শনিবার , নভেম্বর ১৬ ২০২৪
নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / গুরুদাসপুর / গুরুদাসপুরের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের মোটরসাইকেল মহড়ায় গণজোয়ার

গুরুদাসপুরের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের মোটরসাইকেল মহড়ায় গণজোয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক, গুরুদাসপুর:
প্রতিবারই নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসভার নির্বাচন প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হয়ে এসেছে। কিন্তু এবার প্রথম ধাপের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণায় নাটোরের কোনো পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছেনা। তারপরেও আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে গুরুদাসপুরে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণা ও গণসংযোগের পাশাপাশি মিছিল আর স্লোগানের মধ্যদিয়ে চলছে মোটরসাইকেল মহড়া। উঠান বৈঠক থেকে শুরু করে পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রার্থীদের সমর্থনে হচ্ছে নির্বাচনী মতবিনিময় সভা।

বিশেষ করে আওয়ামী লীগ দলীয় অভ্যন্তরীন কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বিপ্লবকে মেয়র প্রার্থী ঘোষণার পর দলীয় নেতাকর্মীরা দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে একদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দুইবারের নির্বাচিত বর্তমান পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ আলী গ্রুপ অপরদিকে সাংসদ আব্দুল কুদ্দুসের ঘোষণাকৃত মেয়র প্রার্থী আরিফুল ইসলাম বিপ্লব গ্রুপের মধ্যে চলছে পাল্টাপাল্টি জনসমাবেশ এবং মোটরসাইকেল মহড়া।

বুধবার বিকেলে মেয়র প্রার্থী আরিফুল ইসলাম বিপ্লবের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গণজোয়ার সৃষ্টি করে প্রায় এক হাজার মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিয়েছেন পৌর এলাকজুড়ে। আধুনিক পরিচ্ছন্ন নগর, পানি নিষ্কাষনের ব্যবস্থা, অতিরিক্ত কর আদায় থেকে মুক্তিলাভ ও নাগরিক সকল সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে পৌরসভার ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময়সহ কোলাকুলি করে ভোট ও দোয়া চাইছেন প্রার্থী বিপ্লব। হাজারো জনতার সামনে হাত তুলে চমক দিচ্ছেন এই মেয়র প্রার্থী।

একইদিনে রাত ৮টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ আলীর নেতৃত্বেও নৌকার স্লােগান দিয়ে পৌর এলাকাজুড়ে বিশাল মোটরসাইকেল মহড়া দিতে দেখা যায়।

পরে চাঁচকৈড় দলীয় কার্যালয়ে সমবেত হয়ে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশ্যে মেয়র শাহনেওয়াজ বলেন, কারো কোনো প্রোপাগান্ডাতে কোনো কাজ হবেনা। দলীয় নেতাকর্মী ও পৌরবাসী আমার সাথে আছেন। এবারো দলীয় মনোনয়ন আমিই পাবো। সুষ্ঠুভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হলে এবারো বিপুল ভোটের ব্যবধানে মেয়র নির্বাচিত হবো ইনশাল্লাহ। এসময় উপস্থিত নেতাকর্মী ও সমর্থকরা মুহুর্মুহু করতালির মাধ্যমে তাকে অভিনন্দন জানান।

শুধুমাত্র মাস্ক পরিধান করেই ৮০ শতাংশ করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় পৌরসভার বিভিন্ন মোড়ে ও রাস্তাঘাটের পথচারী, রিক্সা, ভ্যানচালক, শ্রমিকসহ সবশ্রেণির মানুষের মাঝে ৫ হাজার মাস্ক বিতরণ করেন পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ আলী। জনগণের কাছে দানবীর খ্যাত মেয়র শাহওনয়াজ এ পর্যন্ত নিজের অবস্থান ও জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন। গরিব, দুখি, খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষের বন্ধু হয়ে দুইবার পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। পৌরসভার উন্নয়ন অব্যাহত রাখায় তার আলাদা ভোট ব্যাংক তৈরি হয়েছে।

তবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করতে থেমে নেই অন্যান্য প্রার্থীরাও। নতুন মুখ হিসেবে ডাঃ মোহাম্মাদ আলী অনেক আগেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করায় পৌরবাসী প্রথমে মেয়র প্রার্থী হিসেবে তাকেই চিনে আসছেন। পৌর সদরের আনোয়ার হোসেন চক্ষু ও ডায়বেটিস হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোহাম্মাদ আলী বিনামুল্যে চক্ষু ও ডায়বেটিস রোগিদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিনামূল্যের স্বাস্থ্য ক্যাম্প, করোনাকালীন সময়ে মানুষদের সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করছেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে নিজের অবস্থান ঠিক রেখে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। মানুষের পাশে থেকে কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে তিনিও জনগণের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করে চলেছেন। পৌরবাসীর কাঙ্খিত সেবা নিশ্চিত করতে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও নির্বাচন করবেন বলে জানান তিনি।

অপরদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এবারের পৌর নির্বাচনে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান বাঁধন নিজেকে জনগণের মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করায় আওয়ামী লীগের একাংশসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মিরা তার পক্ষে ভোট চাইতে শুরু করেছেন। নিয়মিত উঠান বৈঠক, জনসভাসহ মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে নির্বাচনী মাঠ প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ করে তুলেছেন বাঁধন।

করোনা মোকাবেলায় বিভিন্ন মোড়ে ও রাস্তাঘাটের পথচারী, রিক্সা, ভ্যানচালক, শ্রমিকসহ সবশ্রেণির মানুষের মাঝে মাস্ক বিতরণ করছেন। তিনিও নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। জনগণের হাতে তার বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডের ছবিসংযুক্ত পোষ্টার শোভা পাচ্ছে। জনতার পৌরসভায় পরিণত করতে পৌর নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হলে মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করে যুব উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রসারিত করতে চান বলে জানান তিনি।

এসব প্রচারণায় মেয়র প্রার্থীরা জনগণের মাঝে পৌরসভার উন্নয়ন নিয়ে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। সেই সাথে একে অপরের ভুল-ত্রুটি জনগণের সামনে তুলে ধরার ফলে এবারের পৌর নির্বাচন অন্যান্য নির্বাচনের তুলনায় ব্যাপক প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ হবে বলে ধারণা করছেন পৌরবাসী।

আরও দেখুন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘রক্তের খোঁজে আমরা’র ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

নিজস্ব প্রতিবেদক চাঁপাইনবাবগঞ্জ ………..চাঁপাইনবাবগঞ্জে রক্তদান সামাজিক সেবামূলক সংগঠন ‘রক্তের খোঁজে আমরা’র ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। শুক্রবার …