নিউজ ডেস্ক:
যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন এবং মন্ত্রীর দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর হাতে, সেসব মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীদের ক্ষমতা একধাপ বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটিতে কোনো প্রস্তাব পাঠাতে গেলে সংশ্লিষ্ট প্রতিমন্ত্রীদের এখন আর প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিতে হবে না। প্রতিমন্ত্রীরা সরাসরি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রস্তাব পাঠাতে পারবেন। এমন প্রতিমন্ত্রীর সংখ্যা ১৩ জন।
বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রধানমন্ত্রীর কাজের চাপ কমাতে রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘যে সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগে প্রতিমন্ত্রী নিয়োজিত আছেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ওই মন্ত্রণালয়/বিভাগের মন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন সেসব মন্ত্রণালয়/বিভাগের সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত এবং অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত প্রস্তাব সরাসরি প্রতিমন্ত্রীর অনুমোদনে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উপস্থাপনের ক্ষমতা নির্দেশক্রমে অর্পণ করা হলো।’
প্রসঙ্গত, বর্তমান মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী আছেন ২০ জন। এর মধ্যে ১৩ জন প্রতিমন্ত্রী এমন সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্বে আছেন যেগুলোতে মন্ত্রীর দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর হাতে।
এগুলো হলো-বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও পূর্ত মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়।
রুলস অব বিজনেসের ৩(৪) ধারা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী এক বা একাধিক মন্ত্রণালয় বিভাগের দায়িত্বে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীকে দায়িত্ব দিতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেও এক বা একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকতে পারেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানায়, ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেসব বিষয় চূড়ান্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিতে হয়। প্রতিমন্ত্রীদের প্রস্তাবগুলো উল্লিখিত কমিটিতে পাঠানোর আগে প্রধামন্ত্রীর কাছে পাঠানোর কারণে একই বিষয় দুবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে যায়। এর ফলে প্রধানমন্ত্রীর কাজের চাপ অযথা বেড়ে যায়।
অপর একটি সূত্রের মতে, এক দশক আগেও উল্লিখিত কমিটিগুলোতে কাজের চাপ কিছুটা কম ছিল। তবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিধি এখন কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। এ কারণে ক্রয় ও অর্থনৈতিক কমিটিতে এখন প্রচুর প্রস্তাব আসে। তাই একই বিষয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একাধিকবার যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
এ কারণেই নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে এক দিকে প্রধানমন্ত্রীর কাজের চাপ যেমন কমবে, তেমনি মন্ত্রণালয়গুলোর কাজের গতিও বাড়বে।
রুলস অব বিজনেসের ৪(৩) ধারা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী চাইলে সময়ে সময়ে আদেশ দিয়ে প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের ওপর নির্দিষ্ট দায়িত্ব অর্পণ করতে পারেন। তবে মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরাও প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের দায়িত্ব ভাগ করে দিতে পারেন। মন্ত্রীরা এই সিদ্ধান্ত নিতে গেলে অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিতে হয়।