নিজস্ব প্রতিবেদক:
- করোনার শুরুতে বেকার বাড়লেও এখন কমে আসছে
- প্রণোদনায় ঋণপ্রবাহ বেড়েছে বেসরকারী খাতে সচল হচ্ছে বড়-মাঝারি ও ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান এবং কলকারখানার চাকা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সব শূন্যপদ দ্রুত পূরণের উদ্যোগ
করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকার ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। এই প্রণোদনার অর্ধেকের বেশি অর্থ ঋণ হিসেবে ইতোমধ্যেই পেয়েছেন ছোট-বড় বিভিন্ন খাতের উদ্যোক্তারা। এতে বেসরকারী খাতে ঋণপ্রবাহের গতি বাড়ছে। একই সঙ্গে কল-কারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট চালু হওয়ার মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকা- পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। ফলে কর্মসংস্থানও বেড়েছে। করোনার শুরুতে বেকার বাড়লেও এখন তা কমে আসছে। করোনার শুরুতে যারা চাকরি হারিয়েছেন, তারা কাজে ফিরেছেন। পরিসংখ্যান বলছে, জুলাই মাসে বেকারের হার দশ গুণ বেড়ে ২২ শতাংশ হলেও সর্বশেষ সেপ্টেম্বরের শেষে এই হার চার শতাংশে নেমেছে। তবে ডাক্তার, নার্সসহ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের নিয়োগ ছাড়া গত ৬ মাসে অন্য সব সরকারী পদে নিয়োগ প্রায় বন্ধ ছিল। এতে শিক্ষিত তরুণ চাকরিপ্রত্যাশীদের সংখ্যা বাড়ছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সব শূন্যপদ দ্রুত পূরণের উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এছাড়া বিদেশ থেকে ফিরে আসা যুবক ও অন্য বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানে ঋণ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকার গত ২৬ মার্চ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কলকারখানা বন্ধ এবং মানুষ ঘরবন্দী থাকায় অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক দুর্বল হয়ে পড়ে। কিন্তু ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষ হওয়ার পর অর্থনীতির চাকা আবার সচল হতে শুরু করে। ব্যবসায়ীরা যেমন শিল্পকারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করার আস্থা ফিরে পেয়েছেন তেমনি সাধারণ মানুষ জীবিকার প্রয়োজনে যুক্ত হচ্ছেন কাজে। একইসঙ্গে পুরো করোনাকালে সচল থাকা কৃষি খাতে আরও প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সাহসী সিদ্ধান্তে কলকারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ায় অর্থনীতির কালো মেঘ কেটে যাচ্ছে। কয়েক দফায় ২১ প্যাকেজের মাধ্যমে ১ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেই যোগান দেয়া হচ্ছে ৭৮ হাজার কোটি টাকা। ইতোমধ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর টাকার প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা। এতে বাজারে নগদ অর্থের সরবরাহ সচল রেখে অর্থনীতি ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
সম্প্রতি পাওয়ার এ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গবর্ন্যান্স এ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) এক জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে বর্তমানে ৯০ লাখ প্রাতিষ্ঠানিক চাকরি রয়েছে। এর মধ্যে গার্মেন্টস থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিল্পকারখানাও রয়েছে। করোনার প্রভাবে অনেক শ্রমিক ছাঁটাইয়ের কথা বলা হলেও বিশেষ ব্যবস্থায় তাদের চাকরি রয়ে যায়। কিন্তু চাকরি থাকলেও বেতনসহ অন্যান্য সুবিধা কমেছে প্রায় ১০ লাখ কর্মচারীর। এতে আরও বলা হয়, দেশের ৩৫টি খাতের মধ্যে ৭টি খাতে বেশি কাজ হারিয়েছেন তরুণরা। খুচরা ব্যবসা, হোটেল-রেস্তরাঁ, অভ্যন্তরীণ পরিবহন, বস্ত্র, নির্মাণ খাতে কাজ হারানো তরুণের সংখ্যা বেশি। তবে বর্তমানে এ খাতগুলোতে কর্মসংস্থান বেড়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ‘কোভিড-১৯ বাংলাদেশ: জীবিকার ওপর ধারণা জরিপ ২০২০’ শীর্ষক যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, জুলাই মাসে বেকারের হার দশ গুণ বেড়ে ২২ শতাংশ হলেও সেপ্টেম্বরের শেষে এই হার চার শতাংশে নেমেছে। জরিপে বলা হয়েছে, করোনার শুরুতে বেকারের সংখ্যা ১০ গুণ বাড়লেও এখন তা কমতে শুরু করেছে। মার্চে বেকারত্বের হার ছিল ২ দশমিক ৩ শতাংশ। জুলাই মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২২ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এরপর থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। সেপ্টেম্বরের শেষে এই হার ৪ শতাংশে নেমে এসেছে। জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, মহামারীতে ৬৮ দশমিক ৩৯ ভাগ মানুষ কোন না কোনভাবে আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল। ওই সময়ে ২১ দশমিক ৩৩ শতাংশ পরিবার সহায়তা বা ত্রাণ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ৯৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ সরকারী সহায়তা নিয়েছে। যেসব পরিবার এসব সহায়তা নিয়েছে, মার্চ মাস পর্যন্ত তাদের গড় আয় ছিল ২০ হাজার টাকা বা তারও কম। অর্থাৎ নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো এই সহায়তা নিয়েছে।
