নিউজ ডেস্কঃ
কোভিড-১৯ এর আক্রমণে বিশ্ব এক মহাদুর্যোগে পথে। এটাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সবচেয়ে বিস্তৃত ও ভয়ংকর সংকট বলা হচ্ছে। কোভিড-১৯ দ্বারা সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারীর বিরুদ্ধে রণকৌশল ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সেটা হলো-পরীক্ষা, পরীক্ষা এবং পরীক্ষা। অর্থাৎ কোভিড-১৯ হতে পারে এমন লোকজনকে যতো বেশি পরীক্ষার আওতায় আনা যাবে ততো বেশি রোগি শনাক্ত করা যাবে। অর্থাৎ জাল যতো বেশি জায়গা জুড়ে বড় করে ফেলা যাবে ততো বেশি মাছ ধরা পড়বে।
কোভিড-১৯ এর রোগী শনাক্ত করার নির্ভরযোগ্য পরীক্ষাটির নাম হচ্ছে আরটি-পিসিআর। কিন্তু অসুবিধা হচ্ছে এই পরীক্ষাটি করতে সময় লাগে বেশি। একসাথে অনেক পরীক্ষা করা যায় না। এজন্য প্রশিক্ষিত দক্ষ জনশক্তি দরকার হয়। এই পরীক্ষার খরচও অনেক বেশি। এর জন্য উঁচু মানের জৈব নিরাপত্তাসমৃদ্ধ ল্যাবরেটরি প্রয়োজন। বিজ্ঞানীরা একটি স্বল্পব্যয়ী, সাধারণ ল্যাবেরটরিতে দ্রুত স্বল্প প্রশিক্ষিত টেকনোলজিস্ট দ্বারা সহজে করা যায় এমন একটা পরীক্ষার পদ্ধতি অনুসন্ধান করছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় তৈরি হয়েছে ‘ র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট’। এর মূল্য অনেক কম। এটি সাধারণ এমনকি ফিল্ড হাসপাতালেও করা যায়। পরীক্ষাটির ফলাফল কয়েক মিনিটেই জানা যায়। এতে সন্দেহজনক ব্যক্তির রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এ পরীক্ষার দ্বারা সাধারণভাবে নিশ্চিত হওয়া যায় কোনো ব্যক্তির দেহে কোভিড-১৯ প্রবেশ করেছে বা করেছিল কিনা। কারো দেহে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতির প্রমাণ পেলে তার নমুনা থেকে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করে রোগ নিশ্চিত করা হয়। এজন্য বাছাই বা স্ক্রিনিং-র জন্য র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট অত্যন্ত দরকারি। ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যে ৩৫ লাখ মানুষকে এই পরীক্ষার মাধ্যমে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া সরকার ১৫ লাখ র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট কিটের ক্রয়াদেশ দিয়েছে। আমেরিকার এফডিএ এই পরীক্ষার অনুমোদন দিয়েছে। অনেক স্টেট পরীক্ষাটি শুরু করছে।
র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্টকে বলা হচ্ছে ‘গেম চেঞ্জার’। কারণ এই পরীক্ষার দ্বারা কোভিড-১৯ মুক্ত মানুষকে সম্ভাব্য রোগী হতে আলাদা করা যায়। বাংলাদেশকেও অতি দ্রুত কোভিড-১৯ মোকাবেলায় র্যাপিড টেস্টের পথে হাঁটা উচিত।