নিউজ ডেস্ক:
বিএনপি ক্ষমতা দখলকারীদের হাতে প্রতিষ্ঠিত পার্টি মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের দিকে তাদের দৃষ্টি থাকে না। ক্ষমতার লোভটাই তাদের বড়। মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, বাংলা ভাই সৃষ্টি- এগুলোই তাদের কাজ ছিল। তারা দেশের মানুষের কল্যাণে কিছু করেনি।
বুধবার ১টি ব্রডগেজ ও ১টি মিটারগেজ কোচ সংবলিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর এবং ৩০টি মিটারগেজ ও ১৬টি ব্রডগেজ লোকমোটিভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন, প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
এ সরকার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাঝে মাঝে বিপত্তি আসে, এটা দুঃখজনক। যখন আমরা নতুন কোচ-লোকমোটিভ কিনলাম, তখন বিএনপি শুরু করল অগ্নি সন্ত্রাস। সব থেকে দুঃখজনক, নতুন রেলগুলো যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে সেই রেলে আগুন দেওয়া হলো।
বহু রেল লাইন, রেল কোচ, রেল ইঞ্জিন বিএনপি পুড়িয়ে দিয়েছিল। এটা নাকি তাদের আন্দোলন। আমি জানি না, মানুষকে পুড়িয়ে বা চলন্ত বাস-গাড়ি অথবা রেলে-লঞ্চে আগুন দিয়ে এটা কোন ধরনের আন্দোলন। এটা তো এক ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড।
রেলে লোকবলের অভাব আছে উলেস্নখ করে শেখ হাসিনা বলেন, লোকবল বাড়াতে হবে। সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি, এটা দ্রম্নত কার্যকর করা উচিত।
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর’ করার জন্য রেল মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন,
জাতির পিতার যে অবদান বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বা বাঙালি জাতির জন্য সেটা আমাদের দেশের মানুষ আরও ভালোভাবে জানতে পারবে। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর বাংলাদেশের ইতিহাস থেকেই জাতির পিতার নামটা সম্পূর্ণ মুছে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু ইতিহাসকে কেউ মুছে ফেলতে পারে না এবং সেটাই আজ প্রমাণিত সত্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ যে নতুন লোকমোটিভ চালু হতে যাচ্ছে, এর মাধ্যমে দেশের মানুষ আরও ভালোভাবে-সহজভাবে ঈদের উৎসবে যোগ দিতে পারবে। নিজের আপন ঘরে ফিরতে পারবে।
রেলও আজ লাভবান প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে লোকবল আরও ভালোভাবে দিতে পারলে, লাইনগুলো সম্প্রসারিত করতে পারলে এবং নতুন নতুন যে লাইন করছি সেগুলো চালু হয়ে গেলে আমি মনে করি রেল আরও লাভবান হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের অনেকগুলো রুটে নতুন করে ট্রেন চালু হয়েছে; আমরা বিভিন্ন রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন আবার চালু করতে পেরেছি। বাংলাদেশের অনেক অঞ্চল এখনও রেল লাইন দেখেনি। সেসব এলাকায় রেললাইন স্থাপনের জন্য ইতোমধ্যে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের নদী-নালা, খাল-বিলের দেশ। আমাদের মাটি অনেক নরম। এটা বিবেচনা করে কীভাবে, কতটুকু জায়গায় আমাদের রেল লাইন করা দরকার সেগুলো আমরা বিবেচনা করেছি।’
অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, রেল এখন মানুষের আশা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তাইতো এবার ঈদে রেলকে মানুষ প্রথম বাহন হিসেবে পছন্দ করেছে।
রেলমন্ত্রী বলেন, ১০০টি পুরনো রেল কোচ সংস্কারের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা হচ্ছে ৪০টি লোকমোটিভ। যার মধ্যে ১৬টি দেশে পৌঁছেছে, বাকি ২৪টি আসার পথে রয়েছে।
তিনি বলেন, সিঙ্গেল রেললাইনের জন্য আমরা বেশি সংখ্যক রেল পরিচালনা করতে পারি না। ট্রেন যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে একটি ট্রেন আরেকটি ট্রেনকে পাসিং দিতে হয়। সিঙ্গেল লাইনের কারণে আমাদের এমন সমস্যা হচ্ছে।
বিগত সময়ে রেলকে একটি অকেজো সংস্থায় পরিণত করা হয়েছিল উলেস্নখ করে রেলমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার রেলকে উন্নত করার জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছে। সে অনুযায়ী কাজ চলমান আছে।