রবিবার , নভেম্বর ১৭ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / ক্যানসার নিয়ে গবেষণায় প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ

ক্যানসার নিয়ে গবেষণায় প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ


নিউজ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিকিৎসা বিজ্ঞান বিশেষ করে ক্যানসারের ওপর আরও বেশি গবেষণায় গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেছেন, ‘দেশের পরিবেশ এবং জলবায়ুর সঙ্গে ক্যানসার কিভাবে বিস্তার লাভ করে সেজন্য গবেষণা দরকার। আমাদের দেশে গবেষণার সুযোগ খুবই কম। বিশেষ করে চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা খুব বেশি একটা হচ্ছে না। যা হওয়া একান্তভাবে প্রয়োজন।’

ক্যানসার এমন একটা রোগ এবং যেভাবে এর প্রকোপ বাড়ছে সেভাবে ডায়াগনোসিস হচ্ছে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের চিকিৎসকরাও গবেষণায় খুব একটা সময় ব্যয় করেন না। তারা রোগী দেখেই সময় কাটান। যাদের রিসার্চ করার কথা সেসব চিকিৎসক রোগী দেখতে এত ব্যস্ত কাজেই হাতেগোনা খুব কমজনেরই পাবলিকেশন্স এবং রিসার্চ দেখি। 

শেখ হাসিনা বলেন, এক সময় করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলেও এখন আর কোনো সমস্যা নেই। সবাই আগ্রহ নিয়ে টিকা কেন্দ্রে আসছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমরা বলে দিয়েছি যারা ৪০ বছরের উপরে তারা টিকা পাবেন।

আইডি কার্ড সঙ্গে নিয়ে গেলে তারা ফর্ম পাবেন এবং রেজিস্ট্রেশনও করতে পারবেন। তিনি বলেন, গতকালও প্রায় ১ লাখ ৯৪ হাজার মানুষ টিকা নিয়েছেন। আমরা ৩ কোটি টিকা কিনে রেখেছি। একেবারে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের সবাইকে আমরা টিকা দেব।

রোববার সকালে নারায়ণগঞ্জে ‘কুমুদিনী ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস অ্যান্ড ক্যানসার রিসার্চ’ সেন্টার ও হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কুমুদিনী কমপ্লেক্স নারায়ণগঞ্জে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে সঙ্গে যুক্ত হন।

সরকার প্রধান বলেন, কুমুদিনী ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস অ্যান্ড ক্যানসার রিসার্চের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে আমাদের দেশের স্বাস্থ্যখাত আরও একধাপ এগিয়ে গেল।

বেসরকারি খাত আরও উৎসাহিত হবে এবং সবাই চাইবে যেন এ ধরনের সেবামূলক কাজ করতে পারে।

এ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, দানবীর রনদা প্রসাদ সাহার নাতি এবং কুমুদিনী ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজিব প্রসাদ সাহা, পরিচালক শ্রীমতি সাহা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

স্থানীয় সংসদ সদস্য, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র, আমন্ত্রিত অতিথি এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

কুমুদিনী ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্ট এবং এর প্রতিষ্ঠাতা রনদা প্রসাদ সাহার ওপর অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রচারিত হয়।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ১৭ মে দানবীর রনদা প্রসাদ এবং তার পুত্র ভবানী প্রসাদকে নারায়ণগঞ্জের বাসভবন থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর তারা আর ফেরেনি।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শেখ হাসিনা বলেন, ৯৬ সালে সরকার গঠনের পর রিসার্চের জন্য অনেক ইনস্টিটিউট তৈরি করে দিয়েছিলাম।

এরপর ক্ষমতায় এসে সেগুলোকে আরও উন্নত করার পাশাপাশি নতুন ইনস্টিটিউট করে দিয়েছি। কারণ গবেষণা আমাদের জন্য একান্ত অপরিহার্য।

এ সেন্টারটা যখন তৈরি হবে তখন দেশের মানুষ ক্যানসার চিকিৎসার আরও ভালো সুযোগ পাবেন। কারণ দেশের সব মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) প্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সব বিভাগে অন্তত একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করার বিষয়টি সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে।

দেশের সব বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হলে সেখানে রিসার্চের সুযোগ হবে। তবে, আমি মনে করি যে, বেসরকারি খাতকে সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯৬ সাল থেকেই তার সরকার বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করেছে। শুধু তাই নয় বেসরকারি খাতে হাসপাতাল করতে যেসব যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জামাদির প্রয়োজন হয় সেগুলো ট্যাক্স ফ্রি এবং ট্যাক্স কমিয়ে দেয়া হয়েছে। শিল্প প্রতিষ্ঠায় যেমন সুযোগ দেয়া হয়ে থাকে।

তিনি বলেন, এমনকি শিশুদের জন্য ইনকিউবেটরসহ যা যা প্রয়োজন সেগুলোও আমি সম্পূর্ণ ট্যাক্স ফ্রি করে দিয়েছিলাম।

যে কারণে আমাদের দেশে অনেকগুলো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তবে, এখানে কুমুদিনী ট্রাস্ট সব সময় অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুমুদিনী ট্রাস্ট যখনই যে উদ্যোগ নিয়েছে তা অত্যন্ত সফলভাবে প্রতিষ্ঠা করেছে। সেজন্য আমি কুমুদিনী ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্টের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই এবং বিশেষ করে শ্রীমতী সাহা এবং রাজিব সাহার প্রতি।

কেননা দাদা এবং বাবার কাজগুলো তারা এখনও ধরে রেখেছেন। 

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকালেই জাতির পিতা প্রতিটি ইউনিয়নে ১০ শয্যার একটি করে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

প্রসঙ্গটি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চিকিৎসাসেবা জনগণের একদম দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়াই তার লক্ষ্য ছিল। তিনি বলেন, দেশ যখন স্বাধীনতার পর ঘুরে দাঁড়িয়ে নতুনভাবে এগিয়ে চলা শুরু করেছে তখনই ঘাতক চক্র ৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে সেই অগ্রগতির চাকাকে স্তব্ধ করে দেয়। এর মাধ্যমে একটি আদর্শকে হত্যা করা হয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস আসার পরেই ৭ দিনের মধ্যে আমরা ২ হাজার ডাক্তার, ৬ হাজার নার্স এবং টেকনিশিয়ান নিয়োগ দিয়েছি এবং ভবিষ্যতে আরও নিয়োগের পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস মোকাবিলার জন্য যা যা করা দরকার তার সরকার তা করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের এ পদক্ষেপের ফলে আজকে করোনাভাইরাস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ সময় প্রথম ভ্যাকসিনগ্রহীতা কুমুদিনী হাসপাতালের সিনিয়র নার্স বেরোনিকা ডি কস্তাকেও তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

তিনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘ভ্যাকসিন দেয়া সত্ত্বেও সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক পরতে হবে, হাত ধুতে হবে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। তাহলে আমাদের দেশ থেকে করোনার প্রাদুর্ভাব পুরোপুরি চলে যাবে। তাই সবাইকে এটা মেনে চলার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ যাতে সেবা পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই তার সরকার জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করেছে, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ নার্সিং এবং মিডওয়াইফারি কাউন্সিল আইন-২০১৬ও সরকার প্রণয়ন করেছে।

আরও দেখুন

তারেক রহমানের ইতিবাচক রাজনীতি আশার সঞ্চার করছে:দুলু

নিজস্ব প্রতিবেদক,,,,,,,বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন,গতানুগতিক রাজনীতির বাইরে তারেক …