নিউজ ডেস্কঃ
নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে নগরে কর্মহীনদের যে বিশাল অংশ গ্রামে ফিরে গেছে, তাদের গ্রামে ধরে রাখতে এ উদ্যোগটি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
বৃহস্পতিবার রাতে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) প্রতিষ্ঠান ইয়াং বাংলার ‘লেটস টক অন পোস্ট কোভিড-১৯ ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক এক অনলাইন আলোচনায় যোগ দিয়ে তিনি একথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী রাসেল বলেন, “কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে দেখলাম অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে যাবে বা মানুষ গ্রামে চলে যেতে পারে।
“আমরাও ভাবছি, এই শ্রেণির মানুষগুলোকে গ্রামে কীভাবে রেখে দেওয়া যায়। তারা যেন আর শহরমুখী না হয়, সেজন্য আমরা ‘আত্মকর্মংস্থান সৃষ্টি ও দরিদ্র হ্রাসকরণ প্রকল্প’ নিয়েছি।”
তিনি জানান, ৭ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পের মাধ্যমে ১২ লাখ যুবককে ‘আত্মকর্মী’ হিসেবে তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
প্রতিমন্ত্রী জানান, কৃষি, মৎস্য খাতকে এ প্রকল্পে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে।
“তারা যেন হতাশ না হয়ে যান, নিজেরাই কর্মসংস্থান তৈরি করে অন্যদের চাকরির সুযোগ দিতে পারেন,” প্রকল্পের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন তিনি।
রাসেল জানান, প্রকল্পটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। প্রকল্পটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক বৈঠকে কিছু সুপারিশ এসেছে। এছাড়া তরুণরাও নিজেদের মতামত জানিয়েছেন।
“কৃষি, পোল্ট্রি, ডেইরি, মৎস্য ইত্যাদি থেকে শুরু করে আইসিটি রিলেটেড বিষয় থাকবে এ প্রকল্পে। এছাড়াও ওই এলাকার তরুণরা কী চায়, তাদের আসলে কী প্রয়োজন, সেটাকেও আমরা এখানে গুরুত্ব দিয়েছি। তাদের মতামতের ভিত্তিতে দাঁড় করাব এ প্রকল্প।”
জাহিদ আহসান রাসেল
মুজিববর্ষ উপলক্ষে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, কর্মসংস্থান ব্যাংক এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সমন্বিত প্রয়াসে এ বছর ১ লাখ, পরের বছর আরও ১ লাখ তরুণের কর্মসংস্থান নিশ্চিতে যে কার্যক্রম শুরু করেছিল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, সেটিও চলমান রয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী রাসেল।
বঙ্গবন্ধু যুব উন্নয়ন ঋণ-কার্যক্রমের আওতায় তরুণ উদ্যোক্তারা যেন ২০ হাজার টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত সহজ শর্তে ঋণ পান, তার ব্যবস্থাও করেছে এ মন্ত্রণালয়।
অনেক তরুণ উদ্যোক্তা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারছে না জেনে আগামী জুন মাসে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ‘যুব ব্র্যান্ডিং’র কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী রাসেল বলেন, “আমাদের অনেক উদ্যোক্তা, উৎপাদিত পণ্য কোথাও বিক্রি করতে পারে না। সরকারিভাকেব একটা ব্র্যান্ড… একটা নাম দিয়ে আমরা বিভাগভিত্তিক পাইলট প্রকল্প শুরু করব। যাতে ব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে তরুণরা তাদের উৎপাদিত পণ্যগুলো বিক্রি করার সুযোগ পায়। এটা আগামী মাসের মধ্যে নিতে যাচ্ছি।”
বৃহস্পতিবার যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী যুব উদ্যোক্তাদের অনলাইন মার্কেটিং ওয়েবসাইট ‘যুব পাইকারি সেল ডটকম’ উদ্বোধন কছেন।
যুব পাইকারি সেল ডটকমকে যুব উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যের সঠিক মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত এবং বাণিজ্যের দুর্ভোগ কমানোর একটি প্লাটফর্ম হিসেবে দাঁড় করাতে চায় মন্ত্রণালয়।
এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করে যুব উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ফলমূল শাক-সবজি বিভিন্ন জেলায় ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করবেন।
প্রাথমিক পর্যায়ে আম ও লিচু দিয়ে এ সামাজিক ব্যবসাটি শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে।
রাসেল জানান, আগামী বছর ১০০টি উপজেলায় নতুন করে যুব উন্নয়ন ও বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণেলর পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের।