‘ছেলেধরা’ গুজব থেকে সাবধান হতে জুমার নামাজে সারাদেশের মসজিদে সচেতনতামূলক প্রচারণা ও সভা করা হয়েছে। মসজিদের ইমামরা প্রাক খুতবায়ও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে এটি একটি গুজব, আর এ গুজবে বিভ্রান্ত না হয়ে ছেলেধরা সন্দেহ হলে পুলিশকে খবর দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
শুক্রবার জুমার নামাজের প্রাক খুতবায় গুজব সম্পর্কে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কুরআন ও হাদিসের আলোকে বয়ান করেন মসজিদের ইমামরা। এসময় বলা হয়, ছেলেধরা কথাটি সম্পূর্ণ গুজব। গুজবে কান দেবেন না। তবে কোনো বিষয়ে কোনো ব্যক্তিকে সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। অথবা ‘৯৯৯’ নাম্বারে ফোন করেও তথ্য জানানো যাবে।
রাজধানীর উত্তর কাফরুল জামে মসজিদে জুমার নামাজের খুদবার আগে এ বিষয়ে সর্তক করেন কাফরুল থানার ওসি। গুজবে কান না দিয়ে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে মুন্সীগঞ্জে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জেলার মসজিদে মসজিদে গণসচেতনার লক্ষে গুজব প্রতিরোধে খুতবায় আলোচনা, দোয়া ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ শহর জামে মসজিদে জুমার নামাজের খুতবায় মসজিদের ইমাম মুফতি মো. শহীদুল্লাহ গুজব বিশ্বাস না করার জন্য কোরআন হাদিসের ব্যাখ্যা দিয়ে সবাইকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রউফ সচেতনতামূলক বক্তব্য রাখেন।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ পেরিয়ে যাতে উন্নত রাষ্ট্রের দিকে যেতে না পারে সেজন্য একটি গোষ্ঠী এসব রটাচ্ছে। দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ নাগরিক শান্তির পক্ষে। ২ ভাগ রটনাকারী, গুজব সৃষ্টিকারী। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঝালকাঠিতেও ছেলেধরা গুজব প্রতিরোধে মসজিদে পুলিশের সচেতনতামূলক প্রচারণা সভা করা হয়েছে। নেছারাবাদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত সচেতনতামূলক সভায় বক্তব্য দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম মাহমুদ হাসান।
এ সময় মাওলানা খলীলুর রহমান নেছারাবাদীসহ প্রায় ১০ হাজার মুসল্লী উপস্থিত ছিলেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম মাহমুদ হাসান বলেন, আইন কোনো অবস্থাতেই হাতে তুলে নেয়া যাবে না। গুজবে কান না দিয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তির সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানাতে হবে। গুজব থেকে জনগণকে সচেতন করতে এবং কোথাও ছেলেধরা সন্দেহ হলে আইন নিজেদের হাতে তুলে না নিয়ে প্রয়োজনে ৯৯৯ এ কল দেয়ার অনুরোধ করেন তিনি। এছাড়াও লিফলেট বিতরণ ও মাইকিংসহ বিভিন্ন রকমের প্রচারণা করা হয়। জেলার সাধারণ মানুষ পুলিশের এসব কার্যক্রমে সন্তুষ্ট।