শরীরের মূল্যবান অঙ্গ চোখ। এই চোখ- ঘুম ভাঙ্গার পর থেকে আবার ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত থাকে অবারিত। বর্তমানে দেশে করোনা আক্রান্তের ভয়ে মানুষ গৃহবন্দী জীবনযাপন করছে। এ অবস্থায় কেউ যদি চোখের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন বা আগে থেকে চোখের রোগে ভুগে থাকেন তাদের জন্য দেওয়া হলো বিশেষ পরামর্শ।
এ সময়ে,-
– যারা দূরে/ কাছে কম দেখার জন্য নিয়মিত চশমা ব্যবহার করেন, তাদের চশমার পাওয়ার পরিবর্তনের জন্য এই সময়ে হাসপাতালে/ চক্ষু ডাক্তারের চেম্বারে যাবেন না। আপাতত এই সময়টাতে আপনার বর্তমান চশমাতেই চলবে।
– গত ১ মাসে চক্ষু পরীক্ষা করে যে সমস্ত রোগীরা জেনেছেন যে আপনাদের চোখে ছানি পরেছে — তাদের ছানি অপারেশন এই অসময়ে করাবেন না, ছানির রুটিন অপারেশন বিলম্ব হলে কোন সমস্যা-ই হবে না
– যারা গ্লোকমার (চোখের আভ্যন্তরিন উচ্চ চাপ) রুগী তারা অবশ্যই নিয়মিত ভাবে পূর্বের নির্দেশিত চোখের ড্রপ দিয়ে যাবেন। এই সময়ে আপনার ডাক্তারের কাছে যাবার কোনই দরকার নাই।
– কারো চোখ যদি লাল হয়ে উঠে, যদি চোখে
পিচুটি/কেতুর জমে — তারা Vigamox/ Moxibac/ Optimox জাতীয় চোখের ড্রপ
ব্যবহার করতে পারবেন। ১ ফোটা দিনে ৪/৫ বার আক্রান্ত চোখে ১৪ দিন।
(এই ১৪ দিন চোখে কোন অবস্থাতেই পানি লাগাবেন না)
– বাচ্চাদের (০১ দিন- ৭ বৎসর) চোখে পানি পরলে সাথে পিচুটি/ কেতুর জমলে — Tobramycin / Tmycin জাতীয় চোখের ড্রপ ব্যবহার করতে পারবেন। (১ ফোটা দিনে ৪/৫ বার দুই চোখে ১৪ দিন)।
– বাচ্চাদের চোখে চুলকানী/জ্বালা করলে AFM জাতীয় চোখের ড্রপ ব্যবহার করতে পারবেন। (১ ফোটা দিনে ৪ বার দুই চোখে ১৪ দিন। সাথে Syrup Alatrol – ১ চামুচ রাতে ৯ টায় প্রতিদিন খাওয়াবেন -১০ দিন)।
– যদি বয়স্কদের চোখে চুলকানী/ জ্বালা করলে Sonexa/ Orbidex জাতীয় চোখের ড্রপ ব্যবহার করতে পারবেন। (১ ফোটা দিনে ৪ বার ১০/১৪ দিন। সাথে Tablet Alatrol/ Fexo (180 mg) প্রতি রাতে খাবেন ১০ দিন)।
– যদি মাথা ব্যথা/ চোখে ব্যথা হয় ২/৩ টা বিস্কুট খেয়ে (ভরা পেটে) Tablet Panadol/ Napa Extra জাতীয় ঔষধ খেয়ে নিবেন।
– অবশ্যই Diabetes ও Blood Pressure নিয়ন্ত্রনে রাখবেন। এই সময় অবশ্যই ধুমপান পরিহার করবেন।
বি: দ্র:— চোখের আঘাত জনিত (Trauma) কারন ছারা চোখের Emergency সাধারণ ভাবে কম। করোনা ভাইরাসের মহামারীর এই সময়কালে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ অনুকুলে না আসা পর্যন্ত কোন অবস্থাতেই আপনারা হাসপাতালে/ চেম্বারে চোখের ডাক্তারের কাছে অহেতুক ছোটাছুটি করবেন না। ভীত না হয়ে আপনার চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ডাঃ শাহেদ হায়দার চৌধুরী,
বিএম-১, রেজিস্ট্রার (চক্ষু বিভাগ),
বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।