জরিপে আরও বলা হয়, গত মার্চ পর্যন্ত ১০ দশমিক ২৩ শতাংশ কৃষিজীবী ছিলেন। এপ্রিল-জুলাই পর্যন্ত তা ৯ দশমিক ২২ শতাংশে নেমে এলেও সেপ্টেম্বর মাসে তা আবারও ১০ দশমিক ১৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ কৃষিজীবীর সংখ্যা প্রায় স্থিতিশীল ছিল। গত মার্চ পর্যন্ত ব্যবসায়ীর সংখ্যা ছিল ১৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এপ্রিল থেকে জুলাই মাস সময়ে তা নেমে আসে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশে। তবে সেপ্টেম্বরে তা পুনরায় বেড়ে ১৬ দশমিক ৫১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। একইভাবে মার্চ মাস পর্যন্ত দেশে দিনমজুরের সংখ্যা ছিল ৮ দশমিক ২১ শতাংশ। এপ্রিল জুলাই সময়ে তা নেমে আসে ৪ দশমিক ১৫ শতাংশে। তবে সেপ্টেম্বর তা আবারও ৭ দশমিক ৫০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। জরিপের বিস্তারিত জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দেশের শ্রমবাজার প্রায় আগের জায়গায় ফিরে এসেছে। কোভিড-১৯ মহামারীর অভিঘাত ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে টেনে তুলতে এসএমইর দিকে নজর দিতে হবে। লকডাউনে লাখ লাখ মানুষ কাজ হারিয়েছিলেন। ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। এখন যাদের একেবারেই কোন সুযোগ নেই, তাদের জন্য সুযোগ করে দিতে হবে। দারিদ্র্য নিরসনে সরকারকে বড় বড় ব্যবসায়ীর পাশাপাশি এই ছোট ব্যবসায়ীদের পাশেও দাঁড়াতে হবে।
নগরীতে ফিরছেন কাজ হারানো মানুষজন ॥ আকবর হোসেন। তৃতীয়পক্ষের একটি কোম্পানির (থার্ড পার্টি) কর্মী হিসেবে বেসরকারী ব্যাংকে কাজ করতেন। করোনা সংক্রমণ শুরুর পর এপ্রিল থেকে থার্ড পার্টির মাধ্যমে কাজ প্রায় বন্ধ করে দেয় ব্যাংকটি। দুই মাস গ্রামের থাকার পর শহরে ফিরেছেন। জুলাই মাসে যোগ দিয়েছেন অন্য একটি কোম্পানিতে। আকবরের মতো অনেক চাকরিজীবী এখন আবার শহরে ফিরেছেন। পরিসংখ্যান বলছে, অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে দেশের ৫৪ লাখ ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানে প্রায় দেড় কোটি শ্রমিক কাজ করছেন। এছাড়া ভাসমান ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তা রয়েছেন প্রায় ৬০ লাখ। লকডাউনের কারণে তাদের প্রথাগত ব্যবসার কোনটি হয়নি। ওই সময় অনেকেই মাস্ক, পিপিইসহ অন্যান্য সরঞ্জামের ব্যবসা করেছেন। লকডাউনের পর আবার ফিরেছেন পুরনো ব্যবসায়। এছাড়া দেশে করোনার প্রকোপের শুরুতে যাদের অনেকেই হোটেল, রেস্তরাঁ, শপিংমল, বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার, আবাসন ব্যবসা, ব্যাংক ও বীমার থার্ড, পরিবহন খাতে মোটামুটি স্থায়ীভাবে চাকরিতে ছিলেন তাদের অধিকাংশই নগরীতে ফিরে কাজে যোগ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দীন বলেন, দেশে ফুটপাথে ব্যবসা করে কিংবা অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর সংখ্যা ৬০ লাখ। যাদের কোন লাইসেন্স নেই, ব্যাংকে লেনদেন নেই। কম পুঁজি দিয়ে দিনে ইনকাম দিনে শেষ- এমন ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি বিপদে ছিলেন লকডাউনে। অনেকে পুঁজি ভেঙ্গে খেয়েছেন। এখনও সবাই ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। তাই সবার আগে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মাঝে প্রণোদনা ঋণ সঠিকভাবে বিতরণ করতে হবে।
নতুন চাকরিপ্রত্যাশী তরুণদের সামনে চ্যালেঞ্জ ॥ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উৎসাহব্যঞ্জক হলেও করোনা পরিস্থিতিতে চাকরির বাজারে নতুন আসা তরুণদের সামনে বড় এক চ্যালেঞ্জ এসে হাজির হয়েছে। সামনে কখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, কখন চাকরির বাজার আগের অবস্থায় ফেরে, এ অপেক্ষায় লাখো শিক্ষিত চাকরিপ্রার্থী। গত আগস্টে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনায় বিশ্বে প্রতি ছয়জনে একজন বেকার হলেও বাংলাদেশে এই হার প্রতি চারজনে একজন (২৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ)। গত ফেব্রুয়ারি থেকে এই বেকারত্ব বাড়ছেই। করোনা সংক্রমণের আগে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে বেকারত্ব প্রতি ১০০ জনে ১২ জন থাকলেও এখন তা বেড়ে প্রায় ২৫ জন হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, করোনা সঙ্কটের ছয় মাসে বাংলাদেশে প্রায় ১৭ লাখ বা ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ তরুণ-তরুণী বেকার হয়েছেন। ২০১৯ সালে এই হার ছিল ১১ দশমিক ৯ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, দেশে প্রতিবছর গড়ে ১৮ লাখ তরুণ শ্রমবাজারে আসেন। এর মধ্যে ৭ লাখ বিদেশে চলে যান। বাকিদের দেশেই কর্মসংস্থান হয়।
ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম, জগন্নাথ ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা জনকণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে জানান, কর্মবাজারে প্রবেশ করা তাদের জন্য চ্যালেঞ্জের। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে থাকায় মানসিক চাপ বাড়ছে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অর্ক মাহবুব বলেন, ‘সরকারী চাকরির চেষ্টা যারা করছেন, তাদের লড়াইটা একটু বেশি। পরিবার থেকে টাকা নিতে পারে না, টিউশনি করে চলতে হয়। তাও একভাবে জীবন চলে যায়। কিন্তু করোনায় সব বন্ধ। উল্টো বাড়ি ফিরে পরিবারের বোঝা হতে হচ্ছে, এটা কতটা কষ্টের বোঝানো সম্ভব নয়।’
চাকরির বাজার নিয়ে সম্প্রতি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনার প্রভাবে বাংলাদেশে চাকরির বাজারে ধস নেমেছে। গত বছরের মার্চের তুলনায় এ বছরের মার্চে চাকরির বিজ্ঞাপন কমেছে ৩৫ শতাংশ। এপ্রিলে এই হার ৮৭ শতাংশ। গত এপ্রিলে পোশাক ও শিক্ষা খাতে ৯৫, উৎপাদনমুখী শিল্পে ৯২ ও স্বাস্থ্য খাতে ৮১ শতাংশ কম চাকরির বিজ্ঞাপন দেখা গেছে। তথ্যপ্রযুক্তিকে আগামী দিনের সম্ভাবনা ধরা হলেও সেখানে চাকরির বিজ্ঞাপন কমেছে ৮২ শতাংশ। আর এনজিওতে ৬৪ শতাংশ চাকরির বিজ্ঞাপন কমেছে। শিক্ষিতদের পাশাপাশি শ্রমজীবীদের মধ্যেও বেকারত্বের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। করোনায় তৈরি পোশাক শিল্পে লাখো শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) হিসাবে এই সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম বলেন, ‘ধীরগতিতে হলেও অর্থনীতির পুনর্জাগরণ থেমে নেই। ফলে সঙ্কট অনেকটা কমে আসবে। এ জন্য বেসরকারী খাতকে শক্তিশালী করে কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা বাড়াতে হবে।’
কয়েক লাখ চাকরিপ্রার্থী অপেক্ষায় ॥ করোনার সময় ডাক্তার, নার্সসহ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের নিয়োগ ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুতগতিতে হয়েছে। কিন্তু অন্যসব নিয়োগ পরীক্ষা ছয় মাস ধরে বন্ধ। তবে অল্পসংখ্যক পদের জন্য জারি করা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলোতে সম্প্রতি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিপুলসংখ্যক পদের নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। এ পদগুলোতে নিয়োগ পেতে প্রতীক্ষায় আছেন কয়েক লাখ চাকরিপ্রার্থী। যেমন ৪১তম বিসিএস, রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন ব্যাংক, খাদ্য, সমাজসেবা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরসহ আরও কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিটি পরীক্ষায় রয়েছেন লাখ লাখ চাকরিপ্রার্থী। জানা গেছে, সরকার অনুমোদিত ১৮ লাখ পদের মধ্যে কয়েক মাস আগেও প্রায় চার লাখ পদই শূন্য ছিল। করোনা পরিস্থিতির কারণে এ সংখ্যা আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে গত মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত সরকারী চাকরির বিজ্ঞপ্তি ছিল প্রায় শূন্য পর্যায়ে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সব শূন্যপদ দ্রুত পূরণের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে প্রতিটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে সময় লাগে তা আরও কমিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে মন্ত্রণালয়ের।
বিদেশ ফেরত শ্রমিকদের কর্মসংস্থানে ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ ॥ কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য গত ৩০ জুন ১ হাজার কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ বিভাগ। কর্মসংস্থান ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক এবং পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) মাধ্যমে ঋণ বিতরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান আড়াইশ কোটি টাকা করে বিতরণ করবে। এ অর্থ বিদেশ থেকে ফিরে আসা যুবক ও অন্য বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানে ঋণ হিসেবে দেয়া হবে। এর সুদের হার হবে খুব অল্প। এর মাধ্যমে দেশের বেকারত্ব সমস্যা অনেকটাই কাটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।