তরুণদের উদ্ভাবনী জ্ঞান ও মেধার বিকাশে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বুধবার ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তরুণ শিক্ষার্থী ও তরুণদের মাঝে যে উদ্ভাবনী জ্ঞান, মেধা রয়েছে তা যেন বিকশিত করতে পারে তার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। স্টার্টআপ অর্থাৎ কেউ বেকার বসে থাকবে না, কিছু কাজ করতে পারবে।
“সে সুযোগ সৃষ্টির জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। বাজেটে একটা থোক বরাদ্দও এক্ষেত্রে রাখা হয়েছে।”
রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণের পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা আইটি খাতকে সব থেকে গুরুত্ব দিতে চাচ্ছি। আইটি খাতে রপ্তানি করে আমরা প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারব।”
সাইবার নিরাপত্তার গুরুত্ব তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “মোবাইল ব্যবহার করতে গেলে, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গেলে বা বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করতে গেলে দেখা যায় যে বিভিন্ন ধরনের জিনিস চলে আসে। সেগুলো ফিল্টার করার ব্যবস্থা করতে হবে।
“অনেকে কারও বিরুদ্ধে বলতে গেলে এমন একটা অ্যাপ তৈরি করে ছেড়ে দেয় ওটা দেখলে একটা মানুষের সত্যিই ক্ষতি হয়। পরে দেখা যায় ওটা সম্পূর্ণ ভুয়া। কাজেই এটাকে আরো কীভাবে নিরাপত্তা দেওয়া যেতে পারে।”
গুজবে প্রভাবিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “একটা কিছু আসলো, অমনি সেটা শুনে সেখানেই রিয়্যাক্ট করা বা সেটা শুনেই কোনো কিছু করাটা ঠিক না। সঠিক তথ্যটা যাচাই করে নেওয়া দরকার। সেটা সত্য না মিথ্যা যাচাই করতে হবে।”
সাইবার অপরাধ নিয়ে শৈশব থেকেই মানুষকে সচেতন করার উপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অনেক সময় ছেলেমেয়েরা বিপথে চলে যায়।… ক্রাইমের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ে। সেটা যেন না হতে পারে। এ ব্যাপারে সকলকে সচেতন হতে হবে।
“বাচ্চাদের হাতে মোবাইল তুলে দিচ্ছেন। কিন্তু তারা কী দেখছে, কোথায় যাচ্ছে। তার ওপর নজরদারি অবশ্যই থাকতে হবে। সেটা প্রত্যেকটা অভিভাবক, বাবা-মাকে এব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন হতে হবে।”
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার ২১ বছর পর সরকার গঠন করে বাংলাদেশকে আধুনিক প্রযুক্তির দেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান।
১৯৯৬ সালে সরকার আসার পর কম্পিউটার ব্যবহারে সবাইকে উৎসাহিত করা হলেও তেমন সাড়া না পাওয়ার কথাও জানান তিনি।
কম্পিউটার জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভূমিকা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “জয়ই আমাকে বলেছিল, ‘সমস্ত ট্যাক্স প্রত্যাহার করে দাও, সহজলভ্য হোক। মানুষ কিনবে। কথাটা বাস্তব। আমরা সেটাই করেছিলাম।”
বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানের মোবাইল ফোন কোম্পানির একচেটিয়া ব্যবসা করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যেহেতু বিএনপি সরকারের ছিল। কাজেই অন্য কোনো কোম্পানিকে দেওয়া হয়নি। এটা মনোপলি ছিল। আমরা এটা প্রাইভেট সেক্টরে উন্মুক্ত করে দিলাম। যাতে মানুষের হাতে হাতে, ঘরে ঘরে, গ্রামে গ্রামে মোবাইল ফোন পৌঁছে যায়।”
অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।