নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে সারাবিশ্বে। ছড়িয়ে পড়েছে এ নিয়ে নানা ভুয়া সংবাদও। এমন মহামারির সময়ে যেকোনও ভুয়া তথ্যই যে কারোর জন্য বড় ধরনে ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
অন্য সংকটগুলোর সময়ের মতো এখনও প্রায়ই দেখা যাচ্ছে করোনা থেকে বাঁচার জন্য নানা ওষুধ বা পথ্য আবিষ্কারের তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এসব তথ্য যাচাই না করেই শেয়ার করছেন অনেকে। এসব ভুয়া তথ্য ঠিক কতটা প্রভাব ফেলতে পারে তারই কিছু নমুনা প্রকাশ করে গার্ডিয়ানে মতামত দিয়েছেন ফ্রান্সের বিজ্ঞানী হুগো মার্সিয়ার।
খুব দ্রুতই কেন ভুয়া সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে? আর অনেকটা সরলভাবেই মানুষ উদ্বেগের সঙ্গে এসব গ্রহণ করছে কেন? এর পেছনেও রয়েছে যুক্তি।
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মজা করার জন্য এমন সংবাদ ছড়িয়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ। ২০১৮ সালে বড় অঙ্কের লটারি জেতার এমন একটি ভুয়া সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছিল। লটারি জেতার সংবাদই হোক আর ভাইরাস নিয়ে কোনও সংবাদই হোক; কোনওটিতেই আমরা আলাদা করে দেখছি না।
করোনা থেকে বাঁচতে একটি ভুয়া উপায় সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ক্লোরোকুইন নামে একটি ওষুধ সেবনের মাধ্যমে এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে জানানো হয়। এমন গুজবে তখন কান দেন হাজার হাজার মানুষ।
এমন ভুয়া সংবাদই এ পরিস্থিতিতে ভয়ের কারণ। হোয়াটসঅ্যাপেও করোনাভাইরাস নিয়ে নানা ভুয়া সংবাদ ছড়িয়েছে সম্প্রতি। এমন সংকটময় মুহূর্তে সরলভাবে মানুষ নানা ধরনের ভুয়া তথ্য গ্রহণ করছে- এটা ততটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার নয়; তবে সমস্যাটা হলো তারা ক করবে তা বুঝতে পারে না। অনেক ভুয়া সংবাদের মধ্যে এটা কঠিন হয়ে পড়ে।
ফ্রান্সের সরকার যখন করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যে স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করল, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য নির্দেশ দিল অনেকেই তখন জনসমাগম ঘটিয়েছেন। এসবই হয়েছে তথ্যের ঘাটতির জন্য। সংকটের পরিস্থিতিতে এসব ঘটে আস্থার ঘাটতি থাকলে।
স্বভাবগতভাবেই মানুষ সতর্কতার সঙ্গে যেকোনও বার্তা গ্রহণ করে। কোনও তথ্য পেলে শুরুতে আমরা আমাদের বিশ্বাসের সঙ্গে তা মেলাই। যদি মনের মতো হয়; তবেই তা আমরা গ্রহণ করি। ভুয়া তথ্য বিশ্বাস করার ক্ষেত্রেই এই উপায়টাই কাজে লাগে।
ভুয়া তথ্য গ্রহণের এই ব্যাপারটি থেকে দূরে থাকতে খেয়াল রাখতে হবে- আমরা তথ্যটি কোথা থেকে পাচ্ছি তা নিরুপণের ওপর। কেউ এসব তথ্য আমাদের বানিয়ে বানিয়ে সরবরাহ করছে কি-না। তথ্য যাচাই করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার।
করোনার দিনে এতসব তথ্যের মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া তথ্য যাচাই করে সঠিক তথ্য জানতে হবে।