নিউজ ডেস্ক:
আসছে অর্থবছরে কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ৬৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। হাওড় অঞ্চলে কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ডাউন পেমেন্ট কমানোর বিষয়েও পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। চলছে জাতীয় কৃষি যান্ত্রিকীকরণ নীতিমালা ২০২০-কে ঢেলে সাজার কাজ।
শুক্রবার ইআরএফ মিলনায়তনে জাতীয় বাজেট ২০২১-২২ সামনে রেখে ‘কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক অর্থায়ন’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা জানান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাসানুজ্জামান কল্লোল। জাতীয় বাজেট ২০২১-২২ সামনে রেখে কৃষি খাতের গুরুত্ব, সমস্যা ও সম্ভাবনা তুলে ধরতে বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল টিচার্স সোসাইটি এ সংলাপের অয়োজন করে।
হাসানুজ্জামান কল্লোল আরও জানান, গত অর্থবছরে কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ২২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। যার পুরোটাই কৃষি মন্ত্রণালয় খরচ করেছে। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, কৃষকের সুবিধার্থে আধুনিক এক মেশিন ১০০ জন কৃষকের কাজ করে। বিশেষ করে হাওড় অঞ্চলে দিন রাত কাজ করতে বড় মেশিনগুলো দরকার হয়। কৃষক বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে কিস্তিতে এসব যন্ত্রপাতি ক্রয়ের সুবিধা পাচ্ছে বলে জানান তিনি।
সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শরমিন্দ নিলোর্মী। তিনি বলেন, আজকে যে যান্ত্রিকীকরণ হয়েছে সেটা একটি বিবর্তনের মধ্যেমে এসেছে। একজন কৃষক শুধু কৃষকই নন। তিনি কখনও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কখনও উদ্যোক্তা কিংবা কখনও চাকরিজীবী। গত ১৫ বছরে কৃষিতে নারীদের অংশগ্রহণ ১১৮ শতাংশ বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কৃষি কার্যক্রম হচ্ছে একটি সম্মিলিত প্রয়াস। এখানে কৃষিবিদের যেমন অবদান রাখতে হবে তেমন শিক্ষকদের, উদ্ভাবকদের এবং কৃষকদের অবদান রাখতে হবে।
আইসিএবি ও আইসিএমএবি এর সদস্য মোঃ আমির হোসেন বলেন, কৃষি যন্ত্র কিনতে বর্তমানে হাওড় অঞ্চলে সরকার ৭০ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছে। তারপরও বাকি অর্থের জোগান দেয়া অনেক ক্ষেত্রেই কৃষকের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। কৃষি যন্ত্র কেনায় কৃষকদের সক্ষমতা বাড়াতে ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসার কথা বলেন তিনি। এক্ষেত্রে কৃষক এবং কৃষি যন্ত্র নিবন্ধনের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, তাহলে যন্ত্র বন্ধক রেখ কৃষকরা সহজেই ঋণ নিতে পারবে। কৃষি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মোঃ সদরুল আমিন বলেন, প্রযুক্তিনির্ভর কৃষি ববস্থা গড়ে তুলতে এর চেয়ে ভাল সুযোগ আর আসবে না। দেশে বেকারত্ব কমাতে এইচএসসি পাস করে কৃষি শিক্ষা গ্রহণ করে কৃষিতে যোগ দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। তার মতে এতে প্রতি বছর এক থেকে দুই লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। সেক্ষেত্রে নিজেদের সফলতার পাশাপাশি কৃষি ক্ষেত্রেও বিপ্লব আসবে বলে জানান তিনি।
সংলাপে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল টিচার্স সোসাইটির মহাসচিব ড. মোজাহেদুল ইসলাম। কৃষিবিদ রেজাউল করিম সিদ্দিকের সঞ্চালনায় সংলাপে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক উপ-পরিচালক মোঃ হাবিবুর রহমান, প্রাইম ব্যাংকের এ্যাসিসটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (কৃষি সহায়তা বিভাগ) আসাদ বিন রশিদ প্রমুখ।