নিউজ ডেস্ক:
দেশের পরিবহন খাতকে ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনতে ‘গো বাংলাদেশ’ নামে একটি প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
দেশের প্রায় সকল সেক্টরেই ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া লাগলেও পরিবহন খাত এখনো অবহেলিত। টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়ানো ও কাগজের টিকিটই গণ-পরিবহনে প্রচলিত। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া বাস, লাইসেন্স ছাড়া ড্রাইভার, ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ও ভাড়া নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের দুর্ব্যবহার নিত্যদিনের ঘটনা। গণপরিবহনে ঘটা আরেকটি উদ্বেগজনক অপরাধ হচ্ছে নারীদের যৌন হয়রানি। অনিবন্ধিত বাস ও ড্রাইভার এই সিস্টেম ব্যবহার করতে পারবে না।
প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, বাসের প্রতিটি সিটের পেছনে একটি করে কিউআর কোড লাগানো থাকবে, যাত্রী যে সিটে বসে আছে তার সামনের সিটের পিছনে সেই সিটের কিউআর কোডটি থাকবে। যাত্রীরা তার সামনের কিউআর কোডটি স্ক্যান করার মাধ্যমে শুধুমাত্র গন্তব্য সিলেক্ট করে ভাড়া দিয়ে দিতে পারবে। তার জন্য ডিজিটাল ওয়ালেট থেকে টাকা কেটে নেয়া হবে।
অগ্রীম টিকিটও বুক করে রাখা যাবে। ভ্রমনের বিপরীতে কোন মন্তব্য বা অভিযোগ থাকলে যাত্রীরা তা একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত প্রদান করতে পারবেন ও সেবার মান সম্পর্কে মন্তব্য করতে পারবেন। যা সরাসরি পরিবহন মালিকরা দেখতে পারবে। এর দ্বারা বৈধ ড্রাইভার ও হেল্পারের জন্য যাত্রী ব্যবস্থাপনাও সহজ হবে এবং কোন যাত্রী ডিজিটালি ভাড়া দিতে না পারলে ক্যাশ টাকার মাধ্যমেও ভাড়া নিতে পারবে। যাত্রীরা তাদের ভাড়া বিকাশ, নগদ, রকেট বা কার্ডের মাধ্যমের ভাড়া প্রদান করতে পারবেন।
সম্প্রতি সিটি ইউনিভার্সিটি আয়োজিত ‘সিএসই ফেস্টিভ্যাল-২০২১’ এ আইডিয়া, ইনোভেশন অ্যান্ড ইনভেশন প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। এছাড়া Innovation Design and Entrepreneurship Academy (iDEA) হতে ১০ লক্ষ টাকার অনুদানও পেয়েছে। ইতোমধ্যেই ‘হিমাচল পরিবহন’ সিস্টেমটি ব্যবহারের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের ধারনা তাদের এ প্রকল্পটি বাংলাদেশের পরিবহন খাতকে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান সৌরভ, জাহাঙ্গীর হোসাইন, রেজাউল করিম, নিশাত মাহমুদ অ্যাপ তৈরির দলে ছিলেন। তত্ত্বাবধানে ছিলেন সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. জুলফিকার মাহমুদ একই বিভাগের সাবেক শিক্ষক ও এটুআই-এর সাবেক ন্যাশনাল কনসালটেন্ট জাহিদুর রহমান।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষার্থীদের এরুপ সৃষ্টিশীল কাজের জন্য তাদের অভিবাদন জানাই। শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও সৃষ্টিশীল কাজের পাশে আমরা সব সময় তাদের সাথে আছি। তরুণদের এমন উদ্ভাবনী কাজের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবসময় পাশে আছে।