নিউজ ডেস্ক:
অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসকদের (ডাক্তার) মধ্যে ২ হাজার একজনকে অবশেষে ক্যাডারভুক্ত করতে যাচ্ছে সরকার। এ জন্য সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি। গত ১৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত সচিব কমিটির সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এর ফলে ২০০০, ২০১০ ও ২০১১ সালে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া কয়েক হাজার চিকিৎসকের মধ্যে ২ হাজার একজন ক্যাডারভুক্ত হতে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও বৈঠকে স্বাস্থ্য খাতের ৬৭০টি নতুন পদ সৃজনের প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ২০০০, ২০১০ ও ২০১১ সালে অ্যাডহক ভিত্তিতে কয়েক হাজার চিকিৎসক নিয়োগ পেয়েছেন। বর্তমানে কর্মরত এসব চিকিৎসক ক্যাডারভুক্ত না হওয়ার কারণে তারা সবাই এখন পর্যন্ত প্রারম্ভিক স্কেলে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। এই দীর্ঘ সময়েও তারা কোনো ধরনের পদোন্নতি পাননি। অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা চাকরির ক্ষেত্রে সিনিয়র হওয়ায় বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত জুনিয়র চিকিৎসকরা পদোন্নতি পাওয়ায় তারা হতাশাগ্রস্ত হচ্ছেন, ফলে চাকরিতে দায়িত্ব পালনে অনীহা বিরাজ করছে। তারা একই
পদে কর্মরত থাকায় আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এমতাবস্থায় অ্যাডহকে নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসকদের মধ্যে ২ হাজার একজনের চাকরি সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়মিত করা হয়েছে। এদের বেশির ভাগই এফসিপিএস, এমডি, এমএস, পিএইচডিসহ উচ্চতর ডিগ্রি নিয়েছেন। সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালে চিকিৎসা শিক্ষা এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে তারা স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছেন। এই জটিলতা কাটাতে অ্যাডহকে নিয়োগ পাওয়া ২ হাজার একজন চিকিৎসককে ক্যাডারভুক্তির জন্য সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা সংশোধনের প্রস্তাব করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। পরে গত ২ জুন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগবিধি পরীক্ষণ সংক্রান্ত উপকমিটি প্রস্তাবটি প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে উপস্থাপনের সুপারিশ করে। গত ১৬ আগস্ট মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। পাশাপাশি এ বিষয়ে বিদ্যমান নিয়ম-কানুন ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা প্রতিপালনের নির্দেশ দেয় সচিব কমিটি।
এ ছাড়া বৈঠকে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৭০টি নতুন পদ সৃজনের প্রস্তাব অনুমোদন করে সচিব কমিটি। এর মধ্যে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে রাজস্ব খাতে ৫৭টি ক্যাডার পদসহ ১৪৮টি পদ রয়েছে। পাশাপাশি ভোলা জেলা সদর হাসপাতালে ৩৬টি ক্যাডার পদসহ ৯০টি, ময়মনসিংহ বিভাগের পরিচালক (স্বাস্থ্য)-এর কার্যালয়ে ৩টি ক্যাডার পদসহ ১৩টি, রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের জন্য ৫টি ক্যাডার পদসহ ১৭৯টি নতুন পদ সৃজনের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এ ছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জন্য ৩৩টি ক্যাডার পদসহ ৭৫টি এবং সাতক্ষীরা মেডিকেল হাসপাতালের জন্য স্থায়ীভাবে ৪১টি ক্যাডার পদসহ ১৬৫টি নতুন পদ সৃষ্টির প্রস্তাব অনুমোদন দেয় প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি।