বর্তমান হালতে উম্মতের জন্য রাহাবারি হিসাবে হযরতজি মাওলানা সাদ সাহেব দাঃ বাঃ এর চিঠির বাংলা তরজমা।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম—
পরম সম্মানিত সাথী ভাইগণ, (আল্লাহ আমাদেরকে ও আপনাদেরকে তাঁর পছন্দনীয় ও সন্তুষ্টজনক কাজের তৌফিক দান করুক) আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।
আল্লাহ পাকের সুমহান সত্তার কাছে আশা করছি যে, আপনারা নিরাপদ ও ভালো আছেন এবং সুদৃঢ় দিনের জন্য মেহনতরত আছেন। আল্লাহ
রাব্বুল ইজ্জত আপনাদের সুন্দর চেষ্টাকে কবুল করে গোটা পৃথিবীতে নবীর তরিকা
ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মেহনতকে জিন্দা ফরমান।
আমার
বন্ধুরা আল্লাহ পাক কোরআন ও সীরাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
মাধ্যমে উম্মতে মুসলিমার প্রত্যেক অবস্থা ও যেকোন হালতের মধ্যে
দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
মানব
জীবনের এমন কোন অঙ্গন নেই যেখানে আল্লাহ তায়ালা কোনো দিকনির্দেশনা দেন
নাই। চাই সেই বিপদ বা হালত ব্যক্তিগত হোক কিংবা সমষ্টিগত । তা উৎপত্তির
কারণ ও সমাধান আল্লাহ তাআলা সম্পূর্ণভাবে বর্ণনা করেছেন। যে বিপদই মানুষের
সামনে আসে এটা তাদের আমলের পরিণতি।
আল্লাহ পাক এরশাদ করেন -অর্থ (যে বিপদ তোমাদের উপর এসেছে এটা তোমাদের হাতের কামাই)।
মূলত
হালত হচ্ছে মানুষের আমলের বদলার বিমুর্ত প্রকাশ/বাহ্যিক রূপ। মানুষের পক্ষ
থেকে যেমন অবস্থা প্রকাশ পায় আল্লাহর পক্ষ থেকে ঐ রকম হালত আসে। এজন্য
প্রত্যেক কাজের একটি বিশেষ নতীজা রয়েছে।যেমন যাকাত না দেওয়ার কারণে
মানুষের মাল সম্পদের উপর বিভিন্ন হালত ও লোকসান আসে। এমনি ভাবে যখন
পৃথিবীতে যিনা ব্যাপক হয়ে যায় তখন ব্যাপক আকারে ভূমিকম্প হতে থাকে। তাই
হযরত আবু হুরায়রা রাঃএর সামনে একজন বলছিল জালিম ব্যক্তি কেবল নিজের ক্ষতি
করে। আবু হুরায়রা রাঃ বলেন আল্লাহর কসম শুধু তার বিপদ নয় বরং তার
জুলুমের মন্দ প্রতিক্রিয়ায় পাখিরা তাদের ঘরে ক্ষুধার কষ্টে শুকিয়ে মারা
যায়(বাইহাকি শরিফ)।
আল্লাহ
পাকও ইরশাদ করেন- পৃথিবীতে যে বিপর্যয় সৃষ্টি হয় তা মানুষের আমলের
পরিণতিতে আসে। অর্থ -জলে স্থলে যে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে তা মানুষের হাতের
কামাই। এর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিজের গুনাহের উপর অনুতপ্ত
হওয়া তওবা করা।
যেমন
নূহ আঃ তার কওমকে বলেছিল তোমরা আল্লাহর দিকে রুজু হও এবং তার কাছে মাফ
চাও। তিনি তোমাদের হালত দুরস্ত করে দিবেন এবং তোমাদের সন্তানাদি ও বাগানে
বরকত ঢেলে দিবেন। এ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ সুরা নূহতে পাওয়া যায়।
বর্তমান
সময়ে উম্মতের বড় গুনা হচ্ছে তারা তাদের ফরজ দায়িত্বের ব্যাপারে সীমাহীন
অবহেলা করছে এবং নবীওয়ালা ঐ আলমী মেহনতের ব্যাপারে অলসতা করছে। যার দ্বারা
সমস্ত ফরজ ওয়াজিব ও সুন্নত জিন্দা হবে।
সুতরাং
আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের দরবারে আমরা সবাই অনুতপ্ত হই ও ইস্তেগফার করি এবং
এই নিয়ত করি যে ভবিষ্যতে ঐ কাজকে নিজের জিন্দেগীর মাকসদ বানাইব যা হুজুর
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র জিন্দিগির মাকসদ ছিল।
এ
ব্যাপারে হযরতজী মাওলানা ইউসুফ সাহেব রহঃ বলতেন যখন তোমরা এ রকমের নিয়ত
করবে এই জীবনে যতটুক হওয়া ভাগ্যে আছে তাতো হয়ে যাবে। আর যদি মৃত্যু হয়ে
যায় আল্লাহ তা’য়ালা কিয়ামতের দিন তোমাদের নিয়ত হিসেবে তোমাদের হাশর
করবে।
এর জন্যে সাধ্য মোতাবেক নিজের জান ও মালকে এই মহান মেহনতের জন্য ব্যয় করা হবে খতমে নবুয়তের সঠিক মূল্যায়ন।
এই মেহনতের মধ্যে বিশুদ্ধ নিয়ত ও সঠিক জযবার সাথে ফিরে উম্মতের প্রত্যেক তবকাকে মুতমাঈন করা আমাদের জিম্মাদারী। অতএব
রাষ্ট্রীয় বিধি-নিষেধ খেয়াল করে যতটুক সম্ভব আমরা মেহনত করতে থাকি।
আমাদের কোন আমল দ্বারা যেন রাষ্ট্রীয় আইনের মোকাবেলা না হয়ে যায়। সুতরাং এই
বিষয়গুলো সামনে রেখে পরস্পর মাশোয়ারা করে আমরা কাজ করতে থাকি।
এহতেমামের
সাথে ও পূর্ণাঙ্গ নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে নিজের জন্য ও পুরো উম্মতের
জন্য এখলাস ও এই মেহনতের বাসিরাত কামনায় আর এহতেমামের সাথে এ দোয়া
করি,আল্লাহ তায়ালা যেন পুরো দুনিয়াতে আমান,নিরাপত্তা ও সুস্হ পরিবেশ সৃষ্টি
করে দেন। আমীন।
ফকাত ওয়াস সালাম—
বান্দা সাদ কান্দলবী বাংলাওয়ালী মসজিদ মারকাজ নিজামুদ্দিন।২৬ রজব ১৪৪১ হিঃ২২শে মার্চ ২০২০।
আরও দেখুন
পিরোজপুরে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ে দিনব্যাপীপ্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৩ জুলাই ২০২৪, শনিবার, ঢাকা: মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ে পিরোজপুরের …