নিজস্ব প্রতিবেদক, রাণীনগর:
মরদেহ দাফন হবে। কাফনের কাপড় পড়িয়ে প্রস্তুুত করা হয়েছে। দাফনের সময়ও নির্ধারণ করে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করেই রাতে পুলিশ এসে পৌছে যায়। এর পর আর মরদেহ দাফন হয়নি। কিভাবে মারা গেল স্বপনা বিবি,এনিয়ে চলতে থাকে নানান রকম জল্পনা-কল্পনা। ঘটনাটি নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার একডালা ইউনিয়নের নগর পাঁচুপুর সিকদার পাড়া গ্রামে। স্বপনা বিবি (৪২) ওই গ্রামের গার্মেন্টস শ্রমীক মমতাজ উদ্দীনের স্ত্রী।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, স্বপনার স্বামী মমতাজ উদ্দীন দীর্ঘ দিন ধরে ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে শ্রমীক হিসেবে কর্মরত আছেন। তার দুই মেয়ে। মেয়েদের কে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। স্বপনাও স্বামীর সাথে ঢাকায় থাকতো। কিন্তু প্রায় এক বছর হলো বাড়ীতে একাই থাকেন। সোমবার দুপুর অনুমানিক আড়াইটা নাগাদ হঠাৎ করেই গ্রামের লোকজন জানতে পারেন স্বপনা বিবি মারা গেছেন। নানান রকম রোগ ব্যধি থাকার কারণে কেউ জানতেও পারেনি কিভাবে মারা গেলেন তিনি। বিকেলে মরদেহ ধৌত করে কাফন পড়িয়ে দাফনের জন্য প্রস্তুুত করে রাখা হয়। স্বপনার আত্মীয় স্বজনসহ সবাইকে খবর দেয়া হয় স্বপনা মারা গেছেন। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় দাফন করা হবে। খবর পেয়ে স্বামী মমতাজ রাতেই ঢাকা থেকে বাড়ীতে চলে আসেন।
কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকেই নানা রকম কাঁনা-ঘোষা শুরু হয় স্বপনার মৃত্যু নিয়ে। চলতে থাকে নানা রকম জ্বল্পনা-কল্পনা। এরই মধ্যে রাত অনুমান ১০টা নাগাদ পুলিশ আসলে সবাই চমকে যায়। পরে সবাই জানতে পারেন স্বপনার গলায় রশির দাগ রয়েছে। কিন্তু তখনও কেউ জানেনা স্বপনা আত্মহত্যা করেছেন নাকি তার মৃত্যুটা অন্যভাবে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার সকালে স্বপনার স্বামী মমতাজ রাণীনগর থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করেন। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে সদর সার্কেল রাকিবুল হাসান ও রাণীনগর থানার ওসি শাহিন আকন্দসহ পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
স্বপনার বড় মেয়ে কাকলি আক্তার বলেন, তিনি মাকে দেখতে শনিবার দিন বেড়াতে এসেছেন। সোমবার দুপুরে গোসল করার পর দেখতে পান সদ্য নির্মিত ইটের ঘরের তীরের সাথে গলায় রশি দিয়ে ঝুলে আছেন। সাথে সাথে মরদেহ নামিয়েছেন। কিন্তু রশি দিয়ে ঝুলে থাকার কথা কাউকে বলেননি। উপরন্ত ব্যরাম (জীন-পরির আচঁর) থাকার কারণে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
স্বপনার স্বামী মমতাজ বলেন, সোমবার বিকেল তিনটা নাগাদ মোবাইল ফোনে স্বপনার মৃত্যুর খবর পেয়ে রাতেই ঢাকা থেকে বাড়ীতে এসেছি। কিন্তু গলায় দড়ি দিয়ে আমার স্ত্র্রী আত্মহত্যা করেছে এমনটা কেউ বলেনি। পরে পুলিশ আসলে জানতে পারি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
স্বপনার ছোট ভাই সাদেকুল ইসলাম লিটন বলেন, বোনের মৃত্যুর খবর পেয়ে রাতেই চলে এসেছি। কিন্তু কোনভাবেই জানতে পারিনি বোনের অ-স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। রাতে পুলিশ আসলে জানতে পারি স্বপনার মৃত্যুটা স্বাভাবিক ছিলনা।
প্রতিবেশি রওশন আরা বলেন, স্বপনা ডায়াবেটিকসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিল। আমরা জানি রোগের কারণে স্বপনার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু রাতে কানা-ঘোষার পর পুলিশ আসলে জানতে পারি তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি।
রাণীনগর থানার ওসি শাহিন আকন্দ বলেন, অ-স্বাভাবিক মৃত্যুটাকে আড়াল করে মরদেহ দাফনের চেষ্টা করেছিল। এ ঘটনায় স্বপনার স্বামী একটি ইউডি মামলা দায়ের করেছেন। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরও দেখুন
রাণীনগরে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে মারপিট করে ১৫ভরি স্বর্ণের ও
১০০ভরি চান্দির গহনা ছিনতাই নিজস্ব প্রতিবেদক রাণীনগর,,,,,,,,,, নওগাঁর রাণীনগরে দোকান থেকে বাড়ী ফেরার পথে পথ …