সুস্বাদু। বাজারে এর চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। উপজেলার বিভিন্ন লিচু বাগান ঘুরে দেখা গেছে, নাজিরপুর ইউনিয়নের বেড়গঙ্গারামপুর, মাহমুদপুর, মোল্লাবাজার, হামলাইকোল, বিয়াঘাট, চন্দ্রপুর, কুমারখালিসহ বিভিন্ন গ্রামের বাগানের গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে লিচু। লিচু রক্ষায় চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন পরিচর্যার কাজে।
উপজেলার লিচু চাষি জামাল, রেজোসহ অনেকেই জানান, লিচু বাগান কয়েকবার বিক্রি হয়। গত দুই বছর করোনা আর এবছর প্রচন্ড খরতাপ ও অনাবৃষ্টির প্রভাব পড়েছে লিচু বাগানে। বেপারিরা আসলেও বাগান দেখে দাম বলার সাহস পাচ্ছেনা। বর্তমানে দুই লাখ টাকার বাগান ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকায় দর কষাকষি চলছে। তবে গত দুইদিনের শিলা বিহীন স্বাভাবিক বৃষ্টি হওয়ায় সতেজ হয়ে উঠেছে লিচুর গুটি। খরা ও অনাবৃষ্টিতে মুকুল এবং গুটির ক্ষতি হলেও স্বস্তির বৃষ্টিতে এখন অনেকটাই পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা করছেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, উপজেলায় ৪১০ হেক্টর জমিতে ২৫০টি লিচু বাগান রয়েছে। প্রতিটি বাগানে লিচুর ভালো মুকুল এসেছিলো। কিন্তু অনাবৃষ্টির কারণে অর্ধেকের মতো মুকুল ঝরে পড়েছে। লিচুর গুটি কম দেখা যাচ্ছে। তাই এবার ফলন কম হতে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, মাঠ পর্যায়ে লিচু বাগান পরিদর্শন করে দীর্ঘ অনাবৃষ্টি ও খরা মোকাবেলায় চাষিদের বাগানে সেচ দেওয়াসহ সকল পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গত দুইদিনের বৃষ্টি লিচুর জন্য টনিকের কাজ করেছে। এবার উপজেলায় ৩ হাজার মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।