- এফবিসিসিআই-সিআইআই সম্মেলনে বক্তাদের অভিমত
অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ যৌথ উদ্যোগ ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। দু’দেশের মানুষের চাহিদা মেটাতে কৃষিপণ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য একসঙ্গে কাজ করা দরকার। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে উভয় দেশই কৃষির যান্ত্রিকীকরণ ও খাদশস্যসহ সবধরনের ফসলের মান উন্নয়নের পাশাপাশি কৃষিপণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া আরও আধুনিক করার সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। মঙ্গলবার ‘ইন্ডিয়া বাংলাদেশ ডিজিটাল কনফারেন্স অন এগ্রিকালচার সেক্টর ফলোড বাই বিটুবি সেশন’ শীর্ষক এক আলোচনায় দু’দেশের মন্ত্রী ও ব্যবসায়ী নেতারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ড্রাস্ট্রিজ (সিআইআই) যৌথভাবে এ কনফারেন্সের আয়োজন করে।
কৃষিমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, এমপি; বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি এবং ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীয়ুশ গয়াল এ কনফারেন্সের উদ্বোধনী সেশনে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন। এই সেশনে অন্যদের মধ্যে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, সিআইআইয়ের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট এবং টাটা স্টিল লিমিটেডের সিইও ও এমডি টি ভি নরেন্দ্র, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী, সিআইআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল চন্দ্রজিৎ ব্যানার্জী, সিআইআইয়ের ন্যাশনাল মিশন অন আত্মনির্ভর ভারতের চেয়ারম্যান ও মাহিন্দ্রা এ্যান্ড মাহিন্দ্রার এমডি ও সিইও ড. পবন গোয়েনকা বক্তব্য রাখেন। সেশনটিতে সমাপনী বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের ডিরেক্টর সুজীব রঞ্জন দাশ।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ভারত বীজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলে বাংলাদেশ স্বাগত জানাবে। তিনি বলেন, আমরা কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণে আরও সহযোগিতা দেখতে চাই। ভারতীয় কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্ট স্থাপন করতে পারে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত শুধু আমাদের প্রতিবেশী নয়, ভাল বন্ধুও বটে। তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। তবে বাণিজ্য ভারসাম্য এখনও ভারতের অনুকূলে। বাংলাদেশী রফতানি পণ্যের ওপর আরোপিত এন্টি ডাম্পিং শুল্কের কথা উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এসব পদক্ষেপের কারণে আমাদের রফতানি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি তা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান।
ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীয়ুশ গয়াল বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। এ অংশীদারিত্ব অন্যদের জন্য রোল মডেল। তিনি বলেন, আমি মনে করি, দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে কৃষির গেম চেঞ্জিং সম্ভাবনা রয়েছে।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, পৃথিবীতে এমন দুটি দেশ আর নেই, যারা আমাদের মতো ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, নৃতাত্ত্বিক বন্ধনে আবদ্ধ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বেসরকারী খাত প্রতিবছর ভারত থেকে কয়েক শ’ কোটি ডলার পণ্য আনে যা আরও বৃদ্ধির ভাল সম্ভাবনা রয়েছে। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য আনতে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। এটা যৌথ উদ্যোগ, শিল্প বৈচিত্র্যকরণ এবং বাজার বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে সম্ভব। আমরা বিশ্বাস করি, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে যে কোন লক্ষ্য অর্জন করতে পারি। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, কৃষি রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বিবেচনায় উভয় দেশের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। পবন গোয়েনকা বলেন, মাহিন্দ্রা এ্যান্ড মাহিন্দ্রার জন্য বাংলাদেশ তিন শীর্ষ বাজারের একটি। আমরা এই বাজারকে এক নাম্বার স্থানে উন্নীত করতে চাই। সিআইআইয়ের নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট টি ভি নরেন্দ্র বলেন, রফতানি বাড়াতে দু’দেশই যৌথভাবে প্রাচ্যের দিকে নজর দিতে পারে।