শুক্রবার , এপ্রিল ১৯ ২০২৪
নীড় পাতা / অর্থনীতি / কৃষক রক্ষায় চালু হচ্ছে শস্য বীমা

কৃষক রক্ষায় চালু হচ্ছে শস্য বীমা

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে হাওর এলাকার সাত জেলায় শস্য বীমা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি থেকে সাধারণ কৃষকদের রক্ষায় এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের থেকে প্রিমিয়াম হিসেবে নামমাত্র টাকা নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে এ কার্যক্রম চালু হবে। প্রিমিয়ামের বাকি অর্থ দেবে সরকার। পাশাপাশি বিদেশি দাতা সংস্থাকেও এ প্রকল্পে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা চলছে। আপাতত পাইলট প্রকল্প হিসেবে হাওর অঞ্চলের ৭টি জেলা- সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বীমা প্রকল্পটি চালু করা হবে।

সাধারণ বীমা সূত্র জানায়, প্রথমে সাধারণ বীমা করপোরেশন ও বেসরকারি বীমা কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে বীমা প্রকল্প চালু করা হবে। এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের তত্ত্বাবধানে নীতিনির্ধারণী কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এ বীমা কার্যক্রমের প্রিমিয়ামে সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হবে। 

জানা যায়, ১০ ধরনের সুবিধা নিয়ে শস্য বীমা প্রকল্পটি চালু করা হচ্ছে। এতে উৎপাদিত পণ্যের সরবরাহ চ্যানেল তৈরি ও স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া স্টেশন স্থাপন, স্টেশনের মাধ্যমে পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার মাত্রা নির্ণয়, কৃষকের মাঝে সচেতনতা তৈরি, কৃষিবান্ধব রেগুলেটরি নেটওয়ার্ক প্রণয়ন এবং বীমাসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে। আশার কথা, এরই মধ্যে শস্য বীমার ঝুঁকি মোকাবেলায় সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের মাধ্যমে একটি ধারণাপত্র নেয়া হয়েছে। অর্থবিভাগ ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত ধারণাপত্র পেয়েছে এবং এ সংক্রান্ত কাজ শুরু করেছে।

প্রতিবছর মৌসুমি বন্যা, আগাম বন্যা, পাহাড়ি ঢল, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি ইত্যাদি নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষককে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। ২০১৭ সালের স্বাভাবিক ও আগাম বন্যায় হাওর অঞ্চলে ৫২ লাখ ৫০ হাজার টন ফসলের ক্ষতি হয়। এতে কৃষকের ঋণ পরিশোধ সক্ষমতা হারানোসহ নানা সমস্যা, সামাজিক অস্থিরতা দেখা দেয়। তা ছাড়া চালের বাজারে দেখা দেয় অস্থিরতা। এ বছর তো ধানের দাম না পেয়ে আর চাষাবাদ না করার হুমকি, পেশা বদল, ভিন্ন পেশা গ্রহণের মতো বিষয় সামনে নিয়ে আসেন তারা। এ অবস্থায় বীমার মাধ্যমে কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার মাধ্যমে কেবল কৃষকের সমৃদ্ধি নয়, আমাদের খাদ্য নিরাপত্তায় ভূমিকা নিশ্চিত করার বিষয়টি চলে আসবে। ফলে এ উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে।

সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা হাওরবেষ্টিত। এই সাত জেলার মোট কৃষি জমির পরিমাণ ১৯ লাখ ৩৭ হাজার হেক্টর। হাওরের সংখ্যা ৩৭৩। এ অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে বোরো ধান উৎপাদিত হয়, মোট কৃষি জমির ৯০ ভাগ এলাকায় বোরো চাষ হয়। এছাড়া আউশ ও আমন ধান হয়ে থাকে। তবে প্রায় প্রতি বছর বন্যার কারণে হাওর এলাকায় কৃষকদের জানমাল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ফলে কৃষকরা বিশেষ করে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষক পরিবারগুলো আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। পরের বছর কৃষকরা স্বাভাবিক উৎপাদন বজায় রাখতে পারেন না। এতে সামগ্রিক উৎপাদন ব্যাহত হয়ে জাতীয় অর্থনীতি চাপে পড়ে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলা এবং কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শস্য বীমা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

আরও দেখুন

বান্দরবানে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার

নিউজ ডেস্ক: বান্দরবানে হামলা ও ব্যাংক লুটকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে বলে হুঁশিয়ারি …