সর্বশেষ লন্ডনে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখা গেছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে। সেখানে তাকে হাসিমুখে বিভিন্ন শেফ ও ওয়াটারের সাথে হাসিমুখে ছবি তুলতে দেখা যায়। চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে, একটি ভিডিও বার্তা দেওয়া ছাড়া লন্ডনে প্রায় বসবাসরত তারেক রহমানের আর কোনও উদ্যোগ এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি।
কিছুদিন আগেও ছাত্রদলের অর্ধেক ঘোষিত কমিটি নিয়ে নিজেরদের মাঝে নানা বাকবিন্ডতায় জড়ায় এই অঙ্গ সংগঠনটি। এমনকি নয়া পল্টনের বিএনপি কার্যালয়ের সামনে টায়ার পুড়িয়ে রাস্তা বন্ধ করে নিজেদের দলভুক্তি করার দাবি জানিয়ে যে আন্দোলন করেন সে ব্যাপারেও তেমন কিছু বলেননি তিনি।
বরং লন্ডনের বিভিন্ন খ্যাতনামা রেস্টুরেন্টে খাওয়া শেষে শেফদের সঙ্গে তার হাস্যোজ্জ্বল ছবি সামাজিক মাধ্যমে দেখা গেছে। পাশাপাশি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায় তিনি খেলায় মেতে উঠেছেন। খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে তার এই ‘দৃশ্যমান নিষ্ক্রিয়তা’ এবং দলের অঙ্গসংগঠনগুলোকে নিয়ে ব্রিটেনে বসবাসরত দলটির কর্মী-সমর্থকদের অনেককেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা গেছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের খাওয়া-দাওয়া ও সাধারণ সামাজিক অনুষ্ঠানে আনন্দ উল্লাসের ঘটনায় নেতাকর্মীদের অনেকে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
যদিও এইসব নেতা এর আগেও তার কার্যক্রমে অসন্তুষ্ট ছিলেন। সম্প্রতি তার স্কাইপিরে উগ্র আচরণে কারণে অনেকেই দল ছেড়ে যাই যাই করছেন।
অপরদিকে ব্রিটেনের মূলধারার কোনও গণমাধ্যমেও খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গ কিংবা রাজনীতিবিদ হিসেবে তারেক রহমানের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। এতে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের এবং দূরত্ব বাড়ছে তারেকের সাথে। ঘনিষ্ঠজন ও নেতাদের সঙ্গে রুটিন সাক্ষাৎ, বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে খাবারের স্বাদ নেওয়া, ঘনিষ্ঠজনদের বিয়ে-জন্মদিন আর বছরে যুক্তরাজ্য বিএনপির তিন-চারটি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া ছাড়া কোনও ধরণের রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হতে দেখা যায়নি তাকে। খালেদা জিয়ার কারামুক্তির জন্য প্রবাসে জনমত গঠনেও তার সক্রিয়তা দেখা যায়নি।
প্রসঙ্গত তারেক রহমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। তার দায়িত্বকালে প্রায় দুই বছরে যুক্তরাজ্য বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সামনে বিক্ষোভ, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও এসব কর্মসূচিতে দেখা যায়নি তারেককে। শুধুমাত্র মাঝে মাঝে স্কিইপের মাধ্যমে কিছু ভিডিও বার্তাই দিয়েছেন তিনি।
দলের অনেকেই মনে করেন, দেশে ফিরে নিজের মাকে এমনকি গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আন্দোলন করার মত দুঃসাহস তার নেই।