নিউজ ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকায় মাস্ক ব্যবহারসহ তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম তা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আমরা যে যেখানে আছি, টিকা নিই বা না-নিই, তিনটি বিষয় মেনে চলতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা অবশ্যই যেন মাস্ক ব্যবহার করি, যথাসম্ভব যেন সতর্কতা অবলম্বন করি আর তৃতীয়টি হচ্ছে পাবলিক গ্যাদারিং যেখানে হচ্ছে সেখানে যেন লিমিটেড সংখ্যায় থাকি। নিজেরও যেন দায়িত্ববোধ থাকে বেশি সংখ্যক লোক যেখানে আছে সেখানে না যাই। যারা যাবে তারা যেন স্বাস্থ্যবিধি অনুগ্রহ করে মেনে চলি।
প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মাধ্যমে মন্ত্রিসভার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ‘সরকারি ঋণ আইন, ২০২১’-এর খসড়া নীতিগত এবং ‘বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট আইন, ২০২১’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সভায় কোভিডের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমরা একেবারে কমফোর্ট জোনে আছি এটা যেন চিন্তা করি না। অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা ভালো আছি তবে এটি নিশ্চয়তা দেয় না যে, একেবারে আমরা কমফোর্ট জোনে আছি। গত কয়েকদিন ধরে এক্সপার্টরা আলোচনা করছেন যে, আমরা যেন খুব কমফোর্ট ফিল না করি। কারণ, গত বছর খুব পিক-এ উঠেছে সামারে, এ বছর যে উঠবে-না, তার নিশ্চয়তা নেই। তিনি বলেন, আমরা যেটা মনে করেছিলাম শীতকালে পিক-এ চলে যাবে। আমাদের পিক ছিল হাই সামারে, সুতরাং মে-জুন মাস হাই সামার হবে। এক্সপার্টরা যা বলছেন, সে দিকটাও দৃষ্টি দিতে বলা হয়েছে, যেন আমরা যার যার জায়গা থেকে কেয়ারফুল থাকি। মাস্ক বাধ্যতামূলক করার জন্য প্রশাসন মাঠে নামবে কি না-এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দেখি আমরা বিষয়টা। আমরা প্রচার করছি যে, একটা ভ্যাকসিন নিলে বিজ্ঞানীরা বলছে না যে আপনি পুরোপুরি নিরাপদ, ভ্যাকসিন নিলেও মাস্ক পরতে বলা হয়েছে।
টিকা নেওয়ার প্রবণতা কমার বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে কি না-জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এটা নিয়ে দু-একদিনের মধ্যে কথা বলবে।
সংক্রমণ ঠেকাতে কোনো বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না-এ প্রশ্নে সচিব বলেন, আগামীতে অবস্থা কেমন হয় মে মাসে গিয়ে দেখা যাবে। গ্রামেগঞ্জে এ বিষয়ে মোটিভেশনাল কাজ করা হচ্ছে। লকডাউন বিষয়ে তিনি বলেন, লকডাউনের বিষয়ে ওইভাবে চিন্তা করিনি। যদি (সংক্রমণ) বাড়ে তাহলে আবারও বসবে। মানুষের জীবন ও জীবিকা-এ দুটো ব্যালেন্স করেই তো আমরা কাজ করে আসছি।
রোজায় পণ্য সরবরাহ নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, রমজানে কতগুলো পণ্য বিশেষভাবে জরুরি প্রয়োজন হয়, যেমন: ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, ডাল, খেজুর ও পেঁয়াজ। এসব নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মন্ত্রিপরিষদ সভায় আশ্বস্ত করেছে, আমাদের যে পরিমাণ চাহিদা সে তুলনায় মজুত সন্তোষজনক রয়েছে। টিসিবি যে আমদানি করছে তা রোজার আগেই চলে আসবে।
আশা করা যায়, সাপ্লাইয়ের কোনো ঘাটতি হবে না। দাম বাড়ার বিষয়টি অনেকটা মার্কেটের ওপর নির্ভর করে। সাপ্লাই বেশি থাকলে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরবর্তী সময়ে বিস্তারিত জানাবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট আইন-২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিকভাবে আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠু পরিচালনা ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা, শিক্ষার মানোন্নয়ন, আর্থিক বিষয়াদির জবাবদিহিতা ও উন্নত সেবা নিশ্চিতের জন্য বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট আইন প্রণয়ন করা হয়। এটার বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য থাকবে সেটা হলো, শিশুদের শারীরিক ও মানসিক সেবা নিশ্চিতকরণ এবং মানোন্নয়ের উদ্দেশ্যে সংবিধিবদ্ধ একটি হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা। রিসার্চসহ সব রকমের লেখাপড়ার বিষয়টি থাকবে এখানে।
‘সরকারি ঋণ আইন, ২০২১’-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৯৪৪ সালের পাবলিক ডেবট অ্যাক্ট ছিল, সেটা দিয়ে আমরা চলছিলাম। সেই আইনটি সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন ও হালনাগাদ করে সরকারি ঋণ আইনের খসড়া হিসাবে প্রস্তুত করা হয়েছে